বুধবার ● ৪ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » আত্রাইয়ে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট
আত্রাইয়ে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে সম্প্রতি বন্যার কারণে গবাদি পশুর খাবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিত খামারী ও গৃহস্থরা। বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট বিধ্বস্তের পাশাপাশি উপজেলা জুড়ে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খামারীরা তাদের গবাদি পশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় গো-খ্যাদ্যের সংকট মোকাবিলায় খড় প্রক্রিয়াজাত করে গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য তাদের ভ্যাটেনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ও ভারি বর্ষণের ফলে উপজেলার আহসানগঞ্জ সংলগ্ন আত্রাই-বান্ধাইখাড়া রাস্তা, সাধনগর গ্রামে নাগর নদীর বেড়িবাঁধ, আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের রাস্তা, মালিপকুর, পাঁচুপুর বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ ও গবাদি পশু-পাখি পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
গো-চারণ ভ’মিগুলো তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের উৎস বিনিষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বসত-বাড়িতে থাকা গো-খাদ্য খড়ের স্তুপগুলো বিনিষ্ট হয়ে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
অনেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকা যোগে বেশি দামে কিনে নিয়ে গবাদি পশু গুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। অনেকে অর্থাভাবে তা কিনতে না পেরে অল্প দামে তাদের প্রধান অবলম্বন গবাদি পশু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। বন্যায় বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ধানের সঙ্গে গো-খাদ্য হিসেবে খড়ও হারিয়েছেন সর্বশেষ আউশ থেকে কিছু খড় সংগ্র্রহের আশা থাকলেও বন্যায় এ ধানও রোপন করতে পারেনি হাজার হাজার কৃষক। যার ফলে গো-খাদ্য সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক ও খামারিরা।
উপজেলার পূর্বমিরাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যার কারণে এমনিতে নিজেরাই বিপদে আছি। তার ওপর গবাদি পশু রাখার জায়গা ও গো-খাদ্য নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সংকট। বন্যার পানিতে গো-চারণভুমি তলিয়ে যাওয়ায় গরুকে কাঁচা ঘাস খাওয়াতে পারছি না। ফলে দুধ উৎপাদনও কমে গেছে।
উপজেলার মালিপকুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, ‘শুধু কচুরিপানা খাইয়ে গরু-বাছুর বাঁচানোর চেষ্টা করছি। বন্যা পানি কিছুটা কমলেও গরু-ছাগলের খাওয়া নিয়ে ঝামেলায় আছি। গো-খাদ্য যোগান দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তাদের গবাদি পশু গুলো দিন দিন খাদ্যাভাবে হাড্ডিসার হচ্ছে। অনেক গবাদি পশু পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুবায়েই রেজা জানান, বন্যা পরিস্থিতিতে কৃষকদের খড় সংগ্রহর পরামর্শ দেয়ার পাশপাশি খড় প্রক্রিয়াজাত করে পশুকে খাওয়ানোর জন্য ভ্যাটানারি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের তালিকা প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।