বৃহস্পতিবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » পর্যটন » শীঘ্রই উদ্বোধন হচ্ছে শেখ কামাল ও শেখ জামাল সেতু
শীঘ্রই উদ্বোধন হচ্ছে শেখ কামাল ও শেখ জামাল সেতু
পটুয়াখালি প্রতিনিধি :: অবশেষে কুয়াকাটাগামী পর্যটক-দর্শনার্থীর অবর্ণনীয় দুর্ভোগ দ্রুত লাঘব হতে যাচ্ছে। কলাপাড়ার উপজেলা সদর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মাত্র ২২কিলোমিটার সড়কে তিনটি ফেরি পার হতে সময় লাগত প্রায় দুই ঘন্টা। এ দুর্ভোগ লাঘবে তিনটি নদীতে তিনটি সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি সেতু শেখ রাসেল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। বাকি দুটোর কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর ওপরে শেখ কামাল সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে আরও দুই মাস আগে। এছাড়া হাজিপুরে সোনাতলা নদীর উপরে শেখ জামাল সেতুর নির্মাণ কাজও সম্পন্ন হয়েছে অন্তত এক মাস আগে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা কবে নাগাদ দুই ঘন্টার পথ মাত্র কুড়ি মিনিটে পার হয়ে পর্যটক-দশনার্থী পৌছবে স্বপ্নের কুয়াকাটায়। লক্কর-ঝক্কর মার্কা ফেরি পার হতে গিয়ে গত একমাসে তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজনের প্রানহাণি ঘটে। ফলে বাকি সেতু দুইটির দ্বার উন্মোচন করতে পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ আছেন মুখিয়ে। ধারনা করা হচ্ছে এ মাসের শেষের দিকে সেতু তিনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শহীদ সন্তানদের নামে কলাপাড়া শহরের আন্ধার মানিক নদীর উপরে শেখ কামাল, হাজীপুরে সোনাতলা নদীর উপরে শেখ জামাল ও শিববাড়িয়া নদীর উপরে নির্মিত হয়েছে শেখ রাসেল সেতু। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এ সেতু তিনটির নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শুরু করেন বৃহত্তর বরিশালে জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম এ সেতু তিনটির নির্মাণ কাজ। একই সঙ্গে তিনটি নির্মাণ ছিল এ জনপদের মানুষের কাছে অপ্রত্যাশিত, অবাস্তব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা বাস্তবেই পরিণত হলো। এ কারণে পর্যটক-দর্শনার্থীর কলাপাড়ায় পৌছে যেন এখন আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছে না। সবার আকাঙ্খা তীব্র হচ্ছে কবে নাগাদ সেতুর উপর দিয়ে মুহূর্তেই কুয়াকাটায় পৌঁছবেন। যেখানে সন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত এবং সকালে দেখবেন সুর্যোদয়ের মনোলোভা দৃশ্য উপভোগ করবেন।
সওজ সুত্রে জানা গেছে সোনাতলা নদীর উপরে ১০টি স্প্যানের উপরে নির্মিত হয়েছে ৪৮২দশমিক ৩৭৫ মিটার দীর্ঘ শেখ জামাল সেতু। সংযোগ সড়ক রয়েছে ৪০০ মিটার। এটির ব্যয়বরাদ্দ ৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আন্ধার মানিক নদীর উপরে শেখ কামাল সেতুটি নির্মিত হয়েছে ৮৯১ দশমিক ৭৬ মিটার দীর্ঘ। ১৯টি স্প্যানের উপর সেতুটির রয়েছে ৪০০ মিটার সংযোগ সড়ক। এটির ব্যয়বরাদ্দ ৬৫ কোটি এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ৪০৮ দশমিক ৩৬ মিটার দীর্ঘ শেখ রাসেল সেতুটি নির্মাণ হয়েছে শিববাড়িয়া নদীর উপরে। নয়টি স্প্যানের উপরে নির্মিত সেতুটির ব্যয়বরাদ্দ রয়েছে ২৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেতু তিনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় দক্ষিণের কোটি মানুষ তাদের স্বপ্নের কুয়াকাটায় যেতে ঝক্কি ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে শীঘ্রই- এমন স্বপ্নেই বিভোর সবাই। যেন মানুষ তাদের প্রাপ্তির সঙ্গে প্রত্যাশার মিল খুঁজে
পাচ্ছে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা কবে সেতু পার হয়ে সবাই ছুটে চলবে কুয়াকাটার বেলাভূমে। অবলোকন করবেন বিরল সেই দৃশ্য। পুব আকাশে ভোরের সাগরস্নাত সূর্যোদয়, আর সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে সাগরের জলরাশিতে ডুবে যাওয়া সূর্যাস্তের দৃশ্য।
স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী জহিরুল ইসলাম জানান, পশখ জামাল ও শেখ কামাল সেতুর কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় দুই মাস আগে। এখানকার সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান জানালেন, কাজটি কেউ ৪০ বছরে করেন নি। তা প্রধানমন্ত্রী করেছেন। ইনশআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীঘ্রই বাকি সেতু দু’টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।