রবিবার ● ২৩ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » শিক্ষা অফিসার সুশান্ত দেবের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু
শিক্ষা অফিসার সুশান্ত দেবের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ ও শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে তদন্ত করতে আসেন। করোনাকালীন সময়ে অফিস ফাঁকি, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও এমপিও ভুক্তির নামে বেপরোয়া অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ ওঠে শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সাক্ষ্য গ্রহন করেন। অভিযোগ উঠেছে করোনাকালীন সময়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশ আমান্য করে শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেব কর্মস্থলে থাকতেন না। এছাড়া তিনি ও তার গাড়ির ড্রাইভার অফিস ভবনের তিন তলা ভাড়া ও কারেন্ট বিল না দিয়ে বসবাস করেন। এতে সরকার আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্তির আবেদন অনলাইনে পাঠানোর জন্য প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম খলিলের কাছে ঘুষ দাবী ও তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল হাই ডিও লেটার দিলেও এমপিও ভুক্তির আবেদন বাতিল বা অগ্রগামি না করে ফেলে রাখেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম খলিল রহমান শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর অভিযোগ করেন। ইতিপুর্বে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সে বিষয়টিও মাউশির মহাপরিচালক অধিদপ্তরে দুর্নীতিবাজরা ধামাচাপা দিয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ মে সপ্তাহীক ডাকুয়া পত্রিকার সম্পাদক শামিম বিন সাত্তার ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে কর্মস্থল ত্যাগসহ দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার দিনই মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন একই সাথে গৃহীত ব্যবস্থা মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে বলেন। শিক্ষা মন্ত্রনালয় গত ৩০ জুলাই শিক্ষা অধিদপ্তরকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলে। সেই আলোকে গত ৬ আগষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠককে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার বিকালে উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক বলেন, আমি সরেজমিন তদন্ত করেছি। সব অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী শামিম বিন সাত্তার তদন্ত কমিটির সামনে আসেনি। আবার শিক্ষকরাও ঘুষের অভিযোগ করেননি। তাছাড়া শিক্ষা অফিসার অফিসের তিন তলায় বসবাস করলেও তিনি ভাড়া দিয়ে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা অফিসার অফিস ফাঁকি দিয়ে গাইবান্ধায় থাকতেন বলে তিনি স্বীকার করেন। অভিযোগকারী শামিম বিন সাত্তার বলেন, মাউশি’র খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড.হারুন অর রশিদের করা তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। সেখানে সুশান্ত দেবের দুর্নীতির প্রমান রয়েছে। তিনি বলেন তদন্ত দলের সামনে উপস্থিত থাকা আমার জরুরী নয়। আমার অভিযোগ সত্য কিনা সেইটা প্রমান করবেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শৈলকুপায় বিষধর সাঁপের দংশনে ৬জনের মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিষধর সাঁপের কামড়ে ২শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে পৌর এলাকার চতুড়া ও দুধসর ইউনিয়নের নাকোল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকার চতুড়া গ্রামের শুভ’র ছেলে রাব্বি (৫) রাতে বাবা মায়ের পাশে ঘুমিয়ে ছিল। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু ছেলেটিকে সাঁপে কামড় দেয়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে শৈলকুপা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে ইনজেকশন দেওয়ার সাথে সাথে শিশুটি মারা যায়। এছাড়া দুধসর ইউনিয়নের নাকোল গ্রামে বিল্লাল হোসেনের ছেলে তাহসিন (৯) ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছিল। রাত ২টার দিকে বিষাক্ত সাপে কামড় দেয়। পড়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোরে ছেলেটি মারা যায়। শিশুটির পিতা বিল্লাল হোসেন জানায়, তার ছেলেকে সাঁপে কামড় দিলে প্রথমে ওঝা কবিরাজের কাছে নিয়ে গেলে ছেলেটি সুস্থ্য হয়ে যায় । নিশ্চিত হতে মনের সন্দেহ দূর করতে ছেলেকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ইনজেকশন দেওয়ার সাথে সাথে ছেলেটি মারা যায়। অভিযোগ করে বলেন, সুচিকিৎসা পাবার আশায় হাসাপাতালে সাপ ধরে নিয়ে গিয়েছিলাম সেখানে সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে অবহেলা করা হয়েছে। প্রথমে হাসপাতালে কোনো ডাক্তার ও নার্স ডেকে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানায়, সাপে কাটা রোগিগুলো হাসপাতালে নিয়ে ইনজেকশন দেবার সাথে সাথে মারা যাচ্ছে। সব সমস্যার সমাধান হলেও এই সমস্যার সমাধান কেউ দিতে পারছেনা। এই শাখাকানন, কালাচ নামে পরিচিত সাঁপে কামড়ানো ব্যক্তিদের বেঁচে যাওয়ার রেকর্ড খুবই কম। তাহলে কেন এর এন্টিভেনম ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রাখা হচ্ছে না। আজ পযন্ত হাসপাতালে যেয়ে কেউ বাঁচতে পারিনি। এদিকে সাঁপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাবাসী আতংকিত হয়ে পড়েছে। ২০ দিনের ব্যবধানে শৈলকুপা উপজেলায় সাঁপের কামড়ে ৪ শিশুসহ ৬জনের মৃত্যু হয়েছে। সাঁপের উপদ্রব বন্ধে ও সাঁপে কাটা রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জেলাবাসীর অভিযোগ।
