রবিবার ● ২২ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় চলছে গাড়ীর হেলপার বাদশা’র রাম-রাজত্ব, নেপথ্যে ইয়াবা
উখিয়ায় চলছে গাড়ীর হেলপার বাদশা’র রাম-রাজত্ব, নেপথ্যে ইয়াবা
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রাইভেট পরিবহণ খাতে চলছে বাদশা’র রাম-রাজত্ব। নেপথ্যে ইয়াবা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নুর মোহাম্মদ বাদশা প্রকাশ সী-লাইন বাদশা’র বিরুদ্ধে। সে কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিকসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছে। এমনকি তার কথা ছাড়া যাত্রীবাহী একটি সী-লাইন কিংবা কক্স-লাইন সড়কে চলে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজাপালং ইউনিয়নের সিকদার বিল এলাকার ছৈয়দ নুর মিস্ত্রীর ছেলে নুর মোহাম্মদ বাদশা প্রকাশ সী-লাইন বাদশা একই এলাকার মৃত মো. কালুর ১২০ শতক জায়গা জোর পূর্বক দখল করে কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছে বহুতল ভবন। যেখানে প্রতি রাতে বসে ক্যাসিনোর মতো জুয়ার আসর। বিলাসবহুল ভবনের চর্তুপার্শ্বে রয়েছে সিসি ক্যামেরার মতো আধুনিক ডিভাইস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাড়ীর মালিকরা বলছে বাদশা একক ভাবে পুরো পরিবহণ সেক্টরকে জিম্মি করে রেখেছে। নতুন কোন গাড়ী লাইনে সার্ভিস দিতে গেলে অফেরতযোগ্য ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয় বাদশা। এছাড়াও প্রতি গাড়ী থেকে দৈনিক সর্বনিন্ম ২৩০টাকা বিনা রশিদে আদায় করার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। যা মালিক কিংবা শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের কল্যাণে একটা টাকাও ব্যয় করা হয় না।
সুত্রে জানা গেছে তার নামে-বেনামে অঢেল সম্পদের পাশাপাশি ৮টি পাবলিক বাস (কক্স লাইন, সী-লাইন), ১টি নোহাসহ বর্তমানে কোটি-কোটি টাকার মালিক এই বাদশা।
কেউ কেউ বলছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতার ছত্রছায়া থেকে বাদশা ইয়াবা কারবার করে কয়েক বছরের ব্যবধানে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক বনে গেছে।
প্রায় সময় তার পরিচালিত সী-লাইন এবং কক্স লাইনে করে পাচারের সময় মরণনেশা ইয়াবা উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল শনিবার কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ লিংকরোড থেকে ২ হাজার ৩৫০পিচ ইয়াবাসহ এক নারীকে আটক করে।
অপরদিকে সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় সওজের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের সংবাদের প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাদশা’র বিরুদ্ধে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
তাদের মধ্যে সেলিম চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, “পরিবহণ সন্ত্রাসী বাদশা’র অনুমতি ছাড়া উখিয়া-টেকনাফে কেউ পরিবহণ ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেনা। বাদশাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে জেলার একজন সাংঘাতিক ও পাহাড় খেকো ভূমিদস্যু।”
আমিনুল হক আমিন নামে একজন লিখেছেন, “দ্রুত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে কুখ্যাত ইয়াবা চোরাচালান কারবারী বাদশা কাদের মদদপুষ্ট তা খতিয়ে দেখা হউক।”
গফুর মিয়া চৌধুরী বলেছেন, “এ সরকারের আমলেই জবরদখলকারী বাদশা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বলে গেছে। ইয়াবার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হউক।”
পালংখালীর যুবলীগ নেতা এতমিনানুল হক লিখেছেন, গাড়ীর হেল্পার থেকে শ্রমিক নেতা সেজে হঠাৎ কোটিপতি হওয়া লাইনম্যান বাদশা’র খুঁটির জোর কোথায় ?
উখিয়া বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা আনিনুল ইসলাম লিখেছেন, সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরায় সাংবাদিক শহীদের উপর হামলা করাসহ গাড়ীর হেলপার থেকে শ্রমিক নেতা সেজে হঠাৎ কোটিপতি হওয়া লাইনম্যান বাদশা’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে নুর মোহাম্মদ বাদশা ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৮১৯৮৬৫০২২ একাধিকবার যোগাযোগ করে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে উখিয়া থানা পুলিশ। মাদক কারবারীদের পুরাতন ও নতুন তালিকা ধরে অভিযান শুরু হয়েছে।