শুক্রবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খেলা » ৮০ বছরের পুরোনো ক্লাবের লীজ বাতিল, হতাশায় গাইবান্ধার ক্রীড়াঙ্গন
৮০ বছরের পুরোনো ক্লাবের লীজ বাতিল, হতাশায় গাইবান্ধার ক্রীড়াঙ্গন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: ৮০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের লীজ বাতিল করায় গাইবান্ধার ক্রীড়াঙ্গন হতাশ হয়ে পরেছে। এক সময়ের নামীদামী ক্লাবগুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল ইয়ং স্পোটিং এ্যাসোসিয়েশন (সিওয়াইএসএ) ক্লাব গাইবান্ধা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নিবন্ধিত ৩২টি ক্লাবের মধ্যে প্রথম সারির একটি।
গাইবান্ধার শহরতলীর সার্কুলার রোডে অবস্থিত এই ক্লাবটির বকেয়া শোধ করতে না পারার দায়ে লীজ বাতিল করা হয়েছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের খেলাধুলা বিস্তারে ভূমিকা রাখা এই ক্লাব বন্ধ হওয়ার উপক্রম প্রায়।
সিওয়াইএসএ ক্লাব ৪৭ এর দেশ ভাগেরও আগে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি বাহান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধ অনেক কিছুরই স্বাক্ষী। ১৯৪২ সালে স্থাপিত প্রায় ৮০ বছরের পুরোনো এই ক্লাবটি জন্ম দিয়েছে মাঠ কাঁপানো অনেক ফুটবল খেলোয়ার। সময়ের পরিক্রমায় ক্লাবটি নিশ্চিন্ন হতে বসেছে। জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন নিবেদন করেও শেষ রক্ষা হয়নি। ভবনটি লীজ দেয়া হয় ব্যাবসায়ীদের হাতে।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা যায়, পৃষ্ট পোষকতার অভাবে ধুকতে থাকা সিওয়াইএসএ ক্লাবের লীজ বাতিল করার কারণ বকেয়া পরিশোধ না করা।
এব্যপারে সিওয়াইএসএ ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকার বলেন, ক্লাবের কিছু টাকা বকেয়া পরায় ক্লাবের পক্ষ থেকে দফায় দফায় আবেদনও করেছি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৫ হাজার টাকা জমাও দিলেও পরে জানতে পারি ওই টাকাটাও জমা হয়নি। তবে ক্লাবের লীজ বাতিল করে ব্যাবসায়ীদের নামে দেয়াটা সমিচিন হয়নি বলে তিনি জানান।
গাইবান্ধা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জিএম চৌধুরী মিঠু বলেন, মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমাদের আগামী প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোনিবেশ রাখতে হবে। সিওয়াইএসএ ক্লাব পুরাতন একটা সংগঠন। এই ক্লাবের লীজ যদি বাতিল করে দেওয়া হয় তাহলে মনে করতে হবে আশার আলোগুলো ধীরে ধীরে নিভিয়ে যাচ্ছে।
ক্রীড়াঙ্গনকে বাঁচিয়ে রাখতে পুণরায় ক্লাবকে লীজ দেয়ার দাবি করে নাগরিক কমিটি গাইবান্ধা’র আহবায়ক ও জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, ক্রীড়াসংগঠন গুলো যারা রয়েছে তাদের এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। ক্লাবগুলো কীভাবে পরিচালনা করলে আবার পুনরুজ্জীবিত করে তাদের কাজ কারতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
এবিষয়ে গাইবান্ধা জেলা ক্রীড়া অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, খেলাধুলা সচল রাখতে ক্লাবগুলোকে জীবীত রাখা অত্যাবশ্যকীয় জরুরী। যে কারণে লীজ বাতিল হয়েছে তা দুঃখজনক। তবে স্বার্থনেশী একটি মহল আছে তারা চাইছিলো যে ওই ক্লাবের জায়গা নিজের নামে করে নেওয়ার। যার ফলে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ধ্বংশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় এব্যাপারে একটু সদয় হলে ক্লাবটিকে আবার পুনরুজ্জীবিত করে গাইবান্ধার ক্রীড়াঙ্গন গতিশীল করা সম্ভব বলে জানান তিনি।