শনিবার ● ১০ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » ঢাকা » সেজান জুস কারখানায় শ্রমিক হত্যার দায়ে মালিক ও কলকারখানা পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করতে হবে : বাম জোট
সেজান জুস কারখানায় শ্রমিক হত্যার দায়ে মালিক ও কলকারখানা পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করতে হবে : বাম জোট
ঢাকা :: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে সরকারি হিসেবে ৫২ জন শ্রমিক নিহত হওয়াকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকান্ডের দায়ে কারখানা মালিক ও কলকারখানা পদির্শককে গ্রেপ্তার ও বিচার এবং নিহত শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট এর উদ্যোগে আজ ১০ জুলাই ২০২১ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক কমরেড মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি কমরেড হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড বাচ্চু ভুইয়া।
সমাবেশে বক্তাগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রানা প্লাজা, তাজরীন, টাম্পাকোর পর আবারও মালিকের অতি মুনাফার লোভী ও রাষ্ট্রীয় অবহেলার নির্মম শিকার হয়ে সেজান জুস কারখানায় সরকারিভাবে ঘোষিত ৫২ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন।
সরকারি ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন সাপেক্ষে কারখানা করার আইন থাকলেও ৬ তলা কারখানা ভবন নির্মাণে কোন বিল্ডিং কোড মানা হয়নি, অগ্নি নির্বাপনের জন্য ফায়ার সেফটির ব্যবস্থা ছিল না, জরুরি বহিঃনির্গমণের জন্য ভবনে যেখানে ৪টি সিড়ি থাকার কথা সেখানে ছিল মাত্র ২টি সিড়ি। গেইট খোলা থাকার কথা থাকলেও তা তালা বন্ধ ছিল, নিয়ম ভেঙে কারখানা ভবনেই কেমিক্যালসহ দাহ্য পদার্থ গুদামজাত করা ছিল। ৪ তলার গেইট খোলা থাকলে হয়তো অধিকাংশ শ্রমিক বাঁচতে পারতো। শিশু শ্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও আইনের লংঘন করে ১২ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত শিশু কিশোর শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এত সব অনিয়ম দেখার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কল-কারখানা পরিদর্শণ অফিসের। অথচ তারা কারখানা পরিদর্শন করেনি। ফলে এটি একটি রাষ্ট্রীয় অবহেলা-গাফিলতিজনিত কাঠামোগত হত্যাকান্ড।
বক্তাগণ অবিলম্বে সেজান জুসের শ্রমিক হত্যার দায়ে কারখানা মালিক এম এ হাশেম, সংশ্লিষ্ট কারখানা পরিদর্শকসহ দায়ীদের গ্রেপ্তার ও বিচার এবং নিহত সকল শ্রমিককে আই এল ও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। অন্যথায় বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।