শুক্রবার ● ৯ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » নবীগঞ্জে তরুনীর রহস্যজনক মৃত্যু
নবীগঞ্জে তরুনীর রহস্যজনক মৃত্যু
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে তামান্না আক্তার (১৮) নামের এক যুবতির মৃত্যু নিয়ে রহস্যেও সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর ) সন্ধ্যা রাতে নিহত তামান্নাকে পরিবারের সদস্যরা অচেতন অবস্থায় ঘরেরমধ্যে দেখতে পেয়ে নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইদ্রিস আলম ওই যুবতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ইদ্রিস আলম জানান, নিহতের গলায় দাগ দেখতে পেয়ে সন্দেহ হলে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করি। পরে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই আব্দুল ওয়াাদুদ এর নেতৃত্বে একদল পলিশ হাসপাতালে পৌঁছে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে জানান, নিহতের শরীরের গলায় দাগ ঠোটের নিচে আঘাতের চিহ্ন ও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পেটের মধ্যে মেহেদি দিয়ে লেখা “তোর কারণে মরণ আমার ক্ষমা করে দিস অ” । এর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ। তবে লাশের ময়নাতদন্ত করার পর হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি পরিষ্কারভাবে জানা যাবে। নিহতের পিতা কাপ্তান মিয়া বলেন,
তামান্না আমার মেজো মেয়ে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর আর লেখাপড়া করেনি। আমি বাজারে ছিলাম বাজার থেকে ফিরে এসে তামান্নাকে না দেখতে পেয়ে ডেকে আনার জন্য তামান্নার সৎ মাকে তার রুমে পাঠাই। তামান্নাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার চেচামেচি করলে আমি দৌড়ে গিয়ে দেখতে পাই তামান্না অচেতন অবস্থায় নিছে পড়ে রয়েছে। পরে নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ নিয়ে গেলে ডাক্তার তামান্নাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মেয়ে কোনো ছেলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে আমার জানা নেই। তামান্নার মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই
এলাকায় রহস্যের জট সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলে তামান্না ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে কেউ বা বলছেন পরিবারের কেউ এই হত্যা করেছে তামান্নাকে । তবে লাশের ময়নাতদন্ত করার পর এই বেরিয়ে আসবে তামান্নার মৃত্যুর রহস্য হত্যা নাকি আত্মহত্যা । এদিকে তামান্নার বাবা
কাপ্তান মিয়া বাদী হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নবীগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। তবে মেহেদি দিয়ে লেখা “তোর কারণে মরণ আমার ক্ষমা করে দিস” । এর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ । এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান জানান, মেয়েটির লাশ পোষ্ট মর্টেম
রিপোর্টের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
নবীগঞ্জে চেয়ারম্যান মুকুলের বরখাস্তের আদেশ বহাল
নবীগঞ্জ :: নবীগঞ্জে গজনাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সভাপতি ইমদাদুর রহমান মুকুলের বরখাস্তের আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার কর্তৃক বরখাস্ত হয়েছিলেন চেয়ারম্যান মুকুল। এনিয়ে হাইকোর্টে রীট দায়ের করেন তিনি। শুনানি শেষে মন্ত্রণালয়ের আদেশ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে ৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট আপীল বিভাগে দায়েরকৃত ১৪৪১ নং মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিল করেন এবং বরখাস্তের আদেশ বহাল করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) আদেশে স্বাক্ষর করেন বিজ্ঞ বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্ট আপীল ডিভিশনে মামলা পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ নিয়োজিত আইনজীবী প্যানেলের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট শেখ শফিক মাহমুদ পুষ্প। তদন্ত প্রতিবেদন ও মামলার আপীল সূত্রে প্রকাশ,৭ জুলাই ইমদাদুর রহমান মুকুলকে বরখাস্তের গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ৩৯৩৭ নং পিটিশন দাখিল করেন ইমদাদুর রহমান মুকুল। ২৩ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম.খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এম. মাহমুদ হাসান তালুকদারের দ্বৈত বেঞ্চ শুনানি শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করে চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের আদেশ দেন। মুকুলের পক্ষে রিটের শুনানী করেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক আইন মন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু। এরই প্রেক্ষিতে ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত গেজেটে স্বপদে বহাল হন ইমদাদুর রহমান মুকুল। স্বপদে বহাল হয়ে জমকালো আনুষ্ঠানিকতা ও মিষ্টি বিতরণ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ২ মাস ১৫ দিন চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার ছিলেন তিনি। ১৫ দিনের ব্যবধানে আবারো বরখাস্ত হলেন আলোচিত চেয়ারম্যান মুকুল। আপীল ডিভিশনে মামলা পরিচালনায় নিয়োজিত সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি শেখ শফিক মাহমুদ
পুষ্প বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরখাস্ত হওয়া ৫৩ জনপ্রতিনিধির মধ্যে ২৯ জন স্বপদে বহাল হন। এটর্নী জেনারেল অফিসের ব্যর্থতায় প্রশ্নবিদ্ধ হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় নিয়োজিত আইনজীবী হিসেবে সরব হই। আপীল বিভাগে পিটিশন দাখিল করি।
উল্লেখ্য,বিগত চার বছর ধরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর (১০টাকা) কেজির চাল প্রাপ্ত সুবিধাভোগীর নামে বে নামে ভুয়া নাম দিয়ে কয়েক শতাধিক সুবিধাভোগীর চাল আত্মসাতের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। পরে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ও উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন হয়। দীর্ঘ তদন্ত ও বিস্তর নাটকীয়তা শেষে তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।
চাল চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ৭ জুলাই ইমদাদুর রহমান মুকুলকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি হয়। চেয়ারম্যান মুকুলসহ ৪ জনের বিষয়ে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্ট আপীল বিভাগের বিজ্ঞ বিচারপতি। এ আদেশের ফলে চেয়ারম্যান মুকুলের বরখাস্তের আদেশ বহাল হয়েছে। এনিয়ে শীঘ্রই প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।