রবিবার ● ২৮ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সুন্দরবনে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে : অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবিদের জীবিকা
সুন্দরবনে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে : অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবিদের জীবিকা
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ১ লা জুলাই থেকে ৩০ অগষ্ট পর্যন্ত ৬০ দিন ঐতিহ্য সুন্দরবনের সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও প্রজননের জন্য বনবিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে বিকল্প কর্মসংস্থান না করে মাছ ধরা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে জেলেদের জীবন জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বন বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা যায়,পূর্ব সুন্দরবনে দুই লক্ষ ৩৪ হাজার একশত ৪৭ বর্গ কিলোমিটার বনভূমির মধ্যে দুইশতাধিক নদী ও খাল রয়েছে। এর মধ্যে অভয়ারান্য এলাকাসহ ১৮টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। মৎস্য প্রজননের জন্য জুলাই ও আগস্ট দুই মাস সকল খালে মৎস্য আহরন বন্ধ থাকে।
এদিকে করোনা পরিস্তির কারনে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে তার উপর দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবন-জীবিকা আরো কঠিন হয়ে পড়বে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। প্রতি মাসের আমাবশ্যা ও পূর্নিমার সময় মাছ ধরার মেীসুমে প্রায় দুই হাজার জেলে মৎস্য আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ মৎস্য আহরনের উপর প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত।
শরনখোলা মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেন সেলু ও জালাল মোল্লা জানান,করোনার কারনে সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া এ বছর আর কোন কাজ নাই। এ বছর দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে অধিকাংশ পরিবারের না খেয়ে থাকতে হবে। এ বছর যাতে মাছ ধরা বন্ধ না থাকার দাবি জানান। শরনখোলার জাহিদুল,শাহিন,আরাফাত,হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, আমরা প্রায় ত্রিশ বছর ধরে সুন্দরবনে মাছ আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করি। এ বছর করোনার কারনে মাছ ধরা ছাড়া আমাদের আয়ের আর কোন রাস্তা নাই। তার পরে যদি আরো দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে তাহলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। তারা বলেন সরকার আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয় তাহলে আমরা এই দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখবো।
এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরনখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, প্রতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের মৌসুম। এ সময় সাধারন সকল মাছে ডিম থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১ লা জুলাই থেকে ৩০ অগষ্ট পর্যন্ত ৬০ দিন সুন্দরবনের সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে করোনা কালীন সময়ে জেলেদের বিষযটি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
বাগেরহাটে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি শিক্ষার্থীরা পেল বাইসাইকেল শিক্ষাবৃত্তি
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলা চত্বরে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ।
এসময় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম, রিজিয়া পারভীনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫’জন ছেলে ও ৫’জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল প্রদান করা হয়।এছাড়া ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে নগদ ২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে দূর্নীতির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে প্রধানমন্ত্রীর “জমি আছে ঘর নাই” আশ্রয়ন প্রকল্পে একই ব্যক্তির নামে তিন বার ঘর বরাদ্দ করাসহ একাধিক ব্যক্তির কাজ থেকে উৎকোচ দাবির অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের বড়বাশবাড়ীয়া গ্রামের মৃতঃ ধলু হালদারের ছেলে কবির হাওলাদার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দিনমজুর কবির হাওলাদার অভিযোগে জানান, নিজের বসত ঘর না থাকায় সরকারী ভাবে একখানা বসত ঘর বরাদ্দের জন্য ডেমা ইউনিয়ন পরিষদের আমার নামটি ১০৫ নম্বরে তালিকাভুক্ত ছিল। ডেমা ইউনিয়ন ০৯ নং বড়বাশবাড়ীয়া ইউপি সদস্য মোঃ রিপন হাওলাদার আমার নিকট ঘর বরাদ্দের জন্য ত্রিশ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করে। আমি ইউপি সদস্যর দাবিকৃত ত্রিশ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে অস্বীকার করি। আমি এলাকায় বসবাস করি না চট্রগামে থাকি ইউপি সদস্যের দেওয়া এই মিথ্যা রিপোর্টের কারনে আমার নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি কেটে যায়। তিনি আরো জানান,আমি দিনমজুর স্ব-পরিবারে নিজ বাড়িতে বসবাস করি। তিনি সঠিক তদন্ত পূর্বক সত্যতা প্রমান সাপেক্ষে তার নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি ফিরে পাবার আহবান জানান।
এছাড়া এই প্রকল্পে বড়বাশবাড়িয়া গ্রামের মৃতঃ তোফায়েল উদ্দিন হাওলাদের ছেলে নুরুল আমিন হাওলাদারের নামে তিন বার ঘর বরাদ্দের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমান তালিকায় নুরুল আমিন হাওলাদারের নাম তালিকার ৭৫ নম্বরে রয়েছে। এর পূর্বেও তিনি এই প্রকল্পের দুই বার ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগে জানা যায়।
বড়-বাশবাড়িয়া গ্রামের মোসাঃ রজিনা বেগম বলেন, আমার বসতঘর না থাকায় সরকারী ভাবে ঘর দিচ্ছে শুনে আমি ইউপি সদস্য রিপন হাওলাদারকে জানাই। সে আমার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। আমার টাকা দেওয়ার সামথ্য না থাকায় আমি ঘর থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার প্রভাবসালীদের ছত্র-ছায়ায় ইউপি সদস্য এধরনের কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকেন। এই ইউপি সদস্য ইতিপূর্বে দূর্নীতির দায়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। ইতিপূর্বে তার দ্বারা এলাকায় চাদা,মাদক,সন্ত্রাস,ঘের দখল,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের প্রভাব খাটিয়ে জুয়ার ব্যবসার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই অপকর্মের প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষককে নির্যাতন ও হামলার স্বীকার হতে হয়েছে।
এব্যাপারে ডেমা ইউনিয়ন ০৯ নং বড়বাশবাড়ীয়া ইউপি সদস্য মোঃ রিপন হাওলাদার জানান, ঘের সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এলাকার এক শ্রেনীর মাানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তিনি জানান, প্রকল্পের ঘরের লিষ্টে আমার কোন ভ’মিকা ছিল না। আমি ইউনিয়ন পরিষদের সেবার জন্য কারো কাজ থেকে কখনো কোন টাকা নেই নাই।