মঙ্গলবার ● ১৮ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন স্থানে স্মরণসভা
স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন স্থানে স্মরণসভা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: খাগড়াছড়ির জেলা সদরের স্বনির্ভর বাজারে সরকারের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ২য় বার্ষিকীতে শহীদদের স্মরণে আজ ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়িতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এই স্মরণসভার আয়োজন করে।
‘‘আত্মবলিদানে ভীত নই, পূর্ণস্বায়ত্বশাসনের অগ্নিমশাল জ্বলবেই’’ এই শ্লোগানে শহীদ ছাত্রনেতা তপন, এল্টন; যুব নেতা পলাশ এবং ধীরাজ, জীতায়ন, রূপম, সনকুমারসহ সকল শহীদের স্মরণে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর এলাকা:
স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে খাগড়াছড়ি জেলা শাখা এক স্মরণসভার আয়োজন করে।
আজ ১০টার সময় স্মরণসভা শুরুর পূর্বে শহীদদের সম্মান জানিয়ে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলা সভাপতি সমর চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম জেলা দপ্তর সম্পাদক লিটন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্য শিউলী ত্রিপুরা এবং শহীদ পরিবার বর্গ। এছাড়া এলাকাবাসীর পক্ষে সন কুমার চাকমার সহধর্মীনি হেম বালা চাকমার নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরাও স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্য শিউলী ত্রিপুরার শোক প্রস্তাবের মাধ্যমে শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি সমর চাকমার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক নরেশ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা দপ্তর সম্পাদক লিটন চাকমা প্রমুখ।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অধিকারকে নসাৎ করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে প্রত্যক্ষ মদদ দিয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্টের সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের স্বনির্ভর বাজারের মতো একটি জনবহুল স্থানে পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, সরকার ও তার বিশেষ মহল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের রক্ষা করে চলেছে। সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘোরাফেরা করলেও তাদেরকে আইনের আওতায় না এনে উল্টো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
তারা বলেন, যতই ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা, হত্যাকাণ্ড ও দমন-পীড়ন চালানো হোক না কেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন দমন করা যাবে না।
বক্তারা শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না–এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, নিপীড়িত জনগণের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে অনেকে নিজেকে আত্মবলিদান দিয়েছেন। আগামীতেও অনেক রক্তের বিনিময়ে আমাদেরকে অধিকার আদায় করতে হবে।
তারা শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তির লড়াইয়ে এগিয়ে আসার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজ ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
স্মরণসভা থেকে বক্তারা স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
পানছড়ি :
আজ সকাল ১০ টায় অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পিসিপি, ডিওয়াইএফ, এইচডব্লিউএফ ও ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ ও স্কুল-কলেজর ছাত্র-ছাত্রীরা।
এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পিসিপি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় পিসিপি’র পানছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য সুনীল চাকমার সভাপতিত্বে, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুর মঙ্গল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা ও পানছড়ি উপজেলা ইউনিটের সংগঠক জিরান চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য রিপন জ্যোতি চাকমা, পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক নিকেল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা সভাপতি কৃপায়ন চাকমা ও চেঙ্গী ইউপির সদস্য সঞ্চয় চাকমা প্রমুখ।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠীর সকল প্রকার দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে তপন, এল্টন, পলাশ চাকমারা সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তারা সংগ্রামের প্রতীক হয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের মুক্তির আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যেই সরকার ও তার বাহিনী সশস্ত্র জুম্ম রাজাকার সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে স্বনির্ভর বাজার ও পেরাছড়ায় প্রকাশ্যে দিবালোকে ৭ জন মানুষকে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারবে না।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীরা ২ বছর ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়ালেও তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়নি। উল্টো এই সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রাখা হয়েছে।
বক্তারা অবিলম্বে ৭ খুনে জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মাটিরাঙ্গা
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা-গুইমারা শাখার যৌথ উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
স্মরণসভা শুরুর আগে সকাল ৬টায় শহীদদের স্মরণে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি শান্ত চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ) মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি শুভ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের গুইমারা উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন চাকমা ও সদস্য মঞ্জু ত্রিপুরা, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা উপজেলার সংগঠক এচিমং মারমা, গুইমারা এলাকার সংগঠক আগুন মারমা ও অর্জুন চাকমা। এছাড়া এলাকার জনসাধারণের পক্ষ থেকে দোঅংশা মারমা, আথুইমং মারমা, আচাই মারমা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সকল শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের পর গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি শুভ চাকমা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষ করা হয়।
