বৃহস্পতিবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » চুয়েটে “মুজিব মানে বাংলাদেশ” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
চুয়েটে “মুজিব মানে বাংলাদেশ” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, “১৯৭১ সালে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে আমরা শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মুক্তিসংগ্রামের সময় কম হলেও আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগই করেছি। বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি, প্রান্তিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মিত হচ্ছে, দৃশ্যমান ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি ও স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ এসব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডায়নামিক নেতৃত্বের ফসল। বঙ্গবন্ধুর মতোই বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সবরকমের অসাধ্য সাধন করে চলেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সম্মৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৌশলী সমাজকে প্রধানমন্ত্রীর সহায়ক শক্তি হিসেবে অবদান রাখতে হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন তরান্বিত হয় তা আবারও প্রমাণিত। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীরা এখনও তৎপর। স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করতে দেওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুর সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে আজ সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।” তিনি আজ ১৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় চুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত ৫০তম মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান। মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব নাহিদা সুলতানা এবং উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চুয়েটে মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রনজিৎ কুমার সূত্রধর, বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আজাদ হোসেন, প্রভোস্টগণের পক্ষে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা, স্টাফ ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আমিন মোহাম্মদ মুসা, স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান রাহাত ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের তাসফিয়া আমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভা শেষে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চুয়েটে মুজিববর্ষ উদযাপনের নিমিত্তে গঠিত প্রচার, প্রকাশনা ও মিডিয়া উপ-কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত মুজিববর্ষ স্মারক “মুজিব মানে বাংলাদেশ” শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এর আগে সকালে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ভোর ৬.২৫ ঘটিকায় একযোগে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর সূচনা হয়। পরে সকাল ৮.৪৫ ঘটিকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম চুয়েট পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রনজিৎ কুমার সূত্রধর ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে মহান মুক্তিযুদ্ধে চুয়েটের দুই শহিদ শিক্ষার্থী শহিদ মোহাম্মদ তারেক হুদা ও শহিদ মোহাম্মদ শাহ-এর কবর জেয়ারত করা হয়। এরপর বিকাল ৪.২০ মি. স্বাধীনতার সুবর্ণজয়স্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বিজয় দিবসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্কেটবল গ্রাউন্ড সংলগ্ন মুক্তমঞ্চ থেকে একযোগে চুয়েট পরিবার অংশগ্রহণ করে।
বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- শিক্ষক বনাম শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা বনাম কর্মচারীদের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ, ছাত্র-ছাত্রী ও শিশুকিশোরদের রচনা প্রতিযোগিতা, শিশুকিশোরদের দৌঁড় ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান, ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।
এছাড়া বাদ আছর কেন্দ্রীয় মসজিদে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।