শনিবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মোংলা শহরে কুকুরের উপদ্রব
মোংলা শহরে কুকুরের উপদ্রব
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোংলায় বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ওলি গলির মাথায় ক্ষ্যাপা পাগলা কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক হারে । এই পাগলা কুকুর পথযাত্রীদের চলার পথে দেখলেই তেড়ে আসে। ফলে পথযাত্রীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। মোংলা পৌরসভার মেয়র বললেন, কুকুর নিধনের সুযাগে নেই।ক্ষ্যাপা পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাঁচতে উপায় জনসচেতনতার বিকল্প নেই। মোংলা পশ্চিম শেহলাবুনিয়া রোডের বাসিন্দা সোহেল রানা জানান, আমি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। রাত ৯টা থেকে ১০ টার পরে শহরের বিভিন্ন মোড়ের মাথায় প্রতিদিন ৭-৮ টি ক্ষ্যাপা , পাগলা কুকুর তেড়ে আসে কামড়াতে । এসময় কৌশলে কুকুরের হাত থেকে বেচে বাসায় ফিরি। প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটে। আমি এবং আমার মত অনেকেই কুকুরের তাড়া খেয়ে খুবই আতংকের মধ্যে আসা যাওয়া করে।
মোংলা কবরস্থান রোডের বাসিন্দা জসিম ও নজরুল ইসলাম অভিযাগে করে বলেন গত রবিবার রাত ১০ টার দিকে পাগলা কুকুরের তাড়া খেয়ে খুবই আতংকিত হয়ে পড়েছিলাম । ভাগ্যিস দৌড় না দিয়ে হাতে থাকা পাউরুটি ২ পিস ছুড়ে দিয়ে কৌশলে পালিয়ে আসি। শহরতলীর কেওড়াতলা এলাকার বাসিন্দা আলামিন অভিযাগে করে বলেন, গত সোমবার রাত ১২ টার দিকে মোংলা কলেজের সামনে দিয়ে মােটরসাইকেল নিয়ে রুগি দেখতে মোংলা হাসপাতালে যাই। কলেজের সামনে কয়েকটি পাগলা কুকুর আমাকে তাড়া করে। অল্পের জন্য কুকুরের কামড়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।
মোংলা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ জিবিতোষ বিশ্বাস বলেন, ক্ষ্যাপা, পাগলা কুকুরে যদি কাউকে কামড়ায় তাহলে নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন দিলে সমস্যা হবে না। কিন্তু কুকুরের কামড়ে ত- তো হবেই । কিন্তু কুকুরে কামড়ানো রুগীর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন না দিলে জলাতঙ্ক রোগ দেখা দিতে পারে। আর জলাতঙ্ক রোগ হলে ওই রুগীর মৃত্যু নিশ্চিত । তবে মোংলা হাসপাতালে ভ্যাকসিনের কোন ব্যাবস্থা নেই।
জানতে চাইলে মোংলা পৌর মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, ক্ষ্যাপা ,পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাচাঁর একমাত্র পথ হচ্ছে জনসচেতনতা। যারা কুকুর পোষে ও কুকুর পালনকারীদের জনসচেনতার মাধ্যমে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের এব্যাপারে সচেতন হয়ে যাতে রাস্তায় যেয়ে পথযাত্রীদের ভিতরে ভীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে । ঢাকা হাইকোর্টের একটি রিটের আদেশ আছে, কুকুর নিধন না করতে। এছাড়া কুকুরে কামড়ালে জনসাধারণকে বাঁচাতে পৌরসভার মাধ্যমে ভ্যাকসিনের আপাতত কোন ব্যাবস্থা নেই। মুল কথা কুকুর পালনকারীদের জনসচেতনতার মাধম্যে এগিয়ে আসতে হবে।
রামপালে নবাগত ওসি’সৈয়দ শামসুদ্দিনের অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেফতার-৭
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের রামপাল থানায় নবাগত ওসি বুধবারে যোগদান করেই অভিযান চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত ৭ আসামিকে গ্রেফতার করেছেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার নবাগত ওসি সৈয়দ সামসুদ্দিন যোগদান করেন। এরপর ওই রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার আদাঘাট গ্রামের নূরুল ইসলামের পুত্র আবুল বাশারকে তার বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার করে। সে সিআর ১৪/১৯ নং পারিবারিক মামলার মামলায় ৩ মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
গৌরম্ভা গ্রামের নাসির উদ্দীনের পুত্র সিআর ২২৮/২০ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি নাসিম জোয়ার্দারকে গ্রেফতার করেন। এছাড়াও উপজেলার শ্রীরম্ভা এলাকার আব্দুর রহমানের পুত্র সিআর ৭০/২১ নং মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মিজান ফকির, আমিনুর ফকির, মোবারকের পুত্র জামাল বয়াতি ও আমান বয়াতি, আমিনুল ফকিরের পুত্র সাইদ ফকিরকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি রামপাল থানায় নবাগত ওসি সৈয়দ শামসুদ্দিন সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে বলেন, নিয়মিত ওয়ারেন্ট তামিলসহ বুধবার রাতেই ৭ জনকে গ্রেফতার করেছি।অভিযান আরও জোরদার করা হবে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাগেরহাটে চিতলমারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা’র তালিকা থেকে বাদ পড়লেন ১৬ জন,রয়েছে মন্ত্রণালয়ে আপিলের সুযোগ
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের চিতলমারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে তালিকা থেকে ১৬ জন বাদ পড়েছেন। উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে ‘উপস্থাপিত সাক্ষ্য প্রমাণাদিতে তারা মুক্তিযোদ্ধা নন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নোটিশ বোর্ডে কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাদপড়াদের নামের তালিকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে প্রতিবেদনের কপি। গত ৩০ জানুয়ারী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ১৫৬ জনের একটি তালিকার যাচাই-বাছাই করা হয়। তবে তালিকা থেকে বাদপড়া সকলেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবেন বলে যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন।
