বুধবার ● ২২ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সুন্দরবনে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরণ শুরু হচ্ছে কাল
সুন্দরবনে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরণ শুরু হচ্ছে কাল
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি ::সুন্দরবনে শেষ হলো বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরণে ৬৫দিনের অবরোধ। আগামী বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকেই শুরু হবে সমুদ্রযাত্রা। সাগরে রওনা হবে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলের হাজার হাজার জেলে। এজন্য চলছে ব্যাপক তোড়জোর। উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে দীর্ঘদিনের ঝিমিয়ে পড়া মৎস্যপল্লী।
এদিকে, গত ২০মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তা অমান্য করে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসাধু জেলেরা সাগরে নেমেছে। অবরোধ চলাকালীন সরকারের সুবিধা ভোগ করেও তারা আইন অমান্য করে দেশের মৎস্য সম্পদের ক্ষতি করছে। এজন্য সরকারি আইন প্রয়োগে শিথিলতাকে দায়ি করেছেন মৎস্যজীবি সংগঠন ও শরণখোলার জেলে-মহাজনরা।
বুধবার শরণখোলার রাজৈর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে ট্রলারগুলো নোঙর করে আছে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষায়। ট্রলারে জাল, জ্বালানী তেল, সরদ সামগ্রী তুলছে জেলেরা। সবাই ব্যস্ত সময় পার করছে। মৎস্য আড়তগুলোতেও মহাজনরা হিসাব-নিকাশ কসছেন জেলেদের নিয়ে।
এসময় মৎস্য আড়তদার মো. মুজিবর তালুকদার, মো. কবির হাওলাদার, মো. জামাল হাওলাদার জানান, অবরোধের দুই মাসে মহাজনরা অনেক লোকসানে পড়েছে। অবরোধ চলাকালীন জেলেদের খোরাকি হিসেবে অগ্রিম দেওয়া এবং জাল-ট্রলার মেরামত করতে গিয়ে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে একেক জন মহাজনের। ট্রলার সচল থাকলে এই বাড়তি খরচটা হতো না। অথচ, সরকারের আইন অমান্য করে বিভিন্ন এলাকার জেলেরা সাগরে অবাধে ইলিশ আহরণ করে লাভবান হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বাগেরহাট জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় মৎস্য সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, জেলায় গভীর সাগরে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত দেড় সহস্রাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলাতেই রয়েছে ৬০০ট্রলার। এসব ট্রলার সকল প্রস্তুতি নিয়ে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি ও শরণখোলা বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও দেশের আমিষের চাহিদা পুরণে সরকারের বিজ্ঞানসম্মত সিদ্ধান্তকে অমান্য করে উপকূলের বহু অসাধু জেলে সাগরে ইলিশ শিকার করেছে। অবরোধকালীন সরকারে সুবিধা ভোগ করেও তারা মৎস্য সম্পদের ক্ষতি করেছে। সমুদ্র রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আইন প্রয়োগে শিথিলতার কারণে এমনটা হয়েছে।
তিনি বলেন, অবরোধের কারণে গতবছর আমরা বাড়তি মাছ পেয়েছি। অবরোধ পালনে সরকার আরো কঠোর হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে পর্যাপ্ত ইলিশ বাইরে রপ্তানি করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে শরণখোলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, গতবছর শরণখোলার জেলেরা সমুদ্র থেকে ৭৬০ মেট্রিকটন ইলিশ আহরণ করেছে। এবার ৮০০মেট্রিকটন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। অবরোধের কারণে দিন দিন ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।
মৎস্য কর্মকর্তা জানান, শরণখোলার জেলেরা সরকারের আই যথাযথভাবে পালন করেছে। অবরোধের এই দুই মাসে উপজেলার ছয় হাজার ৭৪৪জন সমুদ্রগামী জেলেকে ৪০কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাটে মোল্লাহাটে একদিনে ৯ জনের করোনা শনাক্ত, বাড়ি লকডাউন
বাগেরহাট :: বাগেরহাটেরমোল্লাহাটে পুলিশ, মেডিকেল স্টাফ ও শিক্ষকসহ একদিনে ৯ জনের করোনা (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে মোল্লাহাটে মোট-৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হলো। এর মধ্যে পুরুষ ২৮ জন এবং নারী ৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ২জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ মিলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন, হাইওয়ে পুলিশ সদস্য শেখ শাহিন ও সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য বিভাগের স্টাফ আবুল বাশার ও স্যানিটারী পরিদর্শক আবু আনসার, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামের মোল্লা মুজিবুর রহমান, একটি ঔষধ কোম্পানির স্টাফ বগুড়া থেকে নিজ বাড়ি নতুন ঘোষগাতী গ্রামে আগত হাসানুল ইসলাম ও কাহালপুর গ্রামের জনৈক মফিজ এর দোকানের কর্মচারী গোবিন্দ সাহা।
