শুক্রবার ● ৩ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কিশোরী ধর্ষনে অন্তঃসত্তা জন্ম দিলেন কন্যা সন্তান পাচ্ছেনা পিতৃ পরিচয়
কিশোরী ধর্ষনে অন্তঃসত্তা জন্ম দিলেন কন্যা সন্তান পাচ্ছেনা পিতৃ পরিচয়
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বিয়ের প্রলোভনে মাসের পর মাস ধর্ষন, ফলে ধর্ষিতা কিশোরীর গর্ভে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে।বাগেরহাটে মোংলা উপজেলার মালগাজী মিশনবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানের পিতৃ পরিচয় পেতে সমাজপতি ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় বাবুল মন্ডলের মেয়ে পাপিয়া মন্ডল। তবে কিশোরীর দাবী অনাগত এ সন্তানের পিতা একই গ্রামের বাশতীন সরকারের ছেলে পার্থ সরকার। এলাকাবাসী বলছে,‘কে হবে এই নবাগত সন্তানের বাবা?’ কে এর ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিবে এমন সামাজিক একাধিক প্রশ্নের সম্মুখিন ধর্ষিতা কিশোরী ও তার পরিবার। তবে ধর্ষক পলাতক থাকার কারনে এবং এলাকার প্রভাবশালীদের চাপের মুখে স্ত্রীর স্বীকৃতি ও সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের বিচার পাচ্ছেনা অসহায় ওই কিশোরী।
নির্যাতিতা ওই কিশোরী ও এলাকাবাসী জানায়, বাগেরহাটে মোংলা উপজেলার চাদঁপাই ইউনিয়নের মালগাজী গ্রামের পার্থ সরকারের সাথে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই স্কুলে যাওয়ার পথে পরিচয় হয়। এই থেকে পার্থ সরকার কারনে অকারনে প্রায়ই আসা যাওয়া করতো কিশোরীর বাড়ীতে। ২০১৯ সালে থার্টি ফাষ্ট নাইট রাতে কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে একাধিক বার ধর্ষন করে পার্থ সরকার। তাকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দিয়ে এ ধর্ষনের কথা কাউকে কিছু না বলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে পার্থ। পার্থ’র পরিবার কিশোরীকে এই মুহুর্তে মেনে নেবেনা বলে তাকে অন্যাত্র গিয়ে থাকতে বলেন ধর্ষক পার্থ সরকার। ধর্ষনের স্বীকার কিশোরীর এক বান্ধবীর সহায়তায় তারা বিয়ে করে সংসার করবে বলে আশ্বস্ত করে ঢাকায় যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন পার্থ। তার কথামতো ২০১৯ সালে ১৩ অক্টোবর ঢাকা গিয়ে এক বান্ধবীর বাসায় ওঠেন কিশোরী।
কিছুদিন ঢাকায় থাকার পর সাময়িক অসুস্থ হয়ে পরে কিশোরীটি। আশ্রয় দেয়া বান্ধবীর সহায়তায় শারীরীক উন্নতির জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় কিশোরী সাত মাসের অন্তঃসত্তা। এমন খবর পেয়ে লোক লজ্জার ভয়ে পরিবারের কাউকে কিছু না বলে ধর্ষক পার্থ সরকারকে দ্রুত ঢাকায় আসতে বলে এবং বিয়ের জন্য চাপ দেয় মেয়েটি।
কিশোরী অন্তঃসত্তার খবর পেয়ে ধর্ষক পার্থ সরকার ৩০ নভেম্বর ঢাকায় আসবে বলে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় এবং কিশোরীর সাথে ফোনে যোগা যোগ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি মার্মান্তিক মনে করে বান্ধবী অঞ্জলী সব কিছুই কিশোরীর বাবা-মাকে জানালে তারা পার্থ’র পরিবারের সকলকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। পার্থের পরিবার সব কিছুই অস্বীকার করে এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি মেম্বারের সহায়তায় কিশোরীকে অন্তঃসত্তা বাচ্চাসহ প্রান নাশের হুমকি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী ঢাকার গাজীপুর কাশেমপুরের জিয়ানী এলাকার জিয়া মেডিকেলে সিজারের মাধ্যমে ধর্ষিতা কিশোরী একটি কন্যা সন্তানের মা হন।
কিশোরী আরো বলেন,‘আমি যে আমার সন্তানের একটা নাম রাখবো সেই সৌভাগ্যও আমার হয়নি। যেদিন আমি প্রসাব বেদনায় ছটফট করছিলাম, সেদিনও পার্থকে বার বার ফোনের মাধ্যমে ঢাকায় আনার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্ত আমাকে সে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিছে এবং অনাগত সন্তানকে অন্যাত্র অনাথ আশ্রমে ফেলে দেয়ার জন্য বলেছে পার্থ। প্রভাবশালী ওই জনপ্রতিনিধি পার্থের পরিবারের সাথে ঘনিষ্টতা থাকার কারনে এবং একটি রাজনৈতিক মহলের দাপটে আমাদের এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে চলছে। তিনি বলেন, না পেলাম স্ত্রীর মর্যাদা, তারপর হলাম সন্তানের মা। পার্থর কারনে এলাকায় বের হতে পারছিনা, আমার পরিবারের কাউকে দেখলেই মানুষ বিভিন্ন রকম বাজে কথা বলে। জীবনে বেচে থাকার কোন পথ নেই আমার। আমি আর কিছু চাই না, আমার অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই, এ বলে চিৎকার দিয়ে কেঁদে ফেলে তরুণী।
তবে এমন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ধর্ষক পার্থ সরকারের মা মারিয়া বলেন, আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য এলাকার একটি কৃচক্রীমহল ছেলের নামে মিথ্যা অভিযোগ রটাচ্ছে। আমার ছেলে পালিয়ে যায়নি সে বাড়ীতেই আছে। নবাগত সন্তানের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ও সন্তান আমার ছেলের জন্মের না। বেশ কিছুদিন ঐ মেয়ে ঢাকায় অবস্থান করছে, সেখানে কারো সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো, হতে পারে অন্য কারো জন্মের।
চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন,‘আমরা স্থানীয় ভাবে ঘটনার পর থেকেই ছেলে মেয়কে বিয়ের জন্য বলেছি। ছেলে পলাতক রয়েছে এবং তার মা মারিয়া সরকার কাউকেই তোয়াক্কা করছেনা না। যার কারনে কোন ধরণের মিমাংসা করানো সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে না মিটলে আমরা কিশোরীকে সহায়তা করবো, আদালতে মামলার মাধ্যমে ডিএনএ’র রিপোর্টে সন্তানটির পিতৃ পরিচয় পাওয়া যাবে।
ছাত্রীদের মাঝে কিশোর বান্ধবী টয়লেট সামগ্রী বিতরণ
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের মাঝে কিশোরী বান্ধব টয়লেট সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে কিশোরী বান্ধব টয়লেট বিতরণ বাস্তবায়ন করছে বাগেরহাট নারী ফোরাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স কক্ষে সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্রীদের উপস্থিতিতে এ সব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ সময় বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসা: রিজিয়া পারভীন এবং বাগেরহাট সদর উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার এসএম হিশামূল হক উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা বলেন, মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের টয়লেট ও বয়:সন্ধিকালের সকল কার্যক্রম স্বাবলীল ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া করতে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।
এ সময়ে ছাত্রীরা যাতে তাদের সমস্যার কথা ব্যক্ত করে সমস্যা মোকাবেলা করতে পারে প্রতিষ্ঠঅন প্রধান মহিলা শিক্ষকদের সহযোগিতায় তা’ নিশ্চিত করবেন্। শারীরিক ও মানুষিকভাবে সুস্থ রাখতে বাগেরহাট উপজেলা পরিষদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন। বিএসসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল উপজেলা পরিষদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ সব ছাত্রীরা ভবিষতের মা। তাই তাদের শারীরিক সুস্থ্যতা বজায় রাখতে ছাত্রী-শিক্ষিকাদের মধ্যে বান্ধব সুলভ সম্পর্ক থাকতে হবে। বাগেরহাট জেলঅ শিক্ষা অফিসার মো: কামরুজ্জামান বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের এ মহতী উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানান।
নারী ইউপি সদস্য বিউটি ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সাহায্য চান
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের নারী ইউপি সদস্য আরিফুন্নাহার বিউটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নাছিমা বেগম। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে তার পেছনে লেগে আছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে একের পর এক কাল্পনিক অভিযোগ দাখিল করছেন প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে।
সম্প্রতি ওই পরাজিত প্রার্থী প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে ফেয়ার প্রাইজের চাল আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ভিত্তিহীন এমন অভিযোগ তুলে সম্মানহানীর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন নাছিমা বেগম ও তার সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার শরণখোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই নারী ইউপি সদস্য প্রতিপক্ষের অব্যাহত ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচতে প্রশাসনে সহযোগীতা চেয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্য আরিফুন্নাহার বিউটি বলেন, আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী নাছিমা বেগম যেসব সুবিধাভোগীর নামের চাল আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন তারা প্রতিমাসে তাদের চাল উত্তোলন করে ভোগ করছেন। যার প্রমান হিসেবে ওই সকল সুবিধাভোগীর লিখিত প্রত্যয়নপত্র রয়েছে। এছাড়া, যারা সরকারের একাধিক সুবিধা ভোগ করছেন তাদের কার্ড বঞ্চিতদের দেওয়া হয়েছে। এখানে আত্মসাতের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
এমনকি, ১৮জন সুবিধাভোগীর কার্ড হারিয়ে ফেলায় তার পরিবর্তে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দিয়ে চাল উত্তোলন করেছেন। যেখানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সামাজিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী যারা একাদিক সরকারী সহায়তা পায় তাদের নাম ফেয়ার প্রাইজের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে যারা কোনো সুবিধা পাচ্ছে না তাদের নতুন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এখানে ইউপি সদস্যের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।