শনিবার ● ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » বাংলা’র টাইগারদের জয়
বাংলা’র টাইগারদের জয়
ক্রীড়া প্রতিবেদক :: বাংলাদেশকে ১৩৩ রানে আটকে রেখে আরব আমিরাত নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতে চেয়েছিল। তবে, টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৭.৪ ওভারে মাত্র ৮২ রানেই গুটিয়ে যায় আমিরাত। বাছাইপর্বে চমক দেখিয়ে মূলপর্বে উঠে আসা আমিরাতকে টাইগাররা হারায় ৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে। ফলে, মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক-মুস্তাফিজদের স্বপ্ন টিকে থাকলো এশিয়া কাপের চলমান আসরের ফাইনালে উঠার।
মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নবাগত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আমিরাতের দলপতি আমজাদ জাভেদ। বাংলাদেশ নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৩ রান।
টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ৯ ম্যাচ খেলা সৌম্য সরকার এবং ৪ ম্যাচ খেলা মোহাম্মদ মিথুন। একবার করে জীবন ফিরে পেয়ে দুই ওপেনারই জ্বলে উঠেন। তবে, ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। মোহাম্মদ শাহজাদের বলে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে সৌম্য করেন ১৪ বলে ২১ রান। তার ইনিংসে ছিল একটি ছক্কা আর দুটি বাউন্ডারি। দলীয় ৪৬ রানে ফেরেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
দুই ওপেনার ৩২ বলে ৪৬ রান তুলে নেন। সৌম্য সরকার বিদায় নেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে। ইনিংসের দশম ওভারে বিদায় নেন সাব্বির রহমান। রোহান মুস্তফার বলে মিড-উইকেটে বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রান করা সাব্বির। বিদায় নেওয়ার আগে তিনি মিথুনের সঙ্গে ২৬ রানের জুটি গড়েন।
ওপেনার সৌম্য সরকার আর তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমানের পর বিদায় নেন অসাধারণ একটি ইনিংস খেলা আরেক ওপেনার মোহাম্মদ মিথুন। রোহান মুস্তফার বলে বাইরে দাঁড়িয়ে খেলতে গেলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। তবে, বিদায়ের আগে মিথুনের ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান। তার ৪১ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চার আর দুটি ছক্কা।
কিছুটা উপরে এনে ব্যাটিংয়ে পাঠানো মুশফিকুর রহিম এ ম্যাচে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মাত্র ৪ রান করে মোহাম্মদ নাভীদের বাউন্সি বলে উইকেটের পেছনে স্বপ্নীল পাতিলের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। দলীয় ৮৩ রানে টাইগাররা টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারায়।
দলীয় ৮৩ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশ আরও একটি উইকেট হারায় ইনিংসের ১৮তম ওভারে। সাকিবকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন আমজাদ জাভেদ। সাকিব ১৩ বলে ১৩ রান করেন। এরপর একই ওভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান। নিজের প্রথম বলেই বিদায় নেন সোহান। এ ম্যাচে ছিলেন না ভারতের বিপক্ষে সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়েস। তার জায়গায় দলে আসেন নুরুল হাসান সোহান। এর আগে টাইগারদের হয়ে চারটি ম্যাচ খেলেন তিনি।
১৯তম ওভারে মাশরাফি বিদায় নেন। মোহাম্মদ নাভীদের বলে ফাহাদ তারিকের তালুবন্দি হন কোনো রান না করা টাইগারদের দলপতি।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২৭ বলে ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন।
১৩৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামে আগের ম্যাচেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ১২৯ রানে রুখে দেওয়া আরব আমিরাত। বাংলাদেশের হয়ে বোলিং শুরু করেন তাসকিন আহমেদ।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন পেসার আল আমিন। মাশরাফির তালুবন্দি হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ কলিম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে উইকেট শিকারে যোগ দিতে চেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১০ রান করা রোহান মুস্তফাকে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে ফেরাতে চাইলেও ঠিকমতো ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি কাটার মাস্টার।
দলীয় দুই রানের মাথায় ওপেনার মোহাম্মদ কলিম সাজঘরে ফেরেন। এরপর উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন রোহান ও শাহজাদ। তবে, পঞ্চম ওভারে মাশরাফি ফিরিয়ে দেন ১৮ রান করা রোহানকে। মুস্তাফিজই ক্যাচ নিয়ে ফেরান রোহানকে।
ষষ্ঠ ওভারে শাইমান আনোয়ারকে ফেরান ম্যাশ। তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে পয়েন্টে দাঁড়ানো মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ বামদিকে ডাইভ দিয়ে অনবদ্য এক ক্যাচ লুফে নেন। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় আমিরাত। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে মুস্তাফিজ ফেরান শাহজাদকে। নিজের বলে এবার নিজেই ক্যাচ নেন তিনি। পরের বলেই ফিরিয়ে দেন স্বপ্নীল পাতিলকে। দুই ব্যাটসম্যানই মুস্তাফিজের মায়াবী কাটারে পরাস্ত হন। তবে, হ্যাটট্রিক থেকে বঞ্চিত হতে হয় বিশ্বের বাঘাবাঘা ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরানো মুস্তাফিজকে।
১১তম ওভারে ফেরেন আমিরাতের দলপতি আমজাদ জাভেদ। পরের ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে বোকা-বনে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ফাহাদ তারিক। ১৩তম ওভারে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ফিরিয়ে দেন দুই রান করা সাকলাইন হায়দারকে।
১৬তম ওভারে তাসকিন শিকারে ফেরেন ৩০ রান করা মুহাম্মদ উসমান। ৩০ বলে ইনিংস সাজানো উসমানকে বোল্ড করেন তাসকিন। ১৮তম ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে স্ট্যাম্পিং হন রাজা। ১৭.৪ ওভারে ৮২ রানেই গুটিয়ে যায় আমিরাত।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট তুলে নেন তাসকিন, মুস্তাফিজ, মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহ। আর একটি করে উইকেট দখল করেন আল আমিন ও সাকিব।
বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, নুরুল হাসান, মোহাম্মদ মিথুন, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।
আরব আমিরাত একাদশ: আমজাদ জাভেদ, মুহাম্মদ কলিম, রোহান মুস্তাফা, শাইমান আনোয়ার, মোহাম্মদ শাহজাদ, মুহাম্মদ উসমান, সাকলাইন হায়দার, স্বপ্নীল পাতিল, আহমেদ রাজা, মোহাম্মদ নাভীদ, ফাহাদ তারিক।