পরে সকাল ৯টার সময় মূল পর্ব স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঞ্চালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজু ত্রিপুরা।
স্মরণসভায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি শান্ত চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা উপজেলার অঞ্চলের সংগঠক এচিমং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি-শুভ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের গুইমারা উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন চাকমা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মিটন চাকমা।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সশস্ত্র সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ২০১৮ সালের আজকের এই দিনের সকালে স্বনির্ভর বাজার ও পেরাছড়া হামলা চালিয়ে ৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হামলার ২ বছর পরও খুনি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। অথচ খুনিরা প্রশাসনের আশে-পাশে থেকেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা শহীদদের আত্মবলিদান কখনো বৃথা যাবে না এই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, যতই খুন, গুম, নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হোক না কেন পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে কখনো দমিয়ে রাখা যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিকামী ছাত্র-যুব জনতা পূর্ণস্বায়ত্তশনের লড়াই চালিয়ে যাবেই।
তারা সকল বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইয়ে সামিল হওয়ার জন্য ছাত্র-যুব জনতার প্রতি আহ্বান জানান।
স্মরণসভা থেকে বক্তারা আর কালক্ষেপণ না করে স্বনির্ভর বাজারে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টন্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।
মানিকছড়ি:
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মানিকছড়ি থানা শাখার উদ্যোগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সকাল ৭টায় শহীদ ছাত্র নেতা তপন, এল্টন; যুবফোরাম নেতা পলাশ চাকমাসহ সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মানিকছড়ি উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রণ্ট (ইউপিডিএফ) মানিকছড়ি ইউনিট নেতৃবৃন্দ অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় পিসিপি’র মানিকছড়ি থানা শাখার সভাপতি অংহ্লাচিং মারমার সভাপতিত্বে ও সদস্য অংচালা মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফের মানিকছড়ি ইউনিট সংগঠক অংশি মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা তথ্য ও প্রচার সম্পাদক ডেবিট চাকমা, মানিকছড়ি গিরীমৈত্রী সরকারী কলেজ শাখা সভাপতি রুপান্ত চাকমা ও মানিকছড়ি গ্রামের কার্বারী সুইজাই মারমা প্রমুখ।
বক্তারা ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ২ বছরেও খুনিদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে আর কত বছর লাগবে?
সরকার একটি সশস্ত্র গ্রুপকে মদদ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, গুম, অপহরণসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে অরাজক পরিস্থিতি জিইয়ে রেখেছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা শহীদের আত্মবলিদান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আগামী দিনের লড়াই সংগ্রাম জোরদার করতে ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
লক্ষ্মীছড়ি:
বৃহত্তর পার্বত্য চট্গ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদি(পিসিপি) লক্ষ্মীছড়ি থানা শাখা এক স্মরণসভার আয়োজন করে।
আজ সকাল ১০টায় অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পিসিপি, ডিওয়াইএফ, এইচডব্লিউএফ ও ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ ও স্কুল-কলেজর ছাত্র-ছাত্রীরা। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পরে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় পিসিপি’র লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক রিটন চাকমার সভাপতিত্বে ও পবিন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফের প্রতিনিধি তড়িৎ চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা কমিটির সদস্য রিপন চাকমা ও দুল্যাতলি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সত্য প্রিয় চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমনে নানা চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। সরকারের বিশেষ মহল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মদদ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জিইয়ে রেখে কায়েমী স্বার্থ উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারাই এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিয়ে খুন, গুম, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
বক্তারা সরকারের মদদে স্বনির্ভরে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে অভিযোগ করে বলেন, যদি তাই না হতো তাহলে হত্যাকারী সন্ত্রাসীরা এতদিন নিশ্চয় গ্রেফতার হতো। কিন্তু ২ বছরেও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করায় এটা আরো বেশি স্পষ্ট হয়েছে যে সরকার এবং তার প্রশাসনই এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে।
বক্তারা অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট সকালে সেনা মদদপুষ্ট একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে ব্রাশ ফায়ার করে পিসিপি নেতা তপন ও এল্টন চাকমা, যুব ফোরাম নেতা পলাশ চাকমা এবং জিতায়ন চাকমা, রূপম চাকমা ও ধীরাজ চাকমা নামে তিন পথচারী সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। ঘটনাস্থলের পাশে পুলিশ পোস্ট এবং বিজিবি সেক্টর হেডকোয়ার্টারের পোষ্ট থাকলেও হত্যাকাণ্ডের সময় তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে এবং সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা দেয়।
স্বনির্ভর বাজারে হামলার কয়েক ঘন্টা পর সন্ত্রাসীরা আবারো পেরাছড়ায় বিক্ষোভরত জনসাধারণের ওপর হামলা চালায়। এতে সনকুমার চাকমা নামে এক বৃদ্ধ আহত হয়ে হাসপাতালে মারা যায়।