রবিবার ● ১১ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাজস্থলীতে ঘরে বসে পালিত হবে শুভ নববর্ষ
রাজস্থলীতে ঘরে বসে পালিত হবে শুভ নববর্ষ
চাইথোয়াইমং মারমা, রাজস্থলী প্রতিনিধি :: পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ী সম্প্রদায়ের অন্যতম সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবী।
চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাঁই, তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের বিষু, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এই উৎসব বৈসু নামে পরিচিত হলেও সকলে বাংলা বর্ষ বিদায় এবং নতুন নববর্ষকে বরন উপলক্ষে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এই উৎসব গুলো পালন করে থাকেন। কিন্ত করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবের কারনে এবারও রাজস্থলী উপজেলায় হচ্ছে না প্রাণের বৈসাবী উৎসব। প্রতি বছর এপ্রিল প্রথম সপ্তাহ থেকে পাহাড়ের এই উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত থাকতো পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। কি শহর কি গ্রাম প্রতিটি এলাকায় হতো বর্নিল এই উৎসব এর আয়োজন। ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা, গ্যাংঘুলি গানের আসর,র্যা লি পাজন ও পিঠা পায়েস রান্না, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানা আয়োজনে মুখরিত থাকতো পাহাড়ের প্রতিটি গ্রামঅঞ্চল। মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে গতবছর এর মতো এবারও বড়সড়ে উৎসব বাদ দিয়ে একান্ত ঘরোয়াভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে এই উৎসব পালন করবেন পাহাড়ে বসবাসরত জনগণ। রাজস্থলী উপজেলায় বসবাসরত পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ট হলো মারমা ত্রিপুরা ও তনচংগ্যা সম্প্রদায়। বাঙ্গালহালিয়া, তাইতং পাড়া, ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যে খাগড়াছড়ি পাড়া ও মহাজন পাড়ায় মারমা সম্প্রদায়ের বসবাস। অপর দিকে বলি পাড়া কিস্ত পাড়া নাড়াইছড়ি ও ভোটাম পাড়ায় রয়েছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়। পাশা পাশি তনচংগ্যা সম্প্রদায় ও রয়েছে এ উপজেলায়। প্রতিবছর এখানকার মারমা জনগোষ্ঠী ১৫ এপ্রিল পালন করে থাকে সাংগ্রাঁই জল উৎসব যা জলকেলী উৎসব নামে সকলে কাছে সু-পরিচিত। বিগত কয়েক বছর আগে ঐতিহ্যবাহী এই জল উৎসব পালন করা হয়েছিল তাইতং পাড়া স্কুল মাঠে। কিন্ত করোনার মহা থাবায় সাংগ্রাই আয়োজক কমিটি পার্বত্য অঞ্চলের সমস্ত উৎসবের আয়োজন বাতিল করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে রাজস্থলী উপজেলা সাংগ্রাই উৎসব কমিটির সভাপতি জানান, আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিলো, কিন্ত করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে আমরা এই বছর আমাদের উৎসব বড়পরিসরে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে বিহারে বিহারে আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্বল্প পরিসরে বুদ্ধ পুজা দিবো এবং পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে বসে এই উৎসব পালন করবো। মারমা সাংস্কৃতিক সংঘের সাধারন সম্পাদক উথোয়াইচিং মারমা এই প্রতিবেদককে জানান, সাংগ্রাঁই তাদের প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে কতো প্রস্তুতি থাকতো তাদের, কিন্তু করোনার কারনে তারা এই বছরেও এই মহা আনন্দ উৎসব হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। তনচংগ্যা সম্প্রদায়ের প্রবীন ব্যক্তি ভুষন চন্দ্র তনচংগ্যা জানান, করোনার কারনে আমরা এইবারও এই উৎসব করতে পারছিনা বড় পরিসরে। এই ঐহিহ্য উৎসব বাংলা নবর্বষ বা বৈসাবি তে নদী খালে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে সজ্জিত ভাসিয়ে নতুন বর্ষকে বরন ও পুরানো বছর কে বিদায় জানাতে দেখা যায় যুবক যুবতী নরনারী ও শিশুরা।