শনিবার ● ২৯ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » বিশ্বনাথে অটোরিকশা চালক খুন, লাশ উদ্ধার
বিশ্বনাথে অটোরিকশা চালক খুন, লাশ উদ্ধার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে শফিক মিয়া (৩৮) নামের এক রিকশা চালক খুন হয়েছেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিংরাই থানার রফিকনগর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে। বর্তমানে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের রাজনগর রোডস্থ নিয়ামত আলীর কলোনীতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজনগর গ্রামের বাসিয়া নদীর তীরবর্তি এলাকা এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত ১২টায় থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, শফিক মিয়াকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নির্জন রাস্তায় নিজ রিকশার চাকার সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে যায়। তার মাথার পিছনে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তবে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ নিহতের লাশ সিলেট ওসমানী হসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, নিহত শফিক মিয়ার পিতা শাহজাহান মিয়া দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে স্বপরিবারের বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে তিনি উপজেলার শাহজিরগাঁও গ্রামে নিহত শফিক মিয়া ছাড়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। নিহত শফিক মিয়া একজন গাছ কাটা শ্রমিক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি গাছ কাটার পাশাপাশি ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। নিহত শফিক মিয়া প্রায় ৭ বছর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর তিনি পিতা-মাতার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যান। তবে পিতা-মাতার বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। নিহত শফিকের ১ ছেলে, ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার সকালে নিহত শফিক রিকশা নিয়ে বের হন। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি নিহত হন। নিহত শফিক মিয়া একজন সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এব্যাপারে নিহতের পিতা শাহজাহান মিয়া বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ছেলের সঙ্গে এলাকার কারও বিরোধ নেই। তবে কি কারণে শফিককে হত্যা করা হল তা বুঝে উঠতে পারছিনা। হত্যাকারীদের খুজে বের করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বিশ্বনাথ থানার এসআই আফতাবউজ্জামান রিগ্যান সাংবাদিকদের বলেন, নিহতের লাশটি ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে বুঝা যাচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে এমপি মোকাব্বির খানের উপর হামলার ঘটনায় চার্জশীট দাখিল
বিশ্বনাথ :: সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিলেট ২আসনের (বিশ্বনাথ ওসমানীনগর) জাতীয় সংসদ সদস্য গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খানের উপর হামলার ঘটনায় দেশে বিদেশে আলোচিত মামলার অবশেষে এজহার নামীয় ৫জনকে দিয়েই আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। গত ২০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা রমা প্রসাদ চক্রবর্তী (ওসি তদন্ত) এ চার্জশীট দাখিল (অভিযোগপত্র নং-১২৭, তারিখ ২০, ০৮, ২০২০ইং) করেন। চার্জশীটে অভিযুক্তরা হচ্ছেন, জানাইয়া মসুলা গ্রামের আব্বাস আলীর পত্র শামিম আহমদ, বিদায় সুলপানি গ্রামের রিয়াজ মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, দৌলতপুর ইউনিয়নের মিয়াজানের গাঁও (ছত্তিশ) গ্রামের মৃত সাজিদ আলীর পুত্র দবির মিয়া, দশঘর ইউনিয়নের চাঁংভরাং গ্রামের আনজব আলীর পুত্র কামরুজ্জামান সেবুল, জানাইয়া গ্রামের ইসমাঈল আলীর পুত্র জুনাব আলী। আইনশৃংখলা বিঘ্নকারি অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০১৯ সালের ৪/৫ ধারা মতে চার্জশীট দাখিল করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট এখনও অনুমোদিত হয়নি। এজহারের ৩০৭ ধারাটি চার্জশীট থেকে বাদ দেয়া হয়। এমনকি এজহারে কষ্টিপে মোড়ানো ককটেল সাদৃস্য কৌটা দিয়ে মাননীয় এমপির গাড়ি লক্ষ্য করিয়া ঢিল মারার ঘটনাটি এড়িয়ে যায় পুলিশ।গত ১০ আগষ্ট সোমবার বিশ্বনাথ উপজেলা আইনশৃংখা কমিটির সভায় যোগদানের জন্য মোকাব্বির খান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার অফিসের সামনে পৌছা মাত্র এমপির গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১১ আগষ্ট মঙ্গলবার এমপির এপিএস বিশ্বনাথ পুরান বাজারস্থ মৃত বিনোদ বিহারী দেবের পুত্র অসিত রঞ্জন দেব দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গত ১১ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতে দৌলতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দবির আহমদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় আসামিপক্ষ ও এমপি মোকাব্বির খানের পক্ষে বক্তব্য প্রদান করা হয়। ঢাকা ও বিশ্বনাথে এমপি মোকাব্বির খানের পক্ষে আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। অপর দিকে এই ঘটনাকে সাজানো ও মিথ্যা দাবি করে আসামিদের বিরুদ্ধে দায়েরী মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্বনাথে মানববন্ধন করা হয়। এ নিয়ে দেশে বিদেশে কঠোর আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। এতে বিশ্বনাথ তথা সিলেটের মানসম্মাণ ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। ঘটনার পর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ জড়িত নয় মর্মে বলা হলেও চার্জশীটে শামিম আহমদকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বণীক সমিতির সভাপতি, সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, দবির আহমদকে দৌলতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি, কামরুজ্জামান সেবুলকে উপজেলা যুবলীগের সদস্য এবং জুনাব আলীকে বিশ্বনাথ যুবলীগের সদস্য ও উত্তর পার অটো রিক্সা সিএনজি ষ্ট্যান্ডের সভাপতি বলে উল্লেখ করা হয়।
এবিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বার বার বলছেন কারো ব্যক্তিগত অপরাদের দায় সংগঠন নেবেনা।
এ ঘটনার বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাথে পরামর্শ করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।