শুক্রবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে ২৮ নভেম্বর ইউপি নির্বাচন : ৯ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
মহালছড়িতে ২৮ নভেম্বর ইউপি নির্বাচন : ৯ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
স্টাফ রিপোর্টার :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সিমান্তবর্তী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ঘিরে পুরো উপজেলা জুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।
আগামী ২৮ নভেম্বর এ উপজেলার ৪টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরাসহ ইউপি চেয়ারম্যান পদে ৮জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ২২ জন ও সাধারণ পদে ৭০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবার মোট ভোট কেন্দ্র ৩৬টি। এর মধ্যে প্রার্থী না থাকায় ৬ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছেনা। বাকি ৩০ কেন্দ্রের ৯ টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে।
এবার মোট ৩৪ হাজার ২৯৫জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৩৩ জন এবং নারী ভোটার ১৬ হাজার ৭৬২ জন। এবারও দলীয় মনোনয়নের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছে নির্বাচনী মাঠে। তবে উপজেলার ৪ নং ক্যায়াংঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও অন্য ইউনিয়নগুলোতে চেয়ারম্যান-মেম্বার পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
প্রত্যেকটি স্থানীয় নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে নিজ দলের মনোনীত প্রার্থী দাড় করতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দলগুলোর নানা তৎপরতা দেখা যেত। কিন্তু এবারে মহালছড়ি উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোর ভুমিকা কিছুটা ব্যাতিক্রমী সংশ্লিষ্টদের দাবি।
এদিকে মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী (বর্তমান চেয়ারম্যান) রতন কুমার শীল বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি সাধারণ মানুষের সেবার জন্য। দল থেকে নির্দেশনা হচ্ছে সবার জন্য সমান অধিকার। দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিকসহ নানা কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থেকে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের সেবায় পাশে থাকতে। এখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশা করছি। পাহাড়ি-বাঙ্গালী সবাই মিলেমিশে নৌকার জন্য কাজ করছে এবং নির্বাচনে জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।’
৪ নং মাইসছড়ি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি (আনারস প্রতীক) বর্তমান চেয়ারম্যান সাজাই মারমা বলেন, ‘আমি বর্তমান চেয়ারম্যান, আমি ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ করি। টানা ৩০ বছর ধরে আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করে যাচ্ছি। আমি নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। তিনি অভিযোগ তরে আরও বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী আমার ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কয়েকটি এলাকায় তার লোকজন আমার ভোটারদের প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করেছে। আমার এখানে মাইসছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ উচ্চ বিদ্যালয়, লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলো নিয়ে আমি শঙ্কিত।’ সরকার দলীয় প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন লিডার তার বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে আমিই বিজয়ী হবো। নৌকাকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী একাট্টা হয়ে কাজ করছে।’
সূত্রে জানা গেছে, মহালছড়ি সদর ইউপির ৭ নং পাহাড়তলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮ নং দুরপর্যানাল নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। মাইসছড়ি ইউপির ২ নং মাইসছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩ নং পশ্চিম মানিকছড়ি, ৪নং চেয়ারম্যান পাড়া, ৫ নং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ উচ্চ বিদ্যালয়, ৭ নং লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, মুবাছড়ি ইউপির ২ নং ওয়ার্ড এবং ক্যায়াংঘাট ইউপির ১ নং ওয়ার্ড কেন্দ্রগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সুসমিকা চাকমা বলেন, ‘আগামী ২৮ নভেম্বর এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৬ নভেম্বর থেকে প্রচারণা শেষ হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে।’
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়দা আক্তার বলেন, ‘যত বাধাই আসুক নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য কোন ধরণের আপোষ নেই। কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ পেলে তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচনে উশ্চৃংখলতা সৃষ্টিকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।’
নির্বাচন কমিশন এর ৩য় ধাপে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মহালছড়িতে ৪ ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট হবে আগামী ২৮ নভেম্বর।