বুধবার ● ১২ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব
গাইবান্ধায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ঘরে সন্তান প্রসব করলেন এক প্রসূতি। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নবজাতকসহ মাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জীবনের প্রথম মুহূর্তে পরম যত্নে মায়ের কোলে থাকার কথা থাকলেও এই নবজাতকের ক্ষেত্রে বাস্তবতা পুরো ভিন্ন। স্বাস্থ্যকর্মীর অমানবিক আচরণে, বাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ঘরেই আলোর মুখ দেখলো শিশুটি।
স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রসব বেদনা উঠলে গাইবান্ধার সাঘাটার বোনারপাড়া থেকে অন্তঃসত্ত্বা জেমি আক্তারকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যান তারা। হাসপাতালে পৌঁছার পর সেখানের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে নিয়ে অন্যত্র যেতে বলেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও কর্ণপাত না করে উল্টো গালমন্দ করে বের করে দেয়া হয় তাদের। পরে শহরের ডিবি রোডের পাশে পরিত্যক্ত ঘরে মেয়ে সন্তান প্রসব করেন ওই প্রসূতি।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিছে। চড়ও মারছে। পরে এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় অসুস্থঅবস্থায় মা ও শিশুকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, আমরা তাদের দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করি।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। এখন মা-মেয়ে দুজনই ভালো আছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার ভয়ে তাকে ভর্তি করা হয়নি বলে জানান মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম।
গত এপ্রিলেও গাইবান্ধার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এমন আরেকটি অমানবিক ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
গাইবান্ধা :: কলেজ ছাত্রী সেতু হত্যার আসামীদের সহ গাইবান্ধা জেলায় সংঘঠিত নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আজ বুধবার ১২ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যাগে শহরের ডিবি রোডের আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা সভাপতি সুভাসিনী দেবীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলার সদস্য- গিদারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রভাষক গোলাম সাদেক লেবু, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, সাংগঠনিক সম্পাদক রাহেলা সিদ্দিকা, লিজা উল্লা, সেতুর বাবা শাহীন, লামিয়ার মামা আজিজুল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সারাদেশের ন্যায় এই সময় গাইবান্ধা জেলায়ও কয়েকটি নারী শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শিক্ষক ইউনুস আলী তার গৃহপরিচারিকা কিশোরী কে ধর্ষণ এবং তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী লামিয়ারও ধর্ষনকারীসহ অনেক নির্যাতক কে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি এবং নেই কোন প্রশাসনিক তৎপরতা।
ফলে বক্তারা উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন প্রশাসনের এ ভুমিকার কারনে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সমাজে বিচারহীনতার কারনে খুন, ধর্ষন হচ্ছে। অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কলেজ ছাত্রী নববধু সেতুর হত্যাকারীসহ গাইবান্ধা জেলায় সংগনঠিত নারী শিশু নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানান।
সেই সাথে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু মৃত্যুর ঘটনার সাথে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও মাতৃসদনে প্রসূতি মায়ের দূর্ব্যবহারী কর্মকর্তদের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।