শিরোনাম:
●   মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন ●   মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ●   আল ফালাহ ইসলামি একাডেমীর সবক প্রদান অনুষ্ঠান ●   ১১ দফা অবহিতকরণে আত্রাইয়ে আলোচনা সভা ●   পার্বতীপুর রেলওয়ে ইর্য়াডের আম গাছে যুবকের আত্মহত্যা ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   কাউখালী তাহেরিয়া রশিদা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সভা ●   পাকুন্দিয়ায় ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ গঠিত ●   বৈরী আবহাওয়ায় ও শীতের তীব্রতায় বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা ●   কোন হটকারিতায় গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা ●   তরফভাইখাঁ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ●   লংগদু এস এস সি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন ●   ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব ●   হালদা থেকে বিপন্ন গাঙ্গেয় প্রজাতির মৃত ডলফিন উদ্ধার ●   খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটকবাহী বাস উল্টে আহত-২০ ●   পানছড়িতে লোগাং জোন এর অনুদান সামগ্রী প্রদান ●   আত্রাইয়ে কুলি-বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ ●   চুয়েটে স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় কনফারেন্স শুরু ●   বিজিবির অভিযানে খাগড়াছড়িতে ১২ অনুপ্রবেশকারী আটক ●   ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত ●   কুষ্টিয়ায় বালুঘাট দখল নিতে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ●   রাউজানে বিকাশ প্রতারকের ফাঁদে নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ●   যোবায়ের-সাদপন্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ইজতেমা মাঠ : নিহত ৩ ●   মিরসরাইয়ে মধ্য তালবাড়ীয়া স্পোর্টিং ক্লাবের কমিটি গঠন ●   জিয়া কিংবা শেখ মুজিব নয়; জনগণই মুক্তিযুদ্ধের মূল নায়ক : টিপু ●   নবীগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় কলেজ ছাত্রের প্রাণহানি ●   জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এর নেতৃত্বে থাকবেন ড. ইউনূস ও আলী রীয়াজ ●   রেডব্রিজ কমিউনিটি ট্রাস্ট ইউকে বিজয় দিবস উদযাপন
রাঙামাটি, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শনিবার ● ২৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » স্বপ্নের সেতু তিন কোটি মানুষের ভাগ্য বদলাবে
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » স্বপ্নের সেতু তিন কোটি মানুষের ভাগ্য বদলাবে
শনিবার ● ২৮ মে ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

স্বপ্নের সেতু তিন কোটি মানুষের ভাগ্য বদলাবে

--- এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাঙালি জাতির বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে আরও এগিয়ে যাবে।দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ২১টি জেলা হচ্ছে- খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা। বরিশাল বিভাগের বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি এবং ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী।পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বাংলাদেশজুড়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। তখন পায়রা ও মংলাবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে শুধু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই আমূল বদলে যাবে।।বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। । এই সেতু চালু হলে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাবে। যার মাধ্যমে সরাসরি সুবিধার কারণে পরিবর্তন আসবে দেশের তিন কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে।চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই উঠে আসবে পদ্মা সেতু নির্মাণের খরচ। এই সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিক উৎপাদন, সেবা, পর্যটন, শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে যে ইতিবাচক গতি তৈরি হবে, প্রথম বছরে তার আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ।

টাকার অঙ্কে প্রাপ্তির পরিমাণ হবে ৩৩ হাজার ৫৫৬ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে বেশি।পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ‘পদ্মা সেতু সার্বিক নির্মাণব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়। চালুর আগে এ ব্যয় আর বাড়বে না।’

পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তার মূল্যায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও সরকার।

সরকারের সম্ভাব্যতা জরিপে বলা হয়, সেতুটি নির্মিত হলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে ওই অঞ্চলের মানুষের আয় বাড়বে এক দশমিক চার শতাংশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ৭ লাখ ৪৩ হাজার।

জাইকার সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে, জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ২ শতাংশ। এতে আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ২১ হাজার ৩০০ যানবাহন চলাচল করবে, ২০২৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে হবে ৪১ হাজার ৬০০।

