বৃহস্পতিবার ● ২৬ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » সমাজসেবার নিয়মনীতি মানছে না-ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি
সমাজসেবার নিয়মনীতি মানছে না-ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি
চৌধুরী হারুনুর রশীদ,রাঙামাটি :: সমাজসেবা অধিদপ্তর কোন ধরনের নিয়মনীতি মানছে না, “ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি” ।সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগের সুত্রে দৈনিক প্রত্যয় নিউজ প্রকাশের পর তোলপাড় । ২য় তলার মার্কেট নির্মান বন্ধ করা নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরিত অভিযোগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে । রাঙামাটি জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর নীতিমালা অনুসারে “ইসলামিক সেন্টার ” কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে সাবেক ছাত্ররা লিখিত অভিযোগ করেছে। যেহেতু সমাজসেবা কর্তৃক নিবন্ধনকৃত সংস্থা যার রেজি নং০৪(৭৬৩)/৭৯ এই আইসিআর শপিংসেন্টার ২য় তলা মার্কেট নিমার্ণে ও দোকান বরাদ্ধে কোন ধরনের দরপত্র আহবান করা হয়নি। একেক দোকানের বিপরীতে ৮/১০ লক্ষ টাকা অগ্রিম গ্রহন করে । এসকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাঙামাটির নেতাকর্মীরা। এই কাণে মুলত:অভিযোগের সুত্রপাত হয় সাবেক ছাত্র ও এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে,আল-আমিন মাদ্রাসা ,এতিম খানা ও ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি এক সময়ে বনরুপা মসজিদে পরিচালনা করতেন মাওলানা আবুল খায়ের । সেই সময়ে বনরুপা মসজিদের সামনে ২য় তলা একটি ভবনে ইসলামিক সেন্টার ও আল-আমিন মাদ্রাসা পরিচালিত হয়েছে। সেই সময় ইসলামিক সেন্টার সদস্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জামায়াতেসহ বিভিন্ন দলমত সকলে সদস্য ছিলেন।
পরবর্তীতে মরহুম এএসএম শহিদুলাহ ইসলামিক সেন্টার চেয়ারম্যান থাকাকালিন সময়ে আল-আমিন মাদ্রাসা ,এতিমখানা,ইসলামিক সেন্টার নামে পৃথক পৃথক বন্দোবন্তি করেন। দশ শতক করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৮১/৮২ রের্কড করা হয় । মুজাদ্দেদী-আল-ফেসানী একাডেমী জায়গাটি রাঙামাটি রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ক্রয় করেন ইসলামিক সেন্টার তৎকালিন চেয়ারম্যান মরহুম এএসএম শহিদুল্লাহ। সেই সময় বনরুপা মসজিদ থেকে পৃথক হওয়ার জন্য স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতিতে প্রতিবেদকসহ পরিমাপ করে সীমানা প্রাচীর প্রদান করেন ইসলামিক সেন্টার। শুরুতে মসজিদের সামনে এক সময়ে প্রথম ভবনটি (ইসলামিক সেন্টার ও আল-আমিন মাদ্রাসা) মসজিদের নিকট তৎকালিন সময়ে ৮০ (আশি) হাজার টাকায় হস্তান্তর করেন বলে জানাগেছে।
এদিকে আল-আমিন মাদ্রাসা টিনসেট সেমিপাকা নিয়মিত ক্লাস চলাকালিন সময়ে স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচিত সদস্য এএসএম শহিদুল্লাহ পরিষদ থেকে ২য় তলা ভবন নিমার্ণ করেন ।বর্তমান সেই বিল্ডিং এ আল-আমিন মাদ্রাসা ক্লাস কার্যক্রম চলে আসছে। আল-আমিন মাদ্রাসার সেমিফাকা টিনসেট ছাত্র ও শিক্ষক ও ছাত্রাবাস ছিল। সেই সময় বনরুপা মসজিদের মাটি কেটে মাদ্রাসা জায়গা দিয়ে মাটি নিতে নিষেধ করলে উভয়ের মধ্যে মৃদু কথা কাটাকাটি হয় । পরে মসজিদ কমিটি মাদ্রাসায় আরো রেকডীয় জায়গার অতিরিক্ত দখলে রাখা ভুমির প্রাপ্যতা দাবী করে আদালতে মামলা করেন ।
