মঙ্গলবার ● ১৮ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » শিরোনাম » আয়ারল্যান্ড পাঠানোর নামে ভারতে আটকে দেশে মুক্তিপণ : পিতা-পুত্র গ্রেপ্তার
আয়ারল্যান্ড পাঠানোর নামে ভারতে আটকে দেশে মুক্তিপণ : পিতা-পুত্র গ্রেপ্তার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: ওমানের পর এবার সিলেটের বিশ্বনাথের টেংরা গ্রামের আব্দুল হক (৩০) নামের এক যুবককে আয়ারল্যান্ড পাঠানোর নামে ভারতে আটকে রেখে দেশে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুক্তিপণ আদায়কারী আব্দুস সালাম (৪৮) ও তার ছেলে নাইমুর রহমান সাকিবকে (২৫) সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। তারা সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন আম্বরখানাস্থ ঐক্যতান পীর-মহল্লার বাসিন্ধা। মঙ্গলবার (১৮আগষ্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে পিতা-পুত্র দু’জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আগেরদিন সোমবার রাতে নিজ বাসা থেকেই তাদের দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ২০১৯ সালের ১ আগষ্ট আব্দুল হককে আয়ারল্যান্ড পাঠানোর জন্য ১২লাখ টাকায় চুক্তি করেন দালাল আব্দুস সালাম। এর পর ৬আগষ্ট ভিসা তোলার কথা বলে তাকে ভারতে পাঠান দালাল সালাম। এর ৪/৫দিস পর দালাল সালামের ছেলে সাকিব ভারতে গিয়ে আব্দুল হককে ভিসা তোলার জন্য দিল্লিতে নিয়ে যান। সখোনে অ্যাম্বেসিতে না নিয়ে তাকে একটি বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। এ বিষয়ে হানতে চাইলে আব্দুল হককে সাকিব বলেন, ১০লাখ টাকা না দিলে তোকে অ্যাম্বেসিতে তোলা যাবে না। এরপর দেশে থাকা আব্দুল হকের ভাই আব্দুর রবকে দিয়ে দালাল সালামের নিকট ১০লাখ টাকা মুক্তিপণ দেন। মুক্তিপণ আদায়ের এক মাস ২০দিন পর তাকে নয়া-দিল্লির নির্জন একটি স্থানে ফেলে দেয় দালাল চক্র। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে দেশে ফিরেন আব্দুল হক। এর ৬মাস পর ২০২০ সালের ১এপ্রিল সিলেটের মানবপাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে আব্দুল হক একটি মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২)। মামলার বাকি আসামিরা হচ্ছেন, গ্রেপ্তার হওয়া আব্দুস সালামের স্ত্রী আমিরুন বেগম (৪০) ও দক্ষিণ সুরমার মামরখপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৪৪)।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের পেশাই হচ্ছে দালালি। তারা ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে তাদের দালাল চক্রের মাধ্যমে বৃহত্তর সিলেটের সহজ-সরল মানুষদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্বনাথে প্রতিবন্ধীদের মাঝে সহায়ক উপকরণ বিতরণ করলেন সমাজকল্যাণ সচিব
বিশ্বনাথ :: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সে লক্ষ্যেই সরকারের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা-শিক্ষাসহ নানান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। আর যেন ঘরে ঘরে প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম না হয়, সরকার সে প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেটের বিশ্বনাথে বিআরডিবি মিলনায়তনে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বৃহত্তর আমতৈল এলাকার প্রতিবন্ধীদের সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিমিয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন একথাগুলো বলেন।
জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) বর্ণালী পালের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় অংশ নেন সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের সদ্বীপ কুমার সিংহ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান, শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমদ, প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মনিরুল হক, সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সঞ্জিত চন্দ্র সরকার, রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর, সাংবাদিক মোসাদ্দিক হোসেন সাজুল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুর রউফ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ, সমাজকল্যাণ সচিবের একান্ত সচিব নাজমুল হাসান খান, বিশ্বনাথের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান, থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) শামীম মুসা, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু ইউসুফ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ-আল জুবায়ের, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালট্যান্ট সুজিত বিশ্বাস, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সদস্য নূর উদ্দিন, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন ইমরান।
মতবিনিময় সভা শেষে দুপুর ১২টায় উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বৃহত্তর আমতৈল এলাকার ৩৪ জন প্রতিবন্ধীর মাঝে ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে হুইল চেয়ার, সাদাছড়ি, হিয়ারিং এইড, এলভো ক্রাচ, ওয়াকার ও টয়লেট চেয়ার বিতরণ করেন সমাজকল্যাণ সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী। এরপর সমাজকল্যাণ সচিব রামপাশা ইউনিয়নের বৃহত্তর আমতৈল (আমতৈল, জমশেরপুর, মাখরগাঁও ও ধলিপাড়া) এলাকা পরিদর্শন করে প্রতিবন্ধীদের সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং তাদের জন্যে নির্মিতব্য স্কুল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা পরিদর্শন করেন।