আর বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষায় বলা হয়, পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে ১ শতাংশ হারে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ড. আতিউর রহমান বিশাল ব্যয়ের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলারে পরিশোধ করতে অগ্রণী ব্যাংককে দায়িত্ব দেন। এখনও এর তত্ত্বাবধান করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পদ্মা সেতুর নাম করার প্রস্তাবকে না করে দিলেন সংসদ নেতা নিজেই। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গাজীপুর-৩ মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এই প্রস্তাব দেন। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু হওয়াই উচিত। এছাড়া আর কিছু হতে পারে না। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাত নেড়ে ‘না’ ‘না’ করতে দেখা যায়। আজ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

আমি জানি মাননীয় নেত্রী আপনি উদার। আপনি মহানুভবতার মূর্ত প্রতীক। প্রেরণা কোনদিন প্রকাশ্যে আসে না প্রেরণা ভেতরে লালন করে। আর অক্সিজেন নিজেকে জড়িয়ে অপরকে আলোকিত করে। আপনি নিজের নামেই পদ্মা সেতু করবেন। ইতিমধ্যে আপনি না করেছেন কিন্তু আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন এসব কথা বলেন।

একনজরে ‘পদ্মা সেতু’

ধরণ: দ্বিতলবিশিষ্ট
দৈর্ঘ্য: ৬.১৫ কিলোমিটার
উপাদান: কংক্রিট ও স্টিল
সংশোধিত ব্যয়: ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা
পানির স্তর থেকে উচ্চতা: ৬০ ফুট
পাইলিং গভীরতা: ৩৮৩ ফুট
মোট পিলার: ৪২টি।
মোট স্প্যান: ৪১টি
সুবিধা: গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগসহ পরিবহন ব্যবস্থা
ভাগ্য বদলাবে তিন কোটি মানুষের। সুফল ভোগ করবে সারা দেশ। দূরত্ব কমবে ১০০ কি.মি.। আঞ্চলিক বাণিজ্য সমৃদ্ধ হবে। বাড়বে উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দক্ষিণ জনপদের মানুষের স্বপ্নের এ সেতুর কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই তারিখ ঘোষণা করে আগামী মাসের (জুন) শেষভাগে এটি উদ্বোধন হবে। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, মূল সেতুর প্রায় ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। নদী শাসনের কাজ ৯২ শতাংশ ও সেতুর কার্পেটিংয়ের ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ বা তিন কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি এই সেতুর মাধ্যমে উপকৃত হবে। এতে বলা হয়, এই সেতুর মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য সমৃদ্ধ হবে, পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন হবে এবং উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত হবে। দেশের ওই অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব গড়ে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কমবে। অপর এক সমীক্ষায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) নির্মাণের ফলে দেশের আঞ্চলিক ও জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে লক্ষণীয় অগ্রগতি হবে। এই সেতু চালু হলে মানুষ ও পণ্য পরিবহনের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি ও আমদানি ব্যয় হ্রাস পাবে।

এডিবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সেতুর মাধ্যমে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রসারের লক্ষ্যে পুঁজির প্রবাহ বাড়বে, পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জন্য অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া স্থানীয় জনগণ উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য খুব সহজেই রাজধানী ঢাকায় আসতে পারবে।

এডিবির মতে, এই সেতুর ফলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং আঞ্চলিক জিডিপি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

ভারতের ‘ইকোনমিক টাইমস’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এই সেতুটি (পদ্মা সেতু) বাংলাদেশের জন্য গৌরবের এবং অর্থনীতির জন্য যুগান্তকারী ঘটনা। নিউইয়র্কভিত্তিক আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসএমই)-এর মতে, এই সেতু রাজধানী ঢাকা ও তুলনামূলকভাবে উন্নত অন্যান্য এলাকার সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রূপান্তর ঘটাবে। এতে আরো বলা হয়, ঢাকা-কলকাতা (ভারত) সংযোগ সড়কে অবস্থিত এই সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ে এবং ইউরো-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক সিস্টেমের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হবে।