সাধুহাটি বালিকা বিদ্যালয়ের রাস্তাটি পানির নিচে
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাধুহাটি ,সাগান্না ইউনিয়নের বুক চিরে ডাকবাংলা বাজারের উত্তর পাশ হতে উত্তরনারায়ন পুর, মাগুরাপাড়া, পোতাহাটি ও সাধুহাটি গ্রামের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৩ কিলো মিটার রাস্তা অতিবাহিত হলেও স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত রাস্ত্াটির কোন উন্নয়ন হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে মাগুরা পোতাহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর নারায়নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,সাধুহাটি বালিকা বিদ্যালয়, ডাকবাংলা আব্দুর রউফ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা ও ৪/৫টি গ্রামের কৃষকরা কৃষিপন্য নিয়ে হাট বাজারে কিংবা জেলা শহরে নিতে নানা রকম দূর্ভোগের শিকার হতে হয়। তাছাড়া একটি অতি গৃরুত্বপুর্ন ডাকবাংলা পুলিশক্যাম্প রয়েছে। উত্তর নারায়নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মশিয়্রা রহমান রাস্তাটি জন স্বার্থে পানি নিস্কাশন করে পাকা করার দাবি করেন। কৃষক আইনাল শেখ জানান জয়বাংলার পর থেকে রাস্তাটি অবহেলিত। সরকারের কাছে দাবি রাস্তাটি পাকা করন করা হোক। আবু সাইদ নামে এক স্কুল ছাত্র জানান,রাস্তার উপর সব সময় জলাবদ্ধতা ও কাঁদা থাকার কারনে স্কুলে যাতায়াত করতে ১কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষ যাতে রাস্তাটি দ্রত পাকা করণ করেন। সাধুহাটি বালিকা বিদ্যালয়ের হামিদা নামের এক ছাত্রী জানান স্কুলে যেত গেলে কাঁদা পানিতে ভিজে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যাই যার কারনে কতৃপক্ষের কাছে দাবি রাস্তা টা পাকা করে দেন। উত্তর নারায়নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুদাউদ জানান,রাস্তাটি ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে চলে যাওয়ায় রাস্তাটি চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে। তিনি আরো জানান এক সময় এই রাস্তাটি উত্তর নারায়নপুর হইতে ডাকবাংলা বাজার এবং সাধুহাটি বাজারে বাইপাস সড়ক হিসাবে ব্যবহার হত । কিন্তু বর্তমানে এই রাস্তাদিয়ে সাধারন মানুষের চলা চলের উপযোগিতা হারিয়েছে। সাধুহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজি নাজির উদ্দীন জানান উত্তর নারায়নপুর ত্রিমোহনীর মীর জাকির মন্ডলের মিল হতে সাধুহাটি বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটির আইডি নং হয়েছে।যার নং (২৪৪১৯৫১৮৫) উপরমহলে তবদির চলছে। তবে এলাকাবাসির প্রানের দাবি কর্তৃপক্ষ যাতে বাস্তাটি দ্রত পাকাকরণ করেণ।
হরিণাকুন্ডুতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু
ঝিনাইদহ :: যেকোন ধরণের অপরাধ নির্মূল, সামাজিক বিরোধ নিয়ন্ত্রন, মাদক নির্মূল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন ও পুলিশিসেবা জনগনের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে শুরু হয়েছে বিট পুলিশিং কার্যক্রম। এসব কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার ১০ স্থানে করা হয়েছে বিট পুলিশিং কার্যালয়। রোববার সকালে হরিণাকু-ু থানার পরিদর্শক (ওসি) মো আবদুর রহিম মোল্লা এ বিট পুলিশিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেণ। এ সময় প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুজ্জামান তাজু, উপপরিদর্শক জগদীশ চন্দ্র বসু, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে ওসি আবদুর রহিম মোল্লা বলেন, পুলিশের কার্যক্রম আরও জনমুখী ও জনবান্ধব করাই এই কার্যক্রমের লক্ষ। এছাড়াও এ কার্যক্রমের ফলে দ্রুত পুলিশি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। প্রতিটি বিট পুলিশিং কার্যালয়ে একজন উপ-পরিদর্শক, একজন সহকারি উপপরিদর্শক ও তিনজন সদস্যের সমন্বয়ে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। পৌরসভাসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একইভাবে এই কার্যক্রম চলবে। তিনি আরও বলেন, এতে স্থানীয় ছোটখাটো সমস্যা, সামাজিক বিবাদ নিয়ন্ত্রনসহ বিভিন্ন বিষয় দ্রুত বিট পুলিশের কার্যালয়ে সমাধান করা হবে। এ ছাড়া তারা মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করবেন। তারপর সে অনুযায়ী দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফলে মানুষ দ্রুত পুলিশি সেবা পাবে বলেও জানান তিনি।