মামলায় নিম্ম আদালতে মসজিদ কমিটির পক্ষে রায় নিলে ইসলামিক সেন্টার বর্তমান কমিটি জায়গাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ইসলামিক সেন্টার এর দুর্বলতার কারনে সরকারি দপ্তরে টেন্ডারকৃত ২য় তলা ভবনের কাজ বন্ধ করে পুর্বের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে আল-আমিন মাদ্রাসার জায়গাটি ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানাগেছে । তবে মসজিদের পানি চলাচলের ড্রেনের পর জায়গাটি সম্পুর্ণ উম্মুক্ত রয়েছে, কোন ধরনের স্থাপনা দেখা যায়নি। প্রতিবেদক পেশাগত ও ব্যবসায়িক এবং সামাজিক সংগঠনে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ বিষয়ে অবগত রয়েছে। ইসলামিক সেন্টার প্রাক্তন সুযোগ্য চেয়ারম্যান হাজী এএসএম শহিদুল্লাহ মৃত্যুর পর নতুন করে কোন প্রতিষ্ঠান ও সরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ গড়ে উঠেনি বলে অনেক সদস্যরা জানিয়েছে।আল-আমিন এতিম খানার পিছনে কয়েকবছর আগে পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে কায়কোবাদ নামে এক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে নিহত হয়। নিহত কায়কোবাদের মা এখনো রাঙামাটি শহরে তবলছড়িতে বসবাস করে । বর্তমানে আল-আমিন এতিম খানার খায় খরচ বহন করে কুয়েত রিলিফ ফান্ডের অর্থায়নে । দীর্ঘবছর ধরে আল-আমিন মাদ্রাসার মাঠসহ একাংশ পাহাড় কেটে মাটি ভরাট করতে দেখাগেছে এতিমখানার ছাত্ররা । ১৯৮১/৮২ সালে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে পৃথক পৃথক ৩০ শতক ভুমি রের্কড ও নামজারী করেন তৎকালিন চেয়ারম্যান এএসএম শহিদুল্লাহ ।
“ইসলামিক সেন্টার ২য় তলার মার্কেট নিমার্ণ করতে গিয়ে নিয়ম নীতি না মানায় এসব অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে অনেক ইসলামিক সেন্টার অনেক সদস্য। আইসিআর শপিংসেন্টার ২য় তলা মার্কেট নিমার্ণের ছাদ ঢালাই এর নিধারিত সময়ের আগে রাতে গাথুনি করার অভিযোগ উঠেছে । এত দ্রুত নিমার্ণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সকলের নজরে আসছে বিষয়টি ।
বনরুপা মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব চৌধুরী বলেন,ইসলামিক সেন্টারের স্থায়ী বন্ধোবস্তিকৃত জায়গার অতিরিক্ত দখলে থাকা মসজিদের প্রায় সাত শতক জায়গা বিএম-০১ শপিং কমপ্লেক্স এর পিছনে ছেড়ে দিবে । এবং তা মসজিদের নামে সীমানা চিহ্নিত করে খতিয়ান ভুক্ত করা হবে ।
সাবেক আল-আমিন এতিমখানার শিক্ষার্থী ছগির আহম্মেদ , বনরুপা,রাঙামাটি। ছগির আহম্মেদ স্বাক্ষরিত অভিযোগের অনুলিপি প্রসঙ্গে সত্যতা স্বীকার করে বলেন,ইসলামিক সেন্টার সকল কার্যক্রম জামায়াতের লোকজন দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে । আল-আমিন এতিমখানা পরিচালিত হচ্ছে কুয়েত রিলিফ ফান্ড অর্থায়নে । জামায়াতের শুরার সদস্য বা রোকন হলে তাদেরকে ইসলামিক সেন্টার নতুন সদস্য করা হয়েছে অনেকে ।
ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইউছুফ মুঠোফোনে রিসিভ করে এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না । পরে প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে ৫মিনিট পরে ফোন দিবে বলে কেটে দেন।
জেলা সমাজসেবার এডি বিশ্বজিত চাকমা বলেন- ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি পরিচালনা কমিটি গঠনতন্ত্রের বহিভুত কার্যক্রম করে আসছে । ১৯৬১সালের সমাজসেবা নিবন্ধন নিয়ন্ত্রন আইনে স্পষ্ট বলা আছে –নিধিারিত সময়ের পর কমিটি মেয়াদ শেষে সাধারণ সদস্য ব্যতীত ইসলামিক সেন্টার পরিচালনা কমিটি কোন বৈধতা নেই ।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ওমর ফারুক জানায়-
রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো.মামুন বলেন,অভিযোগ আসছে- ০৯/০৯/২০২০ইং আমি নতুন যোগদান করেছি ৮অক্টোবর ২০২০ইং। জেলা প্রশাসনের ডকেট নং-২৬৮তাং ০৯/০৯/২০২০ইং অভিযোগের কার্যকর সর্ম্পকে জানতে হলে তথ্য অধিকার আইনে ‘ক’ ফরমে আবেদন করতে পারেন।