বুধবার ● ২৯ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মহিষ চুরি মামলায় ফেঁসে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা
মহিষ চুরি মামলায় ফেঁসে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: মহিষ চুরির মামলায় ফেঁসে গেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন। এ নিয়ে জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, কোটচাঁদপুর উপজেলার গুড়পাড়া থেকে গত ১৬ জুন কৃষক নাসির উদ্দীনের দুইটি মহিষ চুরি হয়। এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর থানায় গত ২৬ জুন একটি মামলা হলে পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার চাচড়া গ্রামের আজগার আলীর ছেলে সেলিমের বাড়ি থেকে একটি মহিষ উদ্ধার করে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সেলিম। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। সেখানেই নাম আসে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমনের। আদালতে সেলিম জানান, তিনি চোর নন। মহিষটি শিবনগর গ্রামের মনির হোসেন সুমন, একই গ্রামের মিলন, কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামের ঢালীপাড়ার তরিকুল ও চুয়াডাঙ্গার রশিদ তার কাছে বিক্রি করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোটচাঁদপুরের এসআই তৌহিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমরা চুরি হওয়া দুইটি মহিষ উদ্ধার করে মালিককে ফেরৎ দিয়েছি। এই মামলায় কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামী সেলিম। চোর ধরতে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে এ রকম কিছু হলে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল জানান, ঘটনা মিথ্যাা হলে আমরা সাংগঠনিক ভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর যদি সঠিক হয় তবে সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তারা জানান, এ বিষয়ে তারা মঙ্গলবার চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা মুশফিকুর রহিম নাছিম, তৌহিদুল ইসলাম, এনামুল হক আবু ও মোঃ রায়হান খান।
ঝিনাইদহে নামে বে-নামে ভুয়া এনজিওর নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ
ঝিনাইদহ :: ভুয়া এনজিওর নামে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। ঝিনাইদহে এ ধরণের শতাধীক ভুয়া এনজিও সরকারের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একটি চক্র কনটাক্ট নিয়ে নাম সর্বস্ব এনজিও মালিকদের সাথে হাত করে এই টাকা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। ঝিনাইদহে এ ধরণের খবর ফাঁস হয়ে পড়েছে। অনোয়ারুল ইসলাম বাদশা ও মো. শাহজাহান আলীসহ অর্ধশতাধীক ব্যক্তি ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দিয়ে তাদের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে অনুদানের টাকা তুলে নিয়েছেন। তবে এসবের নাটের গুরু হিসেবে কাজ করেছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সিসিটি (কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ান) হাবিবুর রহমান ও সিভিল সার্জন অফিসের একটি চক্র। ভুয়া প্রকল্প, কাগজপত্র, আবেদন সবকিছুই তারা করে দেন। এদিকে অনুদানপ্রাপ্ত ভুয়া এনজিওগুলোর কাছে ফোন করে পিপিই ও মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝিনাইদহে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ৫৪টি এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে ৫২টি এনজিও’র অনুকূলে অনুদান দেয়া হয়েছে। জুনের বিভিন্ন তারিখে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে চেক গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম ৫৩টি এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপপরিচালক ডা. জাহিদ হোসেন ৫২টি এনজিও’র ভুয়া বিল ভাউচার অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে একই এনজিও উভয় বিভাগ থেকে অনুদানের অর্থ পেয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা জাল কাগজপত্র দিয়ে একই প্রতিষ্ঠানের নামে দুইবার অনুদানের টাকা তুলেছেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে বাউল সমিতি। জেলা হিসাবরক্ষণ দফতর থেকে ১১ জুন সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এনজিও মালিক বাদশা চেক গ্রহণ করেন। সেভ ঝিনাইদহের পরিচালকের সিল দিয়ে ৯ জুন ৫০ হাজার এবং ঠিকানা পরিবর্তন করে একই (সেভ) নামে সাধারণ সম্পাদকের ভুয়া সিল ও স্বাক্ষর করে তিনি ৫০ হাজার টাকার চেক গ্রহণ করেন। ২৮ জুন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে ৫০ হাজার টাকা তিনি তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে অনোয়ারুল ইসলাম বাদশা বলেন, প্রথমবারের মতো মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে তিনি বরাদ্দ পেয়েছেন। টাকা কী করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিভিল সার্জন কিছু জিনিসপত্র চেয়েছেন। পাঁচ হাজার টাকায় সেগুলো কিনে দেব। সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এনজিওর মালিক শাহজাহান আলী