রবিবার ● ৯ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » শৈলকুপায় নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৬
শৈলকুপায় নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৬
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ইউনিয়নে নির্বাচনি সহিংসতায় একের পর এক নিহত হচ্ছে। নিহতের পরিবার গুলো কিভাবে সন্তানদের নিয়ে বেচে থাকবে তা হতাশায় পড়েছে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের দলিলপুর মাঠে কল্লোল হোসেন (৩৫) নামের একজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ অস্ত্রধারীরা। তিনি উপজেলার বগুড়া গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে। এর আগে সকালে আবদুর রহিম নামে আরেক ব্যক্তি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনী সহিংসতায় তিনি আহত হয়েছিলেন। শনিবার নির্বাচনী সহিংসতায় মারা যাওয়া অখিল সরকার ইটভাটায় কাজ করতেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারংটিয়া ইউনিয়নের ভোটার নন তিনি। থাকতেন আশ্রয় প্রকল্পের শ্বশুরবাড়িতে। নিজ বাড়ি ঢাকার ধামরাই উপজেলায়। হারান আলীও থাকতেন কাঁচেরকোল বাজারের পাশে একই আশ্রয় প্রকল্পের। তাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন। গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি বাজারে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় অখিল সরকার ও হারান আলী গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই হারান আলী মারা যান। তিনিও কৃষি শ্রমিক ছিলেন। আর অখিল সরকার ৫ জানুয়ারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সারুটিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত আরেকজন জসিম উদ্দিন। তিনিও দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকতেন, ঘটনার দিন সকালে বাড়িতে এসেছিলেন। প্রতিপক্ষের লোকজন ভেবেছিলেন, নির্বাচনে ভোট দিতে বাড়িতে এসেছে, তাই তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। তাঁর বাড়ি ভাটবাড়িয়া গ্রামে। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। নির্বাচনী সহিংসতায় মারা যাওয়া হারান আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম জানান, তাঁর স্বামীও কোনো দিন রাজনীতি করেননি। রাজনীতি কী, তাও বুঝতেন না। শুধু নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় দেখতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
শৈলকুপায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নে নির্বাচনি সহিংসতায় আহত আব্দুর রহিম (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শনিবার ভোর রাতে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুর রহিম ওই ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত খোরশেদ শেখের ছেলে। নিহতের ছেলে বউ প্রেমা খাতুনের অভিযোগ, পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের আগে গত ২৩ ডিসেম্বর কাতলাগাড়ী পুরাতন বাজারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইছার টিপুর সমর্থকরা তাকে পিটিয়ে গুরতর আহত করেন। তাকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক কুষ্টিয়া মেডিক্যালে পাঠান। ছয়দিন আগে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
শৈলকুপায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবকে পিটিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের আওধা গ্রামে সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে কল্লোল হোসেন (৩২) নামের এক যুবককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কল্লোল ওই্ ইউনিয়নের বারইহুদা গ্রামের আকবর খন্দকারের ছেলে। নিহতের প্রতিবেশী রফিক হোসেন জানান, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বগুড়া গ্রামের আনু বিশ্বাস ও মোকা বিশ্বাসের সমর্থকদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার দুপুরে মাঠে পেঁয়াজ লাগানো অবস্থায় আনু বিশ্বাসের সমর্থক কল্লোল হোসেনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষরা। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক কল্লোলকে মৃত ঘোষণা করেন। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা:শাহনেওয়াজ ইবনে কাশেম বলেন, ছেলেটি হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। শৈলকুপা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, একটি ঘটনা ঘটেছে। এর পর থেকে এলাকায় উতেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
শৈলকুপা পৌর ভবনে হামলা ভাংচুর, মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ, আহত-১
ঝিনাইদহ :: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ঘটনা ঘটেছে। এসময় আগুন ধরিয়ে দেওয়া একটি মোটর সাইকেলে। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভা এলাকায় অধিপত্য বিস্তার নিয়ে পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান ইকুর সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার বিকেলে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের সজ্জিত হয়ে পৌর ভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পৌরসভার ভিতরে থাকায় একটি মোটর সাইকেল। কুপিয়ে আহত করা হয় মহিদুল নামের পৌরসভার এক কর্মচারীকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহত মহিদুলকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, আমি তো ঢাকায় আছি। শুনলাম পৌরসভার হামলা করা হয়েছে। ইকু শিকদারের নেতৃত্বে পৌরসভার হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ওয়াহিদুজ্জামান ইকু বলেন, পৌরসভায় আমার কোন লোকজন হামলা চালায়নি। পৌর মেয়রের নিজেদের লোকজন মারামারি করে আমার উপর দোষারোপ করতে চাচ্ছে। শৈলকুপা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। পৌরসভার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা মাঠে আছি।
র্যাব-৬’র অভিযানে বগুড়া থেকে অপহৃত ভিকটিম ঝিনাইদহে উদ্ধার, অপহরনকারীকে গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ শহর থেকে এক অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৬। এ সময় অপহরনকারী হান্নানকে গ্রেফতার করা। র্যাব-৬ সূত্রে জানা গেছে, অপহরনকারী পলাতক আসামী ভিকটিমকে নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার ধোপাঘাটা এলাকায় গোপনীয়ভাবে অবস্থান করছে। এরুপ সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তথ্যের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যে আভিযানিক দলটি উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে অপহরনকারী পলাতক আসামী ১। মো: হান্নান মিয়া(৫৬), পিতা-আব্দুল জব্বার, সাং-পান্নাতপুর, থানা-শাহাজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জকে গ্রেফতার পূর্বক ভিকটিম’কে উদ্ধার করে। র্যাব-৬ আরো জানায়, অপহরনকারী পলাতক আসামী ভিকটিম এর মামার বাড়ীতে বাসা ভাড়া থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে বিভিন্ন রকম লোভ লালসা এবং প্রলোভন দেখিয়ে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে তাকে অপহরন করার পরিকল্পনা করে। অতঃপর গত ২৬/১১/২০২১ ইং তারিখে ভিকটিমকে অপহরন করে বগুড়া হতে ঝিনাইদহ সদর থানার ধোপাঘাটা এলাকায় অবস্থান করে। সেখানে ভিকটিমকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে, হত্যা এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত তাকে বন্দী করে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার ধোপাঘাটা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে স্ত্রীর পরিচয়ে গোপনীয়ভাবে অবস্থান করছিলো। ভিকটিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অপহরনকারী ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনসহ নজরবন্দী করে রাখত। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার মামলা নং-১২ তারিখ: ০৮/০১/২০২২ ইং ধারা-৭ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ০১জন । পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত অপহরনকারী এবং ভিকটিমকে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।