বৃহস্পতিবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রুমায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩ সন্ত্রাসী নিহত
রুমায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩ সন্ত্রাসী নিহত
রুমা (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: বান্দরবানে রুমায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধে ১ সেনা কর্মকর্তা ও ৩ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। রুমা সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বথি পাড়ায় গত বুধবার ২ ফেব্রুয়ারী রাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্রধারীদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। রুমা সদর হতে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দুরত্বে পূর্ব - উত্তরে রুমা সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বথি পাড়া (যিশুরাম পাড়া)’ র অবস্থান। দুই পক্ষের চারজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। এতে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান নিহত হন।
সেনা সূত্রে মতে, নিহত তিনজন অস্ত্রধারীদের মধ্যে বিলাইছড়ি উপজেলা বাসিন্দা জয় চাকমা, বরকলের ঝিলিক চাকমা ও রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের নিয়াক্ষ্যং পাড়ার বাসিন্দা চমংপ্রু মারমা বলে প্রাথমিকভাবে তাদের পরিচয় এর তথ্য পাওয়া গেছে।
রুমা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন গুলাগুলির ঘটনায় মারা যাওয়া তিনজনের লাশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় রুমা থানা নিয়ে আসা হয়। লাশ তিনটি ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদরে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহতদের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে ওসি আবুল কাসেম বলেন এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে এঘটনার সময় একটি সাবমেশিন গান ও গুলি উদ্ধার করা হয়। আহত সৈনিক ফিরোজকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে, সেনাবাহিনীর বান্দরবানের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড ও রিজিয়ন সদর দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী একটি দল বথিপাড়া এলাকায় অবস্থান করছে এমন গোপন তথ্য পাওয়া যায়। এ সংবাদের ভিত্তিতে রাইংক্ষ্যং লেক ক্যাম্পের জ্যেষ্ঠ ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় সেনাবাহিনীও পাল্টাগুলি চালালে ঘটনাস্থলে তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। অন্য সাত থেকে আটজন সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর আক্রমণে টিকতে না পেরে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে জ্যেষ্ঠ ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সৈনিক ফিরোজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। ফিরোজকে আজ বৃহস্পতিবার ৩ ফেব্রুয়ারী সকালে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া ১টি সাবমেশিনগান (এসএমজি), ২৭৫টি গুলি, ৩টি ম্যাগাজিন, ৩টি গাদাবন্দুক, গাদাবন্দুকের ৫টি গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম ও চাঁদাবাজির ৫২ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী স্থানীয় লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) মূল দলের সদস্য। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী সব অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেওয়ার শর্ত থাকলেও পিসিজেএসএস সেই শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তির পরবর্তী সময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লালন করছে। অথচ পিসিজেএসএসের প্রধান সন্তু লারমা সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিচুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও চুক্তি বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করেন। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম, চাঁদাবাজিসহ দুষ্কৃতিমূলক কাজ পরিচালনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এঘটনা ব্যাপারে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) তাদের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।