রবিবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » বন্ধ আছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রকল্পের নির্মাণ কাজ
বন্ধ আছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রকল্পের নির্মাণ কাজ
রাজস্থলী প্রতিনিধি :: রাঙামাটি জেলাতে রাজস্থলী উপজেলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ১৩ কোটি এবং ফায়ার সার্ভিস ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার নির্মাণ কাজ প্রায় ১ বছর ধরে আটকে আছে। এতে প্রকল্পটির কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
পর্যাপ্ত পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করে রাজস্থলী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর গণপুর্ত বিভাগ। এছাড়া ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয় মসজিদ নির্মাণে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শুরুর লগ্ন থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষ।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরপত্র আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরুর কয়েকদিনের মাথায় আঞ্চলিক সংগঠনের কারণে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধিন গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখন নির্মাণ কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে নানান তালবাহানা। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
গত ২৭ আগস্ট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপণ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির ১টি প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজস্থলী উপজেলার জন্য ১টি ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, দেশে ৩ ক্যাটাগড়িতে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে রাজস্থলী উপজেলায় ‘সি’ ক্যাটাগড়ি মসজিদের আয়তন ৬১ হাজার ২৫ বর্গমিটার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১টি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পে ৮৭০২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নে অনুমোদিত করা হয়। প্রতিটি মসজিদ কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের জন্য জায়গা নির্ধারনের জন্য দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন। তবে কি কারণে রাজস্থলী উপজেলার মডেল মসজিদ ফায়ার সার্ভিস কাজ আটকে আছে জানতে চাইলে জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, মডেল মসজিদ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে একটি কাজ বন্ধের চিঠি প্রেরণ করে। চিঠিতে উল্লেখ আছে যে, পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠনের কারণে মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ।
একই প্রশ্নের জবারে মডেল মসজিদ নির্মাণ ঠিকাদার বঙ্গ বিল্ডার্স লি. এর স্বত্তাধিকারী বাবু অসিত কুমার বলেন, আমরা শুরু থেকে মসজিদের কাজ শুরু করি। দুই-চারদিন যাওয়ার পর থেকে আঞ্চলিক সংগঠনের চাপের মুখে কাজ বন্ধ করে রেখেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপুর্ত বিভাগ, রাঙামাটি ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছি। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা তিনি নিশ্চিত নন বলেও জানান।
অপর দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, মডেল মসজিদের কাজ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ। এবিষয়ে আগামী সমন্বয় মিটিংএ উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি প্রেরন করা হবে। জানা যায় ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইসতেহার মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রতিটি জেলা উপজেলায় ১টি করে মোট ৫৬০টি মডেল মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন ঘোষণা দেন। এতে উপজেলার জন্য ৩ তলা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে পুরুষ ও নারীদের পৃথক ওযু ও নামায আদায়ের সুবিধা, পবিত্র কোরআনে হাফেজ, শিশু শিক্ষা, লাইব্রেরি, গবেষণা ও দ্বীনি-দাওয়াত কার্যক্রম, হজ্বযাত্রীদের নিবন্ধন প্রশিক্ষণ, ঈমামদের প্রশিক্ষণ, অতিথি কর্মশালা এবং বিদেশি পর্যটকদের আবাসনসহ ঈমাম মোয়াজ্জেমের জন্য আবাস ও অফিস ব্যবস্থা করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো যেমন মডেল মসজিদ ও ফায়ার সার্ভিস এর কাজ দ্রুত কার্যক্রম করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোড় দাবি স্থানীয়রা।