যাচাই-বাছাই কমিটিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ সবুর, সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শামসুল আলম, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ কুমার বাড়ৈ ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম।
যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ সবুর মুঠোফোনে জানান, ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত যে সব মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকার পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে নেতিবাচক নানা তথ্য যায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে চিতলমারীতে ১৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে যাচাইয়ের আওতায় আনতে পত্র আসে।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়। সে মোতাবেক চিতলমারীর ১৫৬ জন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার কাছে এ চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়। এরমধ্যে একজনের লাল মুক্তিবার্তায় নাম থাকায় তাকে বাদ রেখে সর্বশেষ ১৫৫ জনকে চিঠি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। ৩০ জানুয়ারি জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলে। মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্দেশনা ও বাছাই বিধি মোতাবেক গঠিত কমিটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাছাই সম্পন্ন করেছে। তবে তালিকা থেকে বাদপড়া সকলেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবেন।
যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শামসুল আলম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ কুমার বাড়ৈ জানান, স্বাক্ষী প্রমাণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়া ও ৩৩ প্রকার কেটাগরির প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৬ জন গেজেটভুক্ত ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা নন বলে প্রমাণিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মারুফুল আলম বলেন, যাচাই-বাছাই তালিকার ১৫৫ জনের মধ্যে দুইজন বাদে সকলেই উপস্থিত ছিলেন। হাজির না হওয়া দুই জনের খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছি তারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। স্বচ্ছতার সাথে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। তালিকা থেকে ১৬ জন বাদ পড়েছেন। এদেরমধ্যে একজন আনসার বাহিনীর সদস্য। কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা মিলে এ ব্যাপরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছি। সেই সাথে যাচাই-বাছাই কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাছাইয়ের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই কার্যক্রমের ফলাফলের উপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত বাদপড়াদের নামের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে। তারা হলেন, বড়বাড়িয়া গ্রামের এফ এম বদর উজ্জামান (আনসার বাহিনী), একই গ্রামের মোঃ কেরামত আলী খান, একই গ্রামের আঃ হক শিকদার (মৃত), বড়গুনি গ্রামের বাবর আলী মোল্লা (মৃত), বারাশিয়া গ্রামের মোঃ নুর ইসলাম শেখ, একই গ্রামের চান মিয়া শেখ, বাশবাড়িয়া গ্রামের মোঃ তাছেন শেখ (মৃত), পরানপুর গ্রামের মোশারেফ, ঘোলা গ্রামের শেখ মোঃ ফরিদ আহম্মেদ (মৃত), পারনপুর গ্রামের মোঃ আব্দুর রশিদ, মাছুয়ারকুল গ্রামের জ্যেতিষ বসু, বাকপুর গ্রামের ছলেমান শেখ, শৈলদাহ গ্রামের ইদ্রিস শেখ, শিবপুর গ্রামের মোস্তফা শেখ (মৃত), একই গ্রামের মোঃ সরোয়ার হেসেন (মৃত) ও আড়–য়াবর্নী গ্রামের মোঃ আঃ সাত্তার খান।
বাগেরহাটে শরণখোলায় নিষিদ্ধ একটন জাটকা ইলিশ এতিমদের দিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত
বাগেরহাট :: আহরণ নিষিদ্ধ একটন জাটকা ইলিশ বোঝাই এফবি গাজী-২ নামের একটি ফিশিং ট্রলার জব্দ করেছে কোস্টগার্ড। আজ বৃহস্পতিবার ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা রাজৈর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয় জব্দ ট্রলারটি। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ট্রলারের মাঝিকে (চালক) জরিমানা ও জাটকাগুলো এতিমখানায় বিতরণ করেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী কন্টিনজেন্টের কোস্টগার্ড সদস্যরা বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে বলেশ্বর নদের মোহনা থেকে ১৫ জন জেলেসহ জাটকা বোঝাই ট্রলারিটি জব্দ করেন।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কচিখালী কন্টিনজেন্ট কমান্ডার এম হাবিবুর রহমান জানান, তারা ওই রাতে বলেশ্বর নদে নিয়মিত টহলকালে ফিশিং ট্রলারটি দেখে থামাতে বলেন। তখন না থামিয়ে দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাওয়া তারা স্পিডবোটে ধাওয়া করে জব্দ করেন ট্রলারটি। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলা গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. ওয়ারেছ গাজীর মালিকানাধীন ওই ট্রলারে থাকা জেলেদের বাড়ি বরগুনা সদরের পোটকাখালী এলাকায়।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, মৎস্য আইনে ট্রলার মাঝি ফোরকান মিয়াকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫দিনের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাকটাগুলো উপজেলার সকল এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।