শনিবার ● ১১ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ভাসমান হাট-বাজার জমছে না করোনার থাবায়
ভাসমান হাট-বাজার জমছে না করোনার থাবায়
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: করোনা মহামারীতে সংকটে পড়েছে ঝালকাঠির ভাসমান হাট-বাজার। পাওয়া যাচ্ছেনা কৃষি পণ্যের পাইকার। নিজেদের উৎপাতি সবজি আর ফলমূল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঝালকাঠির অসংখ্য কৃষক।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক কৃষি উদ্যোক্তা ভবেন্দ্র নাথ হালদার জানান, পেয়ারা আর আমড়া ছাড়াও ঝালকাঠির ভাসমান হাট-বাজারে স্থানীয় কৃষকরা ১২ মাস নানা কৃষিপণ্য বিক্রি করে থাকেন। রাজধানীসহ দেশের দূর-দূরান্তের পাইকাররা এসে এখান থেকে ফলমূল আর শাক-সবজি পাইকারী কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন।
লেবু, পেঁপেঁ, পানিকচু, নারকেল-সুপারী ও কাঁঠালসহ নানা ফলমূল ও শাক-সবজি বিক্রি করে অসংখ্য পরিবারের জীবিকা চলে এ অঞ্চলের কৃষকদের। কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রদুর্ভাবে ভাসমান হাট-বাজারে নেই কৃষিপণ্যা কেনার পাইকারদের আনাগোনা। দু’চারজন যা পাওয়া যাচেচ্ছ তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা ন্যায্যমূল্য। আর এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন ঝালকাঠির ভাসমান হাট-বাজার কেন্দ্রিক অসংখ্য কৃষক।
এদিকে গত বছর ঝালকাঠির এই ভাসমান হাট-বাজার পরিদর্শনে এসেছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। ই-কমার্সের আওতায় সারা দেশে এই ভাসমান বাজারের কৃষিপণ্য ছড়িয়ে এখানে ফ্রি ওয়াইফাই জোন চালু করার ঘোষনা দিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ। সম্প্রতি ঝালকাঠির ভীমরুলি বাজারে চালু করা হয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই জোন। করোনার এই সংকটকালে স্থানীয়রা আশার আলো দেখেছেন ফ্রি ওয়াইফাই জোনের মাধ্যমে ই-কমার্স নিয়ে।
স্থানীয় চাষিরা বলেন, ফ্রি ওয়াইফাই জোন চালু করায় আমার আশার আলো দেখছি। এখানকার কৃষি পণ্য আমারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার করতে পারব। আর সেটা দেখে দেশের যেকোন প্রান্তের পাইকার বা ক্রেতার কিনতে চাইলে এখান থেকেই আমার পাঠিয়ে দিতে পারব। এতে করোনা সংক্রমণ রোধে ক্রেতাকে হাটে না এসেই কেনাকারার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি পণ্য বিক্রির জন্য ঝালকাঠির ভীমরুলি হাটে ফ্রি ওয়াইফাই জোন চালু করার আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর ঘোষনা ছিল। সম্প্রতি এই ফ্রি ওয়াইফাই জোন চালু করা হয়েছে।আশা করছি স্থানীয় কৃষকরা এই করোনা মহামারীতে ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য প্রদর্শন করে সারাদেশে ইন্টারনেট ভিত্তিক বাজার ধরতে পারবেন। আর এতে ন্যায্যমূল্য পাওয়াও সহজ হবে, বলেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই স্থানীয় খালগুলোতে ভাসমান হাট-বাজার বসিয়ে আসছে। এ ইউনিয়নের প্রধান হাট-বাজার বসে ভীমরুলী গ্রামের ভীমরুলি খালে। পেয়ারা আর আমড়া ছাড়াও ভাসমান হাট-বাজারে বছর জুড়ে নানা ফলমূল আর শাক-সবজি বিক্রি করে ১৫ গ্রামের ৫ হাজার পরিবারের সংসার চলে।
সাংবাদিক পরিচয়ে নারী ইউপি সদস্যর কাছে চাদাঁ দাবি
ঝালকাঠি :: ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় নারী ইউপি সদস্যর কাছে সাংবাদিক পরিচয়ে চাদাঁ দাবি ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে ফেইজবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়ার অভিযোগে কথিত সাংবাদিক রাজিব তালুকদারকে প্রধান আসামী করে তিন জনের নামে মামলা রেকর্ড হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে (১০ জুলাই) এ মামলাটি করেন কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের (সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের) মহিলা ইউপি সদস্য মোসা. সাবিনা ইয়াসমীন। মামলা নং-২, তারিখ ১০/৭/২০২০ ।
মামলার বিবরণ ও নারী ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বানাই গ্রামের মজিদ ওরফে মধু তালুকদারের পুত্র রাজিব তালুকদার অত্যান্ত প্রতারক, লম্পট ও দুঃচরিত্র প্রকৃতির লোক, সে বিএমএসএফ নামে একটি প্রতারক সংগঠনের সদস্য। রাজিব তালুকদারের নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ চক্রটি সাংবাদিকতার নাম বিক্রি ও সাংবাদিক পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আদায় ও নানা প্রতারণা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজিব তালুকদার গত দু’মাস পূর্বে ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিনের এলাকায় একটি বাল্যবিবাহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজিব তালুকদার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাবিনার কাছে প্রথমে ২০ হাজার এবং পরে ৩০ হাজার টাকা চাদাঁ দাবি করে এবং বিভিন্ন অশালীন প্রস্তাব দেয়। দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রাজিব তালুকদারসহ অপর আসামিরা একত্রিত হয়ে পথে-ঘাটেসহ বিভিন্নভাবে ইউপি সদস্যকে ভয়ভীতি দেখান এবং অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দেয় রাজিব তালুকদার ও তার লোকজন। এমনকি ইউপি সদস্যর স্বামী শামীম মৃধার হাত-পা কেটে চির তরে পঙ্গু করে দেবে বলে হুমকী প্রদান করে। কাঠালিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ পুলক চন্দ্র রায় বলেন, ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমীনের ঘটনায় রাজিব তালুকদারসহ তিন জনকে আসামী করে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে রাজিবকে গ্রেফতারের জন্য বানাই গ্রামে পুলিশ অভিযান চালায় সে একটি খালে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আমুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফোরকান সিকদার বলেন, কালা বাদল, রাজিব এবং শাওন নামে তিন প্রতারক কখনও সাংবাদিক কখন তালাশ টিমের সদস্য আবার কখনও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে থাকে। এদের কারণে কাঠালিয়ায় সাংবাদিকতা পেশা প্রশ্নের সম্মুখিন । তাই এ সকল প্রতারকের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের এ্যাকশন নেওয়া উচিত ।