রবিবার ● ২৮ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের ঘটনায় দৌলতপুর ইউপির প্রতিবাদ
বিশ্বনাথে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের ঘটনায় দৌলতপুর ইউপির প্রতিবাদ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির আলীসহ পরিষদের সদস্য-সদস্যাদের (মেম্বার) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগপত্র দাখিল ও সংবাদ পরিবেশনসহ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোতে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
আজ ২৮ জুন রবিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে পরিষদের সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে উত্তাপিত মিথ্যা অভিযোগপত্রগুলোর আসল সত্যতা তুলে ধরেন। এসময় তারা সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে এসব মিথ্যা অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান এবং অপপ্রচারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রে অবৈধভাবে শাহীন আহমদ মেম্বারকে উদ্যোগক্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তার মাধ্যমে চেয়ারম্যান দূর্নীতি করছেন’ অভিযোগ এনে সম্প্রতি ইউনিয়নের মিয়াজানেরগাঁও গ্রামের আবারক আলীর পুত্র আবদুল খালিক জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। এনিয়ে অনেক মিডিয়ায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে শাহীন আহমদ ‘জনপ্রতিনিধি’ নির্বাচিত হওয়ার প্রায় ৪ বছর পূর্বে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগক্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ছিলেন। তাকে নিয়োগ দিয়ে ছিলেন জেলা প্রশাসক। তখন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্বাস আলী। উদ্যোগক্তাদের সরকারি কোন বেতনও নেই। আর শাহীন আহমদ ‘জনপ্রতিনিধি’ নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথেই ইউনিয়নের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগক্তার পদ থেকে লিখিতভাবে অব্যাহতি গ্রহন করেন। উদ্যোগক্তা হিসেবে শাহীন আহমদের নিয়োগের সাথে পরিষদের চেয়ারম্যান আমির আলীর কোন ভূমিকা নেই এবং যেখানো উদ্যোগক্তাদের সরকারি বেতন নেই, সেখানে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর শাহীন আহমদ মেম্বার কিভাবে সরকারি বেতন উত্তোলন করবেন। এথেকেই প্রমাণিত হয় কোন দিনও পরিষদের না আসা আবদুল খালিকের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। শুধু মাত্র চেয়ারম্যানসহ পরিষদের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে এসব মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে। এরপূর্বেও ওই আবদুল খালিকের চাচা আবদুল মুতলিব একাধিক বার সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পরও সদ্য প্রয়াত পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ছুরাব আলী মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য রেকর্ড করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে পরিষদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে।
ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির আলীসহ সদস্য-সদস্যাদের জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বানিত হয়ে একটি কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য পরিষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে ব্যস্থ রয়েছেন। তাই ওই কুচক্রীমহল পরিষদের মান-সম্মান কুন্ন করতে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ এনে দায়ের করছেন অভিযোগপত্র। আর কোন ধরনের যাচাই-বাচাই বা তদন্ত ছাড়াই এসব অভিযোগপত্রের আলোকে কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ দুঃখজনক। পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা এসব ঘটনার সুষ্ট তদন্ত ও পরিষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারকারীদের মুখোশ জনসম্মুখে উন্মোচনের জন্য সাংবাকিদের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আমির আলী, পরিষদের সচিব সুকান্ত দেব নাথ, সদস্য আবদুল মজিদ, ওয়াহাব আলী, গোলাম হোসেন, ইরন মিয়া, নূর উদ্দিন, আমির আলী, শাহীন আহমদ তালুকদার, আনোয়ার হোসেন, সদস্যা শাহানার বেগম, রেসনা বেগম, সমতা বেগম প্রমুখ।
বিশ্বনাথে শিক্ষকদের অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিবাদ করায় হামলা
বিশ্বনাথ :: বিশ্বনাথে মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের শিক্ষকদের বেতন আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় শিক্ষক-শিক্ষিকার উপর বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়েছে প্রকল্পের উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার ও সুপারভাইজাররা। হামলায় এক নারী শিক্ষকসহ ৪ শিক্ষক আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় প্রকল্পের উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার পরাগ আচার্য্য ও তিন সুপার ভাইজারকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
আজ রবিবার বিকেল ৪টায় উপজেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো অফিসে এ ঘটনাটি ঘটে। আহতরা হলেন, প্রকল্পের শিক্ষক উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ধলিপাড়া গ্রামের মৃত হাজী নজির উদ্দিনের ছেলে সামসুদ্দিন, একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমদ, রহমান নগর গ্রামের মৃত মানিক উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান টিটু ও শিক্ষিকার নাম পাওয়া যায়নি।
আটককৃত বাকি তিনজন প্রকল্পের দশঘর ইউপির সুপার ভাইজার সুমন মিয়া (২৬), খাজাঞ্চি ইউপির সুপার ভাইজার আজিজুর রহমান (৩০), লামাকাজি ইউপির সুপারভাইজার ফারুক মিয়া (৩২)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, বিশ্বনাথে মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের আওতায় বয়স্কদের নিয়ে পরিচালিত গণশিক্ষার কার্যক্রমে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের ৩ মাসের বেতন ৭ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু প্রোগ্রাম অফিসার ও ৮ ইউনিয়নের সুপারভাইজাররা মিলে প্রত্যেক শিক্ষককে বেতন সীটে স্বাক্ষর নিয়ে ৫ হাজার টাকা করে দিলে শিক্ষকরা প্রতিবাদ করেন এবং এক পর্যায়ে অফিস ঘেরাও করেন। এক পর্যায়ে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের সুপারভাইজার দবির, দশঘর ইউপির সুপারভাইজার সুমন, খাজাঞ্চি ইউপির সুপারভাইজার আজিজুর রহমান, লামাকাজি ইউপির সুপারভাইজার ফারুক মিয়া ফোন করে বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী আনেন এবং তারা উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর দেশিয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে চার শিক্ষক আহত হন।
উপজেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো অফিস উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ের পাশে থাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং দবিরসহ হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে চেয়ারম্যান পুলিশে খবর দিলে উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার ও ৩ সুপারভাইজারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। শিক্ষকরাও থানার গেইটে আবস্থান নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম মুসা বলেন, তাদেরকে আটক করা হয়নি, মারামারি এড়াতে উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, কোন শিক্ষককে এক টাকাও কম দেওয়ার সুযোগ নেই। শিক্ষকদের প্রাপ্য টাকা তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর হামলার ঘটনায় শিক্ষকরা যদি মামলা করে তাহলে মামলা নেওয়ার জন্য অফিসার্স ইনচার্জকে বলা হয়েছে।