বুধবার ● ৩ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » সিলেটে বিতর্কিত বানিজ্য মেলায় উপশহরবাসীর মনে শংকা
সিলেটে বিতর্কিত বানিজ্য মেলায় উপশহরবাসীর মনে শংকা
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস) আয়োজিত বানিজ্যি মেলা উদ্ভোধনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে সিলেটের শাহজালাল উপশহরের আই ব্লক স্কুল মাঠে।
এই মেলার অনুমোদন থেকে এখন পর্যন্ত বিতর্কের চাদরে ঢাকা। স্থানীয় অনেকেই এই মেলাকে টাকার মেলা বলে আখ্যায়িত করেছেন। অনুমোদন, প্রস্তুতি থেকে এখন পর্যন্ত এই মেলাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক চলছেই।
খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর ৫ ধারানুযায়ী খেলার মাঠ অন্য কোনরুপে ব্যবহার বা অনুরূপ ব্যাবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা যাবেনা।
কিন্তু এই আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে বানিজ্য মেলার অনুমতি। তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) অনুমতি দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ।
তবে মেলার সময় শেষ হলেও আইন বহির্ভূতভাবে পুলিশের অনুমতি নিয়ে আট মাস ধরে স্টল দিয়ে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে শিশু কিশোদের।
তাছাড়া এই মেলাকে কেন্দ্র করে প্রথম পর্যায়ে শুরু হয় নোংরা রাজনৈতিক খেলা। যা এখনো চলছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে এটা মেলা নয় বর্ং কিছু ধান্ধাবাজ ব্যক্তির টাকা ও ক্ষমতার খেলা।
এসব বিতর্কের সাথে নতুন যুক্ত হয়েছে বহিরাগতদের অহেতুক আনাগোনা, আড্ডা, বানিজ্যমেলাকে কেন্দ্র করে বসছে জুয়ার আসর।
ফলে স্থানীয় লোকজন দাবী করছেন অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি ও স্থানীয় কিশোরদের চারিত্রিক পদস্খলনের। মেলার প্রারম্ভেই শাহজালাল উপশহরে চুরি, ছিনতাই বেড়ে গেছে বলে দাবী স্থানীয়দের।
স্থানীয় এফ ব্লক এর বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, মেলা উদ্ভোদন হওয়ার আগে থেকেই প্রতিনিয়ত বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বেড়েছে প্রচুর পরিমানে। প্রতিদিন মেলায় যুবকদের মারামারি ও চুরি ঘটনা ঘটছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইভটিজিং এর ঘটনাও।
এ মেলা শুরুর প্রারম্ভেই বেড়ে গেছে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা। চুরি হয়েছে বি ব্লক ১৬নং রোড থেকে আমিন নামে একজনের পালসার মোটর সাইকেল। এমনকি মেলার গেইট থেকেই চুরি হয়েছে ২টি মটর সাইকেল।
অভিযোগ রয়েছে মেলায় উচ্চশব্দে গান বাজনার কারনে বিঘ্ন হচ্ছে মুসল্লিদের নামাজে। তাছাড়া বখাটদের আনাগোনায় নষ্ট হচ্ছে উপশহরের পরিবেশ।
এছাড়াও করোনার দীর্ঘ বন্ধের পর স্কুল খুললেও আই ব্লক স্কুল মাঠ দখল করে মেলা আয়োজনে পড়ালেখা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
সকলের প্রশ্ন একটাই কবে মেলা মুক্ত হবে খেলার মাঠ। কবের আগের সুন্দর পরিবেশে ফিরবে প্রিয় আবাসিক এলাকা শাহজালাল উপশহর আবাসিক এলাকা।
তাছাড়া নামে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমেলা হলেও এখানে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, জুতা থেকে শুরু করে গৃহসজ্জার উপকরণ, কার্পেট, হাড়ি পাতিল, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, কসমেটিকস, খাবারপন্যসহ নানা পন্যের স্টল।
আছে বন্দুক দিয়ে গুলিকরা, ম্যাজিক দেখা ও শেখার স্টল।
মসজিদ কমিটি সভাপতি সফিকুর রহমান ও স্কুল কমিটি সভাপতি এডভোকেট আবদুল গফুর ও উপশহর কল্যান পরিষদের সভাপতি এডভোকেট এহতেসামুল হকের ধারনা এই খেলার মাঠ নিয়ে চলছে ষড়যন্ত্র। শিশু কিশোরদের দীর্ঘদিন খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত করে মাঠ দখলের পায়তারা চলতেছে।
এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে মেলায় প্রতিদিন রাত্রে জোয়ার বোর্ড বসানোর। এছাড়াও মেলা উপলক্ষে বেড়েছে মাতালদের আনাগোনা।
উপশহরবাসী এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, সিসিক, জেলা প্রশাসক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে এম আব্দুল মোমেন এমপি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র সুদৃষ্টি কামনা করছেন।