মঙ্গলবার ● ১১ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় বন বিভাগের উদাসীনতায় দিন দিন বেহাত হচ্ছে বনভুমি
উখিয়ায় বন বিভাগের উদাসীনতায় দিন দিন বেহাত হচ্ছে বনভুমি
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ায় বন বিভাগের উদাসীনতায় দিন দিন বেহাত হচ্ছে বনভূমি ও সৃজিত সামাজিক বনায়ন। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল অসাধু বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বনভুমির জায়গার উপর একের পর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছে। রাত-দিন পাহাড় কেটে, বনাঞ্চল ধ্বংস করে বিরানভুমিতে পরিণত করলেও বন বিভাগের টনক নড়ছে না। এতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের পাশাপাশি বনভুমির অস্থিত্ব থাকবে না এমনটি মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন সদর বিটের মাছকারিয়া এলাকায় সৃজিত আগর বাগান ও আকাশমনি গাছের সামাজিক বনায়নের এক একর জমি দখল করে ভূমিদস্যুরা বেশ কয়েকটি স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এ ব্যাপারে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী ও রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেন, উখিয়া রেঞ্জের মাছকারিয়া এলাকায় সামাজিক বনায়ন করার জন্য স্থানীয় বেলাল উদ্দিনকে বন বিভাগ এক একর জায়গা বরাদ্দ দেন। দীর্ঘ প্রায় দশ বছর উক্ত জায়গায় আগর ও আকাশমনি গাছ রোপন করে বাগানটি পরিচর্যা করে আসছিলেন।
সম্প্রতি মাছকারিয়া এলাকার কিছু ভূমিদস্যু উক্ত জায়াগার লোলুপদৃষ্টি পড়ে। জাফর আলম, ছৈয়দ আলম ও শাহ আলম নামে কয়েকজন বন খেকো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে। বিষয়টি বন বিভাগকে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
জালিয়াপালং বনবিটে ২০১২-২০১২সালে সৃজিত ৭৫ একর সামাজিক বনায়নের সদস্য ফজল আহমদ বলেন, আবদুর রহমান বদি’র স্কুলের পশ্চিমে চাককাটা নামক স্থানে সনে সৃজিত সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে পাকা দালান তৈরি করছে নুরুল ইসলাম। ভিলেজার আহমদ উল্লাহর বাড়ির কবির আহমদের ছেলে পুতিন্যা তৈরি করেছে সেমি পাকা ঘর। একই ভাবে কালাচাইন্দারখলা মৃত নুর মাঝির স্ত্রী মনজাহারু তৈরি করেছে সেমি পাকা ঘর।
একাধিকবার সামাজিক বনায়ন থেকে রাতের আধাঁরে কেটে নেয়ার সময় গাছবাহী গাড়ী আটক করে বিট কর্মকর্তাকে হস্তান্তর করা হলেও কোন ধরনের আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, গত ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে সবুজে বেষ্টিত উখিয়া এখন বিরানভুমিতে পরিণত হয়েছে। যত সামান্য বনভুমি থাকলেও তা দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে।
অভিযুক্তদের সাথে তাদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় উখিয়া সদর বিট কর্মকতা বজলুল রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জালিয়াপালংয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বরত বিট কর্মকর্তা মো: আরজু মিয়া বলেন, জনবল সংকটের কারণে সরকারি বিশাল বনভুমি কিংবা সামাজিক বনায়ন রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে বন রক্ষার পাশাপাশি আইনী পদক্ষেপ নেয়া সহজ হবে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে কোন কথা বলেননি।