সোমবার ● ৯ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বর্ষার আত্রাইয়ে জমে উঠেছে নৌকারহাট
বর্ষার আত্রাইয়ে জমে উঠেছে নৌকারহাট
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে নদ-নদী খাল বিলে বর্ষার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরি বিক্রির ধুম পড়েছে। একে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা তৈরির কারিগররা। নতুন নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজও চলছে।
সাম্প্রতি কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা মাছ ধরায় মেতে ওঠেছেন। এসব কারণে কদর বেড়ে যাওয়ায় জমে উঠেছে নৌকা বিক্রির হাটগুলো। বিশেষ করে উপজেলার সমসপাড়াহাটে শুক্রবার ও সোমবার বিক্রি হচ্ছে শতশত নৌকা।
নৌকা ক্রয়ে একদিকে সুফল পাচ্ছেন এলাকার পানি বন্দী মানুষ। অপর দিকে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠ মিস্ত্রী। যে সব মিস্ত্রীরা শুষ্ক মৌসুমে কাজের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা তৈরিতে।
সমসপাড়াহাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা উপজেলার পারমহোনঘোষ গ্রামের আব্দুললতিফ, আব্দুল মজিদসহ অনেকে বলেন, ‘আমরা কৃষক মানুষ। বর্ষায় আমাদের মাঠ ডুবে যাওয়ায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা নৌকা বিক্রির পেশায় নিয়োজিত হয়েছি। শুধু আত্রাই নয়রাণীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও আমাদের নৌকা ক্রয় করতে আসেন।’
তারা জানান, বর্তমানে কাঠ-বাঁশের দাম বেশি এবং মিস্ত্রী মজুরি বেশি হওয়ায় খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয়, তা দিয়ে সংসারের হাট-বাজার করা যায়।
উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের হালতি গ্রামের লোকমান মিস্ত্রি বলেন, বর্ষার পানি নদ-নদী ও খাল-বিলে প্রবেশ করার পর আমাদের এলাকায় নতুন নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামতের ধুম পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে।
উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নন্দনালীগ্রামের নৌকা তৈরির কারিগরনগেন, নরেশ ও নিতাই চন্দ্র বলেন, ৯-১০ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ১২-১৩ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় সাড়ে ৫-৬ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় ৭-৮হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কাঠের প্রকার ভেদে নৌকার দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। তারা আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে হাটে-বাজারে নৌকার ক্রেতারা কম আসে। তাই নৌকা কেনা-বেচা আর আগের মতো হয়না। তাই আমাদের বাপ-দাদার আমলের ব্যবসা কোনো রকমে ধরে রেখেছি। বর্ষার পানি বাড়তে থাকলে নৌকার বেচা-কেনা বেশিহয়।
আত্রাইয়ে গাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা
আত্রাই :: নওগাঁর আত্রাইয়ে রাতের আঁধারে কলা, সিম, কাঁঠাল ও আম গাছ কেটে নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার রাতের কোনো এক সময় উপজেলার নবাবেরতাম্বু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মধ্যবোয়ালিয়া গ্রামের আবু জাফর সরদার এর উঠান বাগানের সমুদয় গাছ কেটে নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত আবু জাফর সরদার জানান, করোনা মহামারির কারনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাড়ীসহ ৩৫ শতক যাইগাতে কলা, সিম, কাঁঠাল ও আমের চারা গাছ রোপণ করেছিলাম। সঠিক পরিচর্যায় গাছগুলোর সুন্দর ডালপালা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেগুলো কেটে ফেলেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। গাছের সাথে মানুষের এটা কেমন শত্রুতা আর কেমনইবা প্রতিশোধ আমি বুঝতে পারছি না। এক প্রশ্নের জবাবে আবু জাফর বলেন, কয়েক মাস আগে পুকুরের মাছ নিয়ে শরিকের লোকের সাথে তাদের মতোবিরোধ হয়েছিলো।
গ্রাম প্রধান আব্দুল জলিল জানান, আমরা কয়েক জন গ্রাম প্রধান ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। শত্রুতা বশত কেহ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। তবে যেই করুক কাজটি সঠিক হয়নি।
ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, একসাথে চলতে কোন কারনে দ্বিমত হতেই পারে তাই বলে গাছ কাটা সঠিক হয়নি। গাছ আমাদের অক্সিজেন ও ফল দেয়। সুতরাং এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
আত্রাই থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।