এ বিষয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শরীয়তপুরের সাবেক এমপি বিএম মোজাম্মেল বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় ‘শিল্প বিপ্লব’ ঘটবে। তিনি বলেন, ‘২০৫ একর জমি নিয়ে এই অঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে। এই অঞ্চলে ইপিজেড আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সবই হচ্ছে পদ্মা সেতুকে সামনে রেখে। খান জাহান আলী বিমানবন্দর এখন পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর হতে যাচ্ছে। রেলের কাজও চলছে পুরোদমে। এর সঙ্গে চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ এবং পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চল হবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল।’
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুততম হবে। এতে সময় ও যাতায়াত খরচ কমবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ অঞ্চল থেকে দেশের দূর-দূরান্তে পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীরাও দারুণভাবে উপকৃত হবেন। এতে আরো বলা হয়, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে জ্বালানির চাহিদা নিশ্চিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যুগান্তকারী উন্নয়ন হবে। এ অঞ্চলের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের গতি আসবে, আয় বৈষম্যও কমে যাবে।’ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলার গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহন করে মংলা বন্দরের মাধ্যমে রফতানি ও আমদানি করতে উৎসাহিত হবেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর পায়রা বন্দরের গুরুত্বও বাড়বে। প্রয়োজনীয় আধুনিকায়ন করা হলে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এই বন্দরও এক বৃহত্তম বন্দরে রূপান্তরিত হবে। এমনকি ভুটান, পূর্ব নেপাল ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর জন্য পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর হিসাবে ভূমিকা রাখতে পারবে। খুলনা চেম্বারের তথ্য অনুযায়ী, দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিমায়িত মৎস্য ও পাট শিল্প যার অধিকাংশ খুলনা থেকে রফতানির মাধ্যমে আয় হয়ে থাকে। পদ্মা সেতু হলে এই আয় আরো বাড়বে। পাশাপাশি কমে যাবে পণ্য পরিবহনের খরচও। একইভাবে পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন, সাধারণ মানুষের যাতায়াতসহ পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গেও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচিত হবে। অবশ্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়নের সুফল পেতে এখনই গ্যাস-বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, পদ্মা সেতু কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে দেবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হলে দেশে পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। ভবিষ্যতে এই সেতু দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ, বাণিজ্য, পর্যটনসহ অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে পারবে।’ ‘পদ্মা সেতুর সড়ক ও রেলপথ এই দুয়ের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, রফতানি বাড়াতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি দেশের ভেতরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আরো বাড়বে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘স্বপ্নের এই সেতুকে মাথায় রেখে মানুষ নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে। সামনে আরো নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর চালু হতে যাচ্ছে। মোংলা বন্দরেরও প্রসার ঘটছে, ইকোনমিক জোন হচ্ছে। এ কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়নের সুফল পেতে এখনই গ্যাস-বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোর ওপর জোর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোংলা বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়বে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা আমূল পরিবর্তন হবে। বেনাপোল, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বাড়বে।’

ড. আতিউর আরো বলেন, ‘পদ্মা সেতু হচ্ছে, এর সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস আর বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো গেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হবে শিল্পের নগরী। কয়েকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এই অঞ্চলে ইতিমধ্যেই গড়ে উঠেছে। নতুন করে জুটমিল গড়ে উঠছে। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা হয়েছে, ইপিজেড করা হয়েছে। পায়রা বন্দরে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে।পদ্মা সেতু চালু হলে এই অঞ্চলে কি ধরণের পরিবর্তন ঘটবে, এমন প্রশ্নে বাগেরহাট বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকি এসবকথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে বাগেরহাটের মানুষের ঢাকা যেতে হলে ফেরি, স্পিড বোট বা লঞ্চে পদ্মা নদী পার হয়ে যেতে হয়। এর ফলে বাগেরহাটথেকে ঢাকা যেতে এবং ঢাকা থেকে বাগেরহাট যেতে অনেক বেশি সময় লাগে। শুধু ঢাকা নয়, খুলনা-বরিশাল ছাড়া দেশের বেশিরভাগ বড় শহরে যেতে পদ্মানদী পাড় হতে হয়। পদ্মা পার হওয়ার সময়, ঘাটে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। সেতু চালু হলে এই বিড়ম্বনার হাত থেকে যাত্রীরা যেমন বাঁচবে, তেমনি সময়ও বাঁচবে আমদের।

