শুক্রবার ● ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ১৯ জন আটক
ঝিনাইদহের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ১৯ জন আটক
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে এক ভারতীয় নাগরিকসহ ১৯জনকে আটক করেছে ৫৮ বিজিবি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মহেশপুর উপজেলার খোসালপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৬০/১০৫-আর থেকে ৮০০ গজ বাংলাদেশের মধ্যে থেকে ১৮ জন বাংলাদেশী নারী পুরুষকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক করা হয়। তবে এ সময় কোন দালাল ধরা পড়েনি। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাদকের শ্রোত। সীমান্ত দিয়ে বানের পানির মতো আসছে ভারতীয় মাদকসহ নানা পন্য। ফলে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত এখন মাদক চোরাচালান ও অবৈধ পারাপারের গেটওয়ে হিসেবে ব্যাবহর হচ্ছে। বড় বড় চোরাচালান সিন্ডিকেট সীমান্তের গ্রামগুলোতে যেমন ঘাঁটি গেড়েছে, তেমনি দালালরাও টাকার বিনিময়ে ওপার ওপার পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় প্রতিদিন মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মাদক দ্রব্য ও অবৈধ পারাপারের সময় মানুষ আটক হচ্ছে। এদিকে বৃহস্পতিবার বিজিবির হাতে আটককৃতরা হলেন, বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের হানিফ ফারাজি, আলী হোসেন ফারাজি, একই জেলার লাকুরতলা গ্রামের পরিতোষ কুমার, চরহগালাবনিয়া গ্রামের মোঃ মিজান, রামেদা বাজারের মোঃ ইমরান হোসেন, বরবদুরা গ্রামের ওহিদুল ইসলাম, স্ত্রী রেশমা খাতুন, ছেলে ওসমান আলী, পিরোজপুর জেলার ডেবশাবুনিরা গ্রামের মুন্নি খাতুন, যশোরের অভয়নগর উপজেলার বরণী গ্রামের তরিকুল ইসলাম, বরগুনা জেলার কড়ইতলা গ্রামের নাইম হোসেন, বাগেরহাটের আশিইগলা বনীয়া গ্রামের মোঃ আলামিন হাওলাদার, পিরোজপুরের -ডেকশাবুনীয়া গ্রামের মোঃ আব্দুর আকবর রুবেল, বাগেরহাটের ডুবাবাজারের মোঃ খলিলুর রহমান, একই গ্রামের রুপা খাতুন, পাখি খাতুন, শন্যাশি গ্রামের রাশিদা খাতুন, সাতক্ষীরার গোওনা গ্রামের মন্নি খাতুন ও বাগেরহাটের রানদা গ্রামের আলমের মেয়ে সালমা খাতুন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, একই দিনে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে মহেশপুরের সলেমানপুর গ্রাম থেকে ভারতের কলকাতার নিউটাউন থানার গৌরজনগর গ্রামের পুলিন মন্ডলের স্ত্রী কালীদাসি মন্ডলকে আটক করা হয়। আটককৃত ১৯ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মহেশপুর থানায় বিজিবির পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
ঝিনাইদহে মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে চায়না চপার মেশিন উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে একটি মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে নীলফামারি থেকে চায়না চপার মেশিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, ঝিনাইদহ পৌর এলাকার আরাপপুর কর্নেল রহমান সড়কের মল্লিক ইলেক্ট্রনিক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কুরিয়ার যোগে চায়না চপার মেশিন বিক্রয় করে আসছিল। ঝিনাইদহ সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বুকিংম্যান মালামালের নির্ধারিত মূল্য লেখতে ভুলে যান। মালটির বুকিংয়ের মূল্য নির্ধারণ ছিল ৩৪ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি তা লেখেননি। ফলে মালের গ্রাহক নিলফামারি জেলার অরুন রায় নামের এক কৃষক সুযোগ বুঝে টাকা না দিয়ে মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। পরবর্তীতে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে ওই মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে ঝিনাইদহ সদর থানায় সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বুকিংম্যান মোঃ আসাদ একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধমে ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করে এবং নিলফামারি জেলা পুলিশের সহযোগিতায় ওই মেশিনটি উদ্ধার করে। বুধবার দুপুরে প্রকৃত মালিকের নিকট মেশিনটি হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ সদর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এস আই শফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় প্রকৃত মালিক পুলিশের এ ধরণের সফলতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লব ঘোষের আঁকুতি,চাই শুধু মাথা গোঁজার ঠাই
ঝিনাইদহ :: ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে রক্ত¯œাত স্বাধীনতা অর্জনের সূর্যসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লব ঘোষ। তিনি ঝিনাইদহ পৌর এলাকার চাকলাপাড়াস্থ মৃত গৌর পদ ঘোষের বড় ছেলে। বর্তমান তিনি গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন। নেই কোন থাকার ঘর। মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি সারাজীবন ছোট ভাই সন্তোষ কুমার ঘোষ ওরফে বাবলু ঘোষ এর জায়গায় বসবাস করে আসছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কিছুদিন পর লেখাপড়া করার পাশাপশি তিনি সংগীত চর্চা করতেন। পরবর্তীতে কলেজে লেখাপড়া করা অবস্থায় তিনি মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তখনকার সময় পাবনা মানষিক হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ্য করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে আবারও তিনি একই সমস্যায় ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্র্াস্ট তার চিকিৎসা বাবদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করে। পরে কিছুটা সুস্থ্য হলেও দিনে দিনে তিনি মানুষিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে। বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবাংলার মোদনপুরস্থ (মানস) মানুষিক হাসপাতালে এক ডাক্তারের অধিনে চিকিৎসাধীন আছে। এই বিপ্লব কুমার ঘোষের গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন জেলার শৈলকুপা উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য (প্রয়াত) গোলাম মোস্তফা ও ঝিনাইদহের চাকলাপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান । বর্তমানে ছোট ভাই বাবলু ঘোষের সংসারে তার জীবন কাটছে। মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লব ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একভাবে দিন পার হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে অনেক কিছু করেছেন। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর তৈরী করে দিচ্ছেন। কিন্তু তার জন্য যে কোন কারণেই হোক এখনও পর্যন্ত সে সুযোগ আসেনি। তিনি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজের মাথা গোজার ঠাই টুকু চাইছেন শুধু, কোনো আর্থিক সাহায্য নয়। এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহমেদ বলেন, তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে শারিরীকভাবে অসুস্থ্য। তিনি আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা অনুযায়ী অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা পর্যয়ক্রমে বাসস্থান পাবে। কোন মুক্তিযোদ্ধাই ভবিষ্যতে গৃহহীন থাকবে না।