শুক্রবার ● ২ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » সিন্দুকছড়িতে পাহাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে রামগড়ে বিক্ষোভ
সিন্দুকছড়িতে পাহাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে রামগড়ে বিক্ষোভ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: গতকাল ১ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় সময়ে গুইমারা উপজেলায় ১ নং সিন্দুকছড়ির পক্ষীমুড়ো এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পাহাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রামগড় এলাকাবাসী।
এসময় এলাকার মুরুব্বী সূর্য ত্রিপুরা বলেন, আমার ভূমি, আমার জায়গা, আমার বাড়ি হয়ে একদল সেনাবাহিনী এসে কোন কিছু না জানিয়ে বাড়ি পুড়িয়ে দেবে তা কী করে হয়? সেনাবাহিনীর কাজ কি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া? যে সেনাবাহিনীরা আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়, আমাদের মা-বোনদের কুনজরে দেয় সেই সেনাবাহিনী আমাদের দরকার নেই। তাদেরকে ঢাকা -চট্টগ্রাম- কুমিল্লা পাঠিয়ে দিন। তাদেরকে বাঙ্গালী দেশে নিয়ে নিন।
এলাকাবাসী পক্ষে রবি চাকমা বলেন, সেনাবাহিনীরা কাদের নিরাপত্তা দিতে পাহাড়ে এসেছে? নিশ্চয়ই বাঙালিদের। যদি আমাদের নিরাপত্তার জন্য এখানে আসতো তাহলেই এমন ঘটনা হওয়ার কোন কথা ছিলোনা। মূলত তারাই শান্ত সবুজে ঘেরা পাহাড়কে অশান্ত ও ঘোলা করছে। তাই তাদের আমাদের প্রয়োজন নেই কারণ তারা নিরাপত্তা দিতে নয় পাহাড়িদের দমাতে এখানে এসেছে। বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী যে একের পর এক সাধারণ জনগণের উপর অত্যাচার, দমন-পীড়ন চালাচ্ছে গতকালের ঘটনা থেকেই তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। তারা কথিত আইন শৃঙ্খলা রক্ষক হয়ে একতরফাভাবে পাহাড়ি বিদ্বেষী কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এতে সাধারণ পাহাড়িদের ভূমি, বাস্তুভিটা এবং কি ঘর-বাড়িও রেহাই পাচ্ছেনা। তারা উন্নয়ন ও সম্প্রীতির কথা বলে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করছে এবং সর্বশান্ত করাচ্ছে।
এসময় বক্তারা আরও বলেন,সেনারা বন্দুকের নলে পাহাড়িদের ভয় দেখিয়ে সাজেক, চিম্বুক পাহাড় থেকে পাহাড়িদের উচ্ছেদ করিয়েছে। চিম্বুক পাহাড়ে সেনাবাহিনী ও সিকদার গ্রুপ কর্তৃক ম্রোদের ভূমি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে জনগণকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দেওয়ার বদলে কেন তারা জনগণের সম্পত্তিগুলো হরন করছে? সেগুলো শুধু পাহাড়িদের উপর ,বাঙালিদের উপর নয় কেন? দেশের সকল জনগণ আইনের দৃষ্টিতে সমান ও সকলেই সমান নিরাপত্তার কথা মহান সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও সেনাবাহিনীরা সংবিধানকে উপেক্ষা করে একপাক্ষীকভাবে, বৈষম্যমূলক আচরণ পাহাড়ে চালাচ্ছে। এতে আরো সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি অসীম চাকমা।
এসময় তিনি বলেন, সরকার পাহাড়িদের উপর বিদ্বেষী আচরণ না করলে সেনাবাহিনী এমন অমানবিক কাজ করতে পারতোনা। আসলেই পাহাড়িরা একই রাষ্ট্রের নাগরিক হয়েও রাষ্ট চাই আমাদেরকে দমাতে তাই আমরা রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের স্বীকার। সেকারণে আমাদের সমস্যাগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। সেজন্য এলাকাবাসীসহ ছাত্র, যুবক, নারীদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে এবং আন্দোলন করে ভূমি, বাস্তুভিটা, জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সিন্দুকছড়িতে রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক যে ন্যারাক্কাজনক পাহাড়িদের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে এবং দোষী সেনাসদস্যদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।