রবিবার ● ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » স্বাস্থ্যকর্মী নীলিমা’র কাছে জিম্মি অসহায় মানুষ : টাকা ছাড়া মিলছে না চিকিৎসা সেবা
স্বাস্থ্যকর্মী নীলিমা’র কাছে জিম্মি অসহায় মানুষ : টাকা ছাড়া মিলছে না চিকিৎসা সেবা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেন তার প্রাইভেট চেম্বার। ইচ্ছে মতো যাওয়া-আসা করেন তিনি। এখানে দুুস্থরোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দেয়ার বিধান থাকলেও নিয়মিত নেন টাকা। রোগীদের কাছে বিক্রি করনে বিনামূল্যের সরকারি ঔষধও। টাকা না দিলে অসহায় রোগীদের বকা-ঝকা করে তাড়িয়ে দেন তিনি। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রের, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (ঋডঠ) নীলিমা রানী দাসের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নানা অনিয়ম অভিযোগ উঠলেও প্রায় ২৫ বছর ধরে একই জায়গা বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই এ ‘বাণিজ্য’ করছেন তিনি।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন দশঘর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রে যাওয়া হয়। দেখা যায়, কাঙ্খিত চিকিৎসা ও ঔষধ না পেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় মলিন মুুখে ঘুরাফেরা করছেন রোগীরা। কথা হয় তাদের সাথে। সকলেই নীলিমা রানী দাসের বিরুদ্ধে টাকা গ্রহণ ও রোগীদের সাথে অশুভ আচরণের অভিযোগ করেন। নিজের অসুস্থ কিশোরী মেয়ে নিয়ে আসা নোয়াগাঁও গ্রামের আছিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, মা-মেয়েকে মাত্র ১০টি ট্যাবলেট দেন। আমি বিপি পরীক্ষা করতে চাইলে দাবী করেন ৩শ টাকা। কিছুদিন পূর্বে টাকা দিয়েই বিপি পরীক্ষা ও ঔষধ নিয়েছি। আজ টাকা না দিতে পারায় চিকিৎসা পাইনি।
শাড়ইল গ্রামের মুুহিবুুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, অসুস্থতার জন্যে পূর্বে সেবন করা এক পাতা ঔষধ চাইলে তিনি দূরব্যবহার করে আমাকে তাড়িয়ে দেন।
এসময় অভিযোগ কারীদের নীলিমা রানীর মুখোমুখি করা হলে, উত্তেজিত হয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন তিনি। দম্ভোক্তি করে রোগীদের বলেন, ‘লিখলে কি আর আমার ২৫ বছরের চাকুরী চলে?’ সাংবাদিককে বলে কি লাভ?’ পরে শান্ত হয়ে রোগীদের অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমাও চান তিনি। এক পর্যায়ে এ প্রতিবেদককে নানা কৌশলে প্রভাবিত করার চেষ্টাও করেন নীলিমা। বলেন, ‘ভাই আর যাই করেন, দয়া করে টাকা নেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন।’ রিপোর্ট না করতে মোবাইল ফোনে অনুনয়-বিনয় করেন তার স্বামীও।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষিকা দিপা সাংবাদিকদের বেগম বলেন, গেল ১৩ সেপ্টেম্বর আমি চিকিৎসা
নিতে গিয়ে উনাকে পাইনি। সকাল থেকে দুুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফোন করলে
তিনি জানান, আসতে আরো দেরী হবে। এসময় ফোনে সমস্যার কথা জানালে তিনি ৫শত টাকা নিয়ে পরের দিন সাক্ষাৎ করতে বলেন।
নোয়াগাঁও গ্রামের আবদুল করিম জানান, এই মহিলার সেচ্ছাচারিতার কারনে আমরা খুব অসহায়। প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন,‘ তার হাত অনেক লম্বা। কেউ কিছুই করতে পারবে না তার।’পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, বিনামূল্যের ঔষধ, পরিবার পরিকল্পনার সরঞ্জাম, মহিলাদের বিশেষ রোগের (গজ) চিকিৎসাসহ সকল কাজেই তাকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে গরীব রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ করা তার কাছে স্বাভাবিক ব্যপার।
জানতে চাইলে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারুক আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ সত্য হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা হলে সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক ডা. জেসমিন সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তদন্ত করে দেখতে হবে।
বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে প্রবাসী কামাল উদ্দিন সংবর্ধিত
বিশ্বনাথ :: বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে প্রবাসী কামাল উদ্দিন কে সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সংস্থার কার্যালয়ে বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ফজল খান সভাপতিত্বে ও সদস্য সিহাব উদ্দিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সংবর্ধিত অতিথি বিশ্বনাথ কলেজ ডিগ্রী বাস্তবায়ণ পরিষদ ও বিশ্বনাথ উপজেলা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. কামাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের সাথে প্রবাসীরা সবসময়ই পাশে আছে ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে। আমরা দেখতে পারছি যুবসমাজকে একধাপ এগিয়ে নিয়েছে, যুবকদেরকে প্রতিবাদী করে তুলেছে বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ। এই সংগঠনের আন্দোলনের ফলে অনেক সফলতা দেখতে পারছি। অন্তত নতুন করে বাসিয়া নদীর তীর ও হাটবাজার অবৈধ দখল হচ্ছে না। এইসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আবার বাসিয়া নদী তার নিজস্ব প্রাণ ফিরে পাবে। শুধু তাই নয়, এই সংগঠনের উদ্যোগে বিশ্বনাথের বিভিন্ন সড়ক সংস্কারের দাবি দেখেছি। ভূতুড়ে বিদ্যুত বিল ও লোডশেডিং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দেখেছি। বহিরাগত শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখেছি। আন্দোলনের সফলতা হয়েছে। এসব সফলতা ভোগ করছে এই বিশ্বনাথবাসী। উপজেলাবাসী এই সংগঠনের নাম চিরদিন মনে রাখবে।
এসময় বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সানুর আলী জয়দু, , বাসিয়া নাট্য কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক পারভেজ হক মোহন, সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাণ সংস্থা যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম, সদস্য ছালাউদ্দিন, মাজহারুল ইসলাম, সাব্বির আহমদ প্রমুখ।