সেই সাথে পরিবহন সেক্টরে এই অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়বে কয়েকগুন। ফেরী পারাপার ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তার জন্য অনেক সময় ভাল পরিবহন আসত না।সেতু চালু হলে বাগেরহাটে ভাল ভাল পরিবহন আসবে বলে দাবি করেন তিনি।

তালুকদার বাকি বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় যাব। প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এর ফলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এই অঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন পন্যের সঠিক দাম পারে কৃষক। কারণ সেতু হলে বাগেরহাটে উৎপাদিত সবজিসহ অন্যান্যকাঁচামাল পূর্বের থেকে কম সময় ও কম পরিবহন খরচে ঢাকায় যেতে পারবে। সব মিলিয়ে আমি আশাকরি পদ্মা সেতু আমাদের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ।
বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমার একটি কারখানা ছিলো। পদ্মা সেতু হচ্ছে দেখে চট্টগ্রামের ওই সম্পত্তি বিক্রি করে বাগেরহাটে শিল্প গড়েছি। আমার মতো অনেকেই পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা দেখে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাতেই নতুন নতুন শিল্প গড়ে তুলছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সুফল পেতে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। এই সময়ে ভ্যাট, ট্যাক্স আরোপের নামে অহেতুক হয়রানি করা না হলে ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলকে বেছে নেবে। ইতোমধ্যে ফরিদপুর, মাদারীপুর এবং খুলনার খালিশপুরের অর্থনৈতিক জোনের সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেছে। হয়ত আগামী দশ বছরের মধ্যে এই অঞ্চল হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী।

সুন্দরবনে স্যাটেলাইট যুক্ত ১২ ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপ অবমুক্ত
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের কালিরচরের পার্শ্ববর্তী ছেদনখালী খালের চরে মহাবিপন্ন প্রজাতির স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার যুক্ত ১২টি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ১০টি এবং ভারত থেকে চলে আসা খুলনা-পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা দুটি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপসহ মোট ১২টিকে সুন্দরবনের ছেদনখালী খালের চরে অবমুক্ত করা হয়েছে।

আজাদ কবির আরও বলেন, একটা সময় ছিল যখন সুন্দরবনে এ ধরনের ঈষৎ লবণযুক্ত পানির কচ্ছপ ছিল। বর্তমানে এ ধরনের কচ্ছপ আর দেখা যায় না। সুন্দরবনের কোথাও এ ধরনের কচ্ছপ আছে কি না তা খুঁজতে এবং কচ্ছপের চলাফেরা জানার জন্য এই ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে।

এ সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু’এর কিউরেটর টনিসহ বন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মোরেলগঞ্জে মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

বাগেরহাট :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী পালন উপলক্ষে বনার্ঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা ও কেক কাটাু অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দলীয় কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি সম্বলিত একটি র্যালী বের হয়। পরে পৌর পার্কে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা রাখেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাগেরহাট-৪,আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন। উপজেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মো. মুনসুর আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএমদাদুল হক, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশীদ, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ভাইস চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মোজাম, থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সাইদুর রহমানসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাগেরহাট জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুর সবুর। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.আল আমিন শেখ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পৌর পার্কে আলোচনা সভায় ১৬ ইউনিয়নের মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে উঠে পৌর পার্ক।





খুলনা বিভাগ এর আরও খবর

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন
কুষ্টিয়ায় বালুঘাট দখল নিতে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কুষ্টিয়ায় বালুঘাট দখল নিতে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা
কুষ্টিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী শুভ অস্ত্রসহ গ্রেফতার কুষ্টিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী শুভ অস্ত্রসহ গ্রেফতার
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কারাগারে কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কারাগারে
কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশকে মারধর ঘটনায় দুই মহিলা আটক কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশকে মারধর ঘটনায় দুই মহিলা আটক
কুষ্টিয়ায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক কুষ্টিয়ায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক
বর্ণিল আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম দিবস পালিত বর্ণিল আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম দিবস পালিত
খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার গাছিরা খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার গাছিরা
কুষ্টিয়ায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় ধরা খেল শিক্ষক হেলাল ১১ লাখে দফারফা কুষ্টিয়ায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় ধরা খেল শিক্ষক হেলাল ১১ লাখে দফারফা
চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার

আর্কাইভ