বৃহস্পতিবার ● ৫ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গাইবান্ধার ৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গাইবান্ধার ৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়ন জুড়েই শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের ব্যাপক ভাঙন। ভাঙনে ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬টি মসজিদ, ২টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ৩শ’ বসতবাড়ি ও ১ হাজার হেক্টর একর আবাদি জমি নদী ভাঙনে হারিয়ে গেছে। ইউনিয়নটি চরাঞ্চল হওয়ায় নদীভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙনে সব হারিয়ে ওই কৃষিজীবি পরিবারগুলো এখন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এছাড়াও ওই ইউনিয়নের বাজে চিথুলিয়া, চিথুলিয়া দিগর, মাইজবাড়ী, সিধাই, কাচির চর, উত্তর মোল্লার চর, দক্ষিণ মোল্লার চর এবং মৌলভীর চর এলাকা জুড়ে চলছে ব্যাপক নদী ভাঙন। এছাড়া সদ্য নির্মিত ৩টি কালভার্ট ও কমিউনিটি ক্লিনিক এবং চিথুলিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিথুলিয়া দিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মৌলভীর চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা, ৫টি টিকাদান কেন্দ্র ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলুপ্ত হয়েছে।
বাজে চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যুধিষ্টীর বর্মণ বলেন, তার বিদ্যালয়ে মোট ৭৭ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতো। নদী ভাঙনে পরিবারগুলো অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিক্ষার্র্থী সংখ্যা কমতে থাকে। গত জুলাই মাসের ২৪ তারিখে বন্যায় তার বিদ্যালয়ের ভবনটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যালয়টি পাশ^বর্তী একটি চরে অর্থাৎ এক কিলোমিটার দুরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় কতজন শিক্ষার্থীর পরিবার অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছে নিশ্চিত করে সে সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই মন্ডল বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৮শ’ পরিবারের ঘরবাড়ি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওইসব পরিবার এখন পাশ^বর্তী জামালপুর জেলা দেওয়ানগঞ্জ, পশ্চিমে সদরের কামারজানি ইউনিয়ন, উত্তরে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুরের মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে। অনেকে আশপাশে অবস্থান নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে। তিনি আরও জানান, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি কমার পর এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অথচ ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, মোল্লার চর ইউনিয়ন পুরোটাই নদী বেষ্টিত হওয়ায় সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের কোন সুযোগ নেই। তবে সরকারিভাবে নদী খননের কাজ শুরু হলে তখন ভাঙন কিছুটা কমে আসবে।
মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য বিধি তবেই করোনা মোকাবেলা সম্ভব- হুইপ গিনি
গাইবান্ধা :: জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাই ঘন ঘন হাত ধুবেন, মাক্স পরবেন তেমনি পরিবাররের সকল সদস্যকে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবেই করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা সহ সকল জনগনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। শিশুদের শতভাগ টিকা দান ও দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রন সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আজ গাইবান্ধার সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নে যত্ন প্রকল্পের আওতায় নারী দম্পতিদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদুর রহমান, বল্লমঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ঝন্টু, বল্লমঝাড় রঘুনাথপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সামছুল আলম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ১হাজার ৬শ ৬০জন নারী দম্পতিকে নগদ প্রায় ৬৫ লাখ টাকা বিতরণ করেন।
এর আগে হুইপ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পরিবার পরিজন নিয়ে থাকার জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে বিতরনের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও বে-সরকারি এনজিওদের মাঝে ফ্যামিলী তাবু হস্তান্তর করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারা আব্দুল আউয়াল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য মৃদুল মোস্তাফি ঝন্টু, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য সুলতানা ইসলাম, মো: জাহেদুল ইসলাম সহ অন্যান কর্মকর্তাগণ।