এছাড়া পুর্বে অসুস্থ্য হাসপাতালের স্টাফ কোদালিয়া গ্রামের আশীষের পরিবারের মিতালী ও মিনতি নামে নারী ২জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। উল্লেখিত সকলকে নিজ নিজ বাড়িতে লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে সবাই নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
লকডাউনকালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফ্ফারা তাসনীন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সৌমিত্র ও ডাঃ নাহিদ, প্রেসক্লাব মোল্লাহাটের সাধারণ সম্পাদক এম এম মফিজুর রহমান ও সহ-সভাপতি শরীফ মাসুদুল করীম, উপ-পুলিশ পরিদর্শক আয়ূব আলী প্রমূখ।
বাগেরহাটে নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে
বাগেরহাট :: শিশু পাচার একটি অবৈধ প্রক্রিয়া। বাংলাদেশে নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা হলেও কিছুতে এটা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হচ্ছে না। পাচারকারীরা নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে সরকারের চোখ ফাকি দিয়ে অনৈতিকভাবে নারী ও শিশু পাচার করছে। পাচারকারীরা শিশুদের বিয়ে করে বৈধ ভাবে দেশের বাইরে নিয়ে অনৈতিক কাজের জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে। এটা খুবই অমানবিক ব্যাপার। তাই নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করলে শিশু পাচার অনেকাংশে কমবে।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের উদয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত নারী ও শিশু পাচার নিরসনে কাজী, বিবাহ নিবন্ধক ও সমাজসেবকদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বক্তব্য দেন বাগেরহাট জেলা কাজী সমিতির সভাপতি মাওলানা মোঃ আবুয হানিফ, নিরাপদ সড়ক চাই বাগেরহাটের সভাপতি সাংবাদিক আলী আকবর টুটুল, উদয়ন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক শেখ আসাদ, সোহরাব হোসেন রতন প্রমুখ।
উদায়ণ বাংলাদেশ ও রেডিও ভৈরবের পরিচালক ইসরাত জাহানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সমাজ সেবক, ইমাম, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও শিশুরা অংশগ্রহন করেন।
সুদের চাপে স্কুল শিক্ষিকা আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের চিতলমারীতে সুদখোরদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতনে স্কুল শিক্ষিকা হাসিকনা বিশ্বাসের আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মৃত্যুর দুই দিন পরে বুধবার বিকেলে হাসিকনার স্বামী যুগল কান্তি ডাকুয়া বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামী করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে চিতলমারী থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এর আগে সুদিকারবারীদের তিরস্কার ও গালিগালাজ সহ্য না করতে পেরে সোমবার (২০ জুলাই) দুপুরে নিজ বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন হাসিকনা বিশ্বাস।
নিহত হাসিকনা বিশ্বাস উপজেলার দক্ষিন শিবপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা এবং খড়মখালি গ্রামের যুগল কান্তি ডাকুয়ার স্ত্রী।
চিতলমারী থানার ওসি মীর শরিফুল হক , নিহতের স্বামী যুগল কান্তি ডাকুয়া বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছি। সঠিক তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যুগল কান্তি ডাকুয়া ন্লেন, রবিবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে বাজারের যাওয়ার সময় সুদের পাওনাদার রত্মা ও বিকাশ সুদের টাকার জন্য আমাদের প্রচন্ড রকম গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে। সোমবার দুপুরে অনুপ বসু ও রেফাজুল খা আবার বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে গালিগালাজ করে। এরকিছুক্ষন পরে আমার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।