রবিবার ● ১৭ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ঢাকা » ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান বন্ধ ও ইজিবাইকের চলাচাল নিয়ন্ত্রনে সরকারী ঘোষণা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবী বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গত দেড় বছরে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মহামারি ও টানা লকডাউনে ইতোমধ্যেই সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন নানা পেশার কয়েক কোটি শ্রমিক ও নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ। এসকল কর্মহীন, বেকার ও ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকের পাশে সরকার ও মালিক শ্রেনী পর্যাপ্ত সহযোগীতা নিয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে করোনা মহামারিতে নতুন করে আরো ২.৫ কোটি মানুষসহ দেশের ৫০ ভাগের উপরে মানুষ এখন দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছেন, এই সময়ে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্মরত ৫০ লাখ ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন চালককে বেকার ও কর্মহীন করা কোন ভাবেই বরদাস্ত করা যায়না।
তারা বলেন, রিক্সা চালকেরা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের রাজস্ব আয়, জলবায়ু ও পরিবেশের দূষণরোধসহ নিন্ম মধ্যবিত্ত মানুষের চলাচলে কতখানি সহযোগিতা করছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম চালু রাখতে কতটুকু ভূমিকা রাখছে তা নিশ্চয় সরকারের অজানা নয়; তারপরও ব্যাটারিচালিত রিক্সা ভ্যান, ইজিবাইকে বৈধতা না দিয়ে উচ্ছেদ প্রচেষ্টা দেশবাসীর নিকট দুরভিসন্ধিপূর্ণ স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত বলেই চিহ্নিত হচ্ছে। ডিজিটাল যুগে এসে প্যাডেলচালিত রিক্সার বদলে মানুষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে চাইবে- এটাই স্বাভাবিক, তাছাড়া লাখ লাখ রিক্সা চালক চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অথবা স¤পত্তি বিক্রি-বন্ধক রেখে ব্যাটারি রিক্সা কিনে তাঁদের অমানবিক শ্রম লাঘব করেছেন। উপরন্তু গণপরিবহন হিসেবে দেশের শহর কিংবা গ্রামে রিক্সা এখনও অপরিহার্য। আর তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছাড়া রিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হলে একদিকে এই পেশায় নিয়োজিত প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে অন্য দিকে অপ্রশস্ত সড়কগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ, রোগী কিংবা পণ্য পরিবহন হয়ে পড়বে দুরূহ ও ব্যয়বহুল।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, টাস্কফোর্সের সভায় ব্যাটারি রিক্সার ব্রেক পদ্ধতি বা তার কাঠামোগত দুর্¡লতাকে দুর্ঘটনার কারন হিসাবে চিহ্নিত করলেও সেই কাঠামোগত দুর্বলতা কাটানোর কোন সুপারিশ না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মাথা ব্যথার কারনে মাথা কেটে ফেলার সামিল এবং সরকারের এ সিদ্ধান্ত চরম হঠকারী ও গণবিরোধী। আর তাই অবিলম্বে ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ভ্যান বন্ধ ও ইজিবাইকের চলাচল নিয়ন্ত্রনে সরকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। বুয়েট প্রস্তাবিত রিক্সার নকশা আধুনিকায়ন ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) উদ্ভাবিত গতি নিয়ন্ত্রক ও উন্নত ব্রেক পদ্ধতি বাস্তবায়ন করে ব্যাটারী চালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক নিবন্ধনের নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়াও স্বল্প গতীর যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক-মহাসড়কের পাশে পার্শ্ব রাস্তা/লেন নির্মাণ ও রিক্সা চালকের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং প্রকৃত রিকশা চালককে লাইসেন্স প্রদান করাসহ সম্প্রতিকালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করার জোর দাবী করা হয়।
আজ ১৭ অক্টোবর সকালে শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম এর সভাপতিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির আহবায়ক আবু হাসান টিপু, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের আহবায়ক শামীম ইমাম, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এ এম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ) এর সহ-সাধারণ সম্পাদক আলিফ দেওয়ান, শ্রমজীবী সংঘের সভাপতি আবদুল আলী, বাংলাদেশ শ্রমজীবী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সুবল সরকার প্রমূখ।