স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে এনজিওটির নামে তিনি ৭৫ হাজার টাকার অনুদান নিয়েছেন। বরাদ্দের টাকা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার কাজ করেছেন বলে তিনি জানান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে ২৪ জুন শাহজাহানের ম্যানেজার আশিষ মৌলিক একাই স্বাক্ষর করে ১১টি এনজিও’র বিল ভাউচার বুঝে নিয়েছেন। শাহাজান আলী জানান, ফেডারেশন অব এনজিও ইন বাংলাদেশের (এফএনবি) সভাপতি তিনি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আনতে টাকা-পয়সা খরচ করে হয়। শহরের কবি গোলাম মোস্তফা সড়কে সাহাজানের রয়েছে আল মামুন জেনারেল হাসপাতাল। ক্লিনিক হলেও এনজিও পরিচয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামে ৫০ হাজার টাকা তিনি অনুদান নিয়েছেন। সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, জেলায় কয়েকটি ভালো এনজিও রয়েছে। তবে অনুদানপ্রাপ্ত বেশির ভাগ এনজিওই নামসর্বস্ব। বরাদ্দের টাকা দিয়ে কোনো কাজই করে না এনজিওগুলো। এ কারণে পিপিই ও মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী চাওয়া হয়েছে বলে তিনি যুক্তি দেখান। জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ জাহিদ আহম্মেদ জানান, তাদের কাছে একটি কাউন্টার সাইনের জন্য কাগজ আসে। তবে সবাই যে ভুয়া তা নয়। কিছু কিছু এনজিও ভাল কাজ করেন। তিনি স্বীকার করেন বেশির ভাগই নাম সর্বস্ব। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এনজিওর নামে চেক হাতে আসা মাত্র কমিশনের ২০% ভাগ অথবা ৩০% ভাগ সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে গুনে দিতে হয়। তাদের সঙ্গে কাগজপত্র তৈরিসহ বরাদ্দ প্রদানের চুক্তি করতে হয়। কমিশন যত বেশি বরাদ্দও তত মোটা অংকের হয়ে থাকে। এই দুই নাম্বারী কাজের নাটের গুরু জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সিসিটি (কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ান) হাবিবুর রহমানের স্ত্রী আসিয়া খাতুনের নামে একটি এনজিও রয়েছে বলে হাবিব স্বীকার করেন। স্রোতধারা সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামের ওই এনজিও গত অর্থবছরেও ৭৫ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে। অথচ জেলা শহরের শহীদ মশিউর রহমান সড়কে ওই নামে কোনো এনজিও অফিস নেই। এমন অসংখ্য ভুয়া এতিমখানা, মহিলা সমিতি, এনজিও রয়েছে যাদের না আছে অফিস, না আছে সাইনবোর্ড, না আছে কর্মচারী। অথচ প্রতি বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগ থেকে নিয়মিত অনুদান পাচ্ছে সংস্থাগুলো। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কমিশন বাণিজ্য বন্ধ না হলে গায়েবি এনজিও’র অনুদান বন্ধ হবে না।
স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পুড়াবেতাই গ্রামে রেকসোনা খাতুন (৩২) নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দুপুরে গ্রামের একটি মেহগনি বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হতে পারে বরে স্বজনরা মনে করছে। রেকসোনা পুড়াবেতাই গ্রামের নুর ইসলাম নুরোর মেয়ে। তিনি রাস্তায় মাটিকাটা শ্রমিকের কাজ করতেন। গ্রামবাসি জানান, রেকসোনার একাধিক জায়গায় বিয়ে হয়। কিন্তু দাম্পত্য কলহে কোন স্বামীর বাড়িতে তার স্থায়ীভাবে ঠাঁই হয়নি। রাতের বেলা একলা বাজার ঘাটে চলাফেরা করতেন। মঙ্গলবার বিকাল থেকে রেকসোনা নিখোঁজ ছিলেন। বুধবার দুপুরে বাড়ির কাছে একটি মেহগনি বাগানে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। লাশের শরীরে কোন আঘাতে চিহ্ন না থাকলেও তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিলো। রেকসোনা হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধারে তৎপর রয়েছে পুলিশ। তার সাবেক কোন স্বামী এই হত্যার সাথে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে গান্না ইউনিয়নের বেতাই পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রথমিক ভাবে আমরা মনে করছি রেকসোনাকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে বুধবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ভাইয়ের দা-য়ের কোপে অপর ৩ ভাই গুরুতর যখম
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামে ভাইয়ের দা এর কোপে ৩ ভাই গুরুতর যখম হয়েছে। বুধবার দুপুরে ওই গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো, গান্না গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে গোলাম মোস্তফা মজনু, কবির হোসেন ও জামির হোসেন। আহত জামির হোসেন বলেন, তার ভাই গোলাম মোস্তফা মজনুর সাথে ভাই মোফাজ্জেল হোসেনের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। প্রথমে ভাই গোলাম মোস্তফা মজনুকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থেকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্বক রক্তাক্ত যখম করে। পরে খবর পেয়ে ভাইকে উদ্ধার করতে গেলে আমার এবং আমার আরেক ভাই কবির হোসেনকে কুপিয়ে যখম করে। পরে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে ভাই মজনুকে ফরিদপুর হাসপাতালে রেফার্ড করে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।