শনিবার ● ২০ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » সাতদিন ধরে ৩ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে কবিরাজ আটক
সাতদিন ধরে ৩ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে কবিরাজ আটক
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সাতদিন ধরে ৩ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ফারুক মিয়া (৩৫) নামে এক কবিরাজকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম দুলাল গ্রামে।
আটক ফারুক সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান বলেন, গতকাল ‘শুক্রবার রাতে স্থানীয়রা ফোনে এ ঘটনার কথা জানালে অভিযান চালিয়ে উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম দুলাল গ্রাম থেকে ফারুক মিয়াকে আটক করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ফারুক পেশায় একজন গ্রাম্য কবিরাজ। ঝাড়ফুঁক দিয়ে মানুষের কাছে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি গোপনে ঝাড়ফুঁকে নাচানাচি ও গানবাজনা করার জন্য স্থানীয় শিশু কিশোরীদের নিজের দলে ভিড়িয়ে নেন। এরপর আল্লাহ খোদার দোহাই দিয়ে তাদের ধর্ষণ করেন ফারুক।
ফারুক কবিরাজ সাত-আট দিন আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম দুলাল গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে প্যারালাইসিস রোগী আতাউর রহমানকে ভালো করার জন্য ঝাড়ফুঁক, নাচানাচি ও গানের জন্য একই গ্রামের দশ, এগারো ও বারো বছর বয়সের ৩ শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে থেকে নিয়ে আসেন।
কিন্তু ঝাড়ফুঁক, গানবাজনা ও নাচা-নাচির পাশাপাশি কবিরাজিতে সাধন হওয়ার কথা বলে গোপন কক্ষে নিয়ে অচেতন করে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ফারুক। এরই এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা রাতেই ভন্ড কবিরাজ ফারুককে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দল্লাহিল জামান মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থল থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় থানায় ধর্ষণ মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত সাতদিন ধরে তন্ত্র-মন্ত্র ও সাধন শেখানোর কথা বলে তাদের নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিল। এ ঘটনা বাহিরের কাউকে বললে সাধন নষ্ট হবে এবং নাক-মুখ দিয়ে রক্ত উঠে মারা যাবে! এ কারনে ভুক্তভোগী তিন শিশু ওই ভন্ডের দুষ্কর্ম্মের কথা ভয়ে বলেনি কাউকে।
গাইবান্ধায় ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন
গাইবান্ধা :: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। স্মরণিকার ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ স্মরণিকার সম্পাদক জেবুন নাহার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর, পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন, মুক্তিযোদ্ধা গৌতম চন্দ্র মোদক, অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম প্রমুখ। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জেলার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গোলাম রব্বানীর মাতাসহ স্বজনরা, জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশের এবং গাইবান্ধার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে সংরক্ষণ করে রাখতে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ শীর্ষক এই স্মরণিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এধরণের একটি তথ্য সমৃদ্ধ স্মরণিকা প্রকাশের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা শীর্ষক স্মারক সংকলনে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রাম, গাইবান্ধায় বঙ্গবন্ধু, গাইবান্ধার বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভ, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্রের ডামি, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠিসহ মুক্তিযুদ্ধ সম্পার্কিত বিভিন্ন ছবি, জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণমূলক লেখা নিয়ে এই সংকলনটি প্রকাশিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের উদ্যোগে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত ১৫৪ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা শীর্ষক তথ্য সমৃদ্ধ এই স্মারক গ্রন্থটির মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আকর্ষণীয় প্রচ্ছদটি অংকন করেছেন দেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী শাহ মাইনুল ইসলাম শিল্পু এবং সম্পাদনা করেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ স্মরণিকার কমিটির আহবায়ক ও সম্পাদক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জেবুন নাহার।