বৃহস্পতিবার ● ২৭ মে ২০২১
প্রথম পাতা » জাতীয় » ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেট সম্পর্কে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ দফা প্রস্তাবনা
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেট সম্পর্কে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ দফা প্রস্তাবনা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজ এক বিবৃতিতে করোনা মহামারী জাতীয় অর্থনীতি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে যে বহুমুখী অভিঘাত সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণ, জনগণকে সুরক্ষা, দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে আসা বিশাল জনগোষ্ঠি ও প্রান্তিক জনগণের মানবিক অর্থনৈতিক জীবন নিশ্চিত করাকেই আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হিসাবে নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শ্রমজীবী- মেহনতি মানুষসহ স্বল্প আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক জীবন সচল রাখাকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করা দরকার। দুর্যোগকালীন সময়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সাইকেল অক্ষুন্ন রাখতে শিল্পের পাশাপাশি বেকারদের কর্মসংস্থান, জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কৃষি ও গ্রামীণ খাতকে সবিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। মহামারীজনীত পরিস্থিতিতে ‘জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তোলাকে গুরুত্ব দিয়ে গোটা স্বাস্থ্য ওচিকিৎসা ব্যবস্থাকে তিনি ঢেলে সাজানোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি তেলের মাথায় তেল দেবার নীতি পরিহার করে লুটেরা পুঁজিপতিদেরকে অপ্রয়োজনীয় সহায়তা ও প্রণোদনা প্রদান বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তিনি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় তথা সরকারের কাছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
প্রস্তাবনাসমূহ নিম্নরূপ:
এক॥ করোনা মহামারী ও মহামারীজনীত পরিস্থিতি থেকে উত্তণে স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, খাদ্য-কর্মসংস্থান এবং কৃষি ও গ্রামীণ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের নীতি গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী বাজেট পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
দুই॥ জনগণের স্বাস্থ্যকে সম্পদ বিবেচনা করে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ‘গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। ১৮ বছরের উপর দেশের সকল মানুষকে এই বছরের মধ্যে করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দ্রুত টিকা আমদানির পাশাপাশি দেশে করোনার টিকা উৎপাদনের সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
তিন॥ কৃষি ও গ্রামীণ খাতের পুনরুজ্জীবন ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে উন্নয়ন বাজেটের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ মেট্টিক টন ধান ক্রয় করতে হবে। কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র প্রকল্প, মৎস্য, দুগ্ধ ও পোল্ট্রির মত উৎপাদনশীল উদ্যোগকে আর্থিক প্রণোদনা ও সাহায্য নিশ্চিত করতে হবে।
চার॥ তেলের মাথায় তেল দেবার নীতি পরিহার করে মাঝারি, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। পাদুকা শিল্পের মত গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতসমূহকে কার্যকরি সহযোগিতা দিতে হবে।
পাঁচ॥ বেকারদের কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার প্রদান এবং আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগসমূহকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
ছয়॥ দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে আসা দেশের নিম্নআয়ের শ্রমজীবী- মেহনতি-দিনমজুর ও গরীব আড়াই কোটি পরিবারসমূহের জন্য আগামী ৬ মাস প্রয়োজনীয় খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদানে বরাদ্দ থাকা দরকার। শ্রমজীবী ও স্বল্পআয়ের মানুষের জন্য স্থায়ী গণবন্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বাজেটে পরিস্কার নির্দেশনা ও বরাদ্দ রাখতে হবে।
সাত॥ রাজস্ব ব্যয় তথা সরকার পরিচালনার খরচ কমাতে হবে। বিলাসদ্রব্যের আমদানী ও রাষ্ট্রীয় অপচয় বন্ধ করতে হবে। সামরিক খাতসহ অনুৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দ কমিয়ে আনা প্রয়োজন।
আট॥ কালো টাকা সাদা করার নীতি বাতিল করে কালো টাকা, অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ ও বিদেশে পাচার করা উদ্ধার করার কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ধনী ও বিত্তবানদেরকে করের আওতায় নিয়ে এসে তাদের উপর বর্ধিত কর আরোপ করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কৌশল নিতে হবে।
নয়॥ মেগা প্রকল্পে জবাবদিহিবিহীন ব্যয় বৃদ্ধির বর্তমান ধারা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। পরিবহন ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বাড়ী ভাড়া ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রনের নীতি গ্রহণ করতে হবে। সকলস্তরে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ও বাজার সিন্ডিকেটসমূহের দৌরাত্ম বন্ধ করতে হবে।