বৃহস্পতিবার ● ২১ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে ৭দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯
ঝিনাইদহে ৭দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ভাঙ্গাচোরা রাস্তা ও অবৈধ নছিমন করিমন চলাচলের ফলে ঝিনাইদহের সড়ক মহাসড়ক মৃত্যুফাঁদে পরণিত হচ্ছে। নতুন বছরে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১১ জন। এরমধ্যে গত এক সপ্তায় নিহত হয়েছেন ৯ জন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারী ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের মদনডাঙ্গা নামক স্থানে রাস্তা খারাপের কারণে সদর উপজেলার কলমনখালী গ্রামের কওছার মন্ডলের ছেলে কছিমুদ্দিন, সুরাট ইউনিয়নের হামদহডাঙ্গা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মানিক ও ইশারত জোয়ারদারের ছেলেসহ ৬জন নির্মান শ্রমিক নিহত হন। এ সময় আহত হন আরো ৫ জন। দুর্ঘটনার কারণ ছিল রাস্তায় বড় বড় গর্ত। এদিকে গত সোমবার হরিণাকন্ডু উপজেলার তেলটুপি সড়কে ইঞ্জিনচালিত বিশ্বাস ব্রিক্স এর ইটভাটার মাটি টানা লাটাহাম্বার গাড়ির ধাক্কায় রবিউল ইসলাম (৫৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। তিনি তৈলটুপি গ্রামের হাতেম আলী বিশ্বাসের ছেলে। রবিউল রাস্তার ওপর ওঠার সময় ঝাউদিয়া এলাকা থেকে বিশ্বাস ব্রিকসের একটি মাটিবোঝাই লাটাহাম্বা গাড়ি তাকে ধাক্কা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। একই দিন ঝিনাইদহ চুয়াাডাঙ্গা সড়কের আনসার ক্যাম্পের সামনে ট্রাকচাপায় নিহত হন দিপালী রানা (৪৫) ওরফে ফাতেমা আক্তার নামে এক হোটেল কর্মচারী। সোমবার রাত দশটার দিকে পিছন দিক থেকে একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার সাদিপুর গ্রামের ট্রাকচালক স্বপন কুমার দাসের প্রথম স্ত্রী। তিনি দুই মেয়েসহ মুসলমান হয়ে মুসলিম ছেলের সঙ্গে বিয়ে করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হরিণাকুন্ডু উপজেলার বল্টুর মোড় নামক স্থানে মোটরসাইকেল ও পাখি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নয়ন লস্কার (২১) নিহত হন। পেশায় মহুরি নিহত নয়ন লস্কর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামের মোঃ খায়রুল লস্করের ছেলে। পুলিশ জানায় পাখি ভ্যানের সাথে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক রাস্তার উপর পড়ে যায়। এ সময় তার শরীরের উপর দিয়ে আরেকটি আলমসাধু উঠে যায়। এতে তিনি মারা যান। নিহত নয়ন লস্কর ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা আদালতের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইশারত হোসেন খোকনের মহুরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শৈলকুপায় রাতভর নির্যাতনের পর মহিলাকে গলাকেটে হত্যা চেষ্টা, রক্তমাখা চাকু উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় রাতভর নির্যাতনের পর কনিকা খাতুন(২৫) নামের এক মহিলা কে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর আনুমানিক ৪টার সময় উপজেলার আওশিয়া গ্রামের জাকির হোসেন নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে গলাকাটা আহত অবস্থায় একজন মহিলা উঠে জাকিরের বাড়ি আশ্রয় নেয়। জাকির ঐ মহিলাকে গলায় রক্তাক্ত ওড়না পেচানো অবস্থায় দেখতে পায়। সে কোনো কথা বলতে পারছিলনা। আহত মহিলা গবিন্দ পুর গ্রামের সহিদ মন্ডলের কন্যা। পরে থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার্ড করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার চিকিৎসা চলছিল। আহত মহিলার মা রাহেলা বেগম জানান তার মেয়ে নিকা খাতুন মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার চন্ডিখালি গ্রামের মৃত শাহাদত হোসেনের পুত্র হুসাইনের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলত। পরে তার সাথে পরিচয় থেকে প্রেম প্রেম হয়। সে গত ১৪ তারিখে তার বোনের বাড়ি হরিহরা গ্রামে বেড়াইতে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে হুসাইন তাকে বাড়ী থেকে বিভিন্ন জায়গাতে বেড়াতে নিয়ে যেত। বুধবার সকালে তারা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারে তার মেয়ে কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। গতকাল এশার আজানের সময় উক্ত মহিলার দুলাভাই হরিহরা গ্রামের রাব্বুলের বাড়ী থেকে তাকে আউশিয়া গ্রামে নিয়ে যায় হুসাইন। পরে সকালে তারা জানতে পারে যে ঐ মহিলাকে পুলিশ আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ও কানের দুল পাওয়া যায়নি। হুসাইন আউশিয়া গ্রামের আব্দুল গফুরের জামাতা এবং ঐদিন রাতে সে শ্বশুর বাড়ীতেই অবস্থান করছিল। সকালে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে সে শ্রীপুর উপজেলার চন্ডিখালি গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে যায়। তবে তার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে পাওয়া গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। শৈলকুপা থানার ওসি তদন্ত মোহসিন হোসেন জানান থানায় অভিযোগ আসলে মামলা নেয় হবে। পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনা স্থল থেকে একটি রক্তমাখা চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে ঝিনাইদহ যুবকের মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে বাবুল (৩০) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সৈকতের জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। মহিপুর থানার (ওসি) মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বাবলু ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধোপাঘাটা গ্রামের মৃত মুসলিম মিয়ার ছেলে। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, সকালে বাবুল ও তার ছেলে মাহিমসহ প্রায় ৫৫ জনের একটি টিম কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসেন। পরে দুপুরে তারা তিন-চার জন মিলে সৈকতে গোসল করতে নামেন। এ সময় বাবুল উচ্ছ্বসিত হয়ে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে ঘাড়ে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক বাবুলকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওসি বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।’ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ এরপর ঝিনাইদহ-চায়াডাঙ্গা মহাসড়কের বৈডাঙ্গা নামক স্থানে ধর্মপ্রান মুসলমানেরা সড়কের মাঝে সমীর কুমারের শাস্তির দাবীতে সড়ক অবরোধ করে। এতে করে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে সাময়িক ভাবে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঝিনাইদহ সদর কর্মকর্তা ইনচার্জ মিজানুর রহমান খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ শান্ত করেন এবং সবাইকে আশ্বাস দেন। তদন্ত সাপেক্ষে সমীর কুমার দুষি হলে তাকে খুব দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হবে। এবিষয়ে মানববন্ধনে থাকা ধর্মপ্রান মুসলমানেরা বলেন,এদের মতো দুঃসাহস মানব ইতিহাসে আগে কেউ কখনো দেখায় নি। আল্লাহর রাসূলের অবমাননা করা হবে, আর মুসলিমরা চুপ করে থাকবে এটা কখনোই হতে পারে না। এধরণের বেধর্মীদের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিবাদিী হতে হবে। এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর কর্মকর্তা ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন,সমীর দুষি হলে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে খুব দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হবে।