বৃহস্পতিবার ● ২ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন : সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ দু’জনকে ঢাকায় রেফার্ড
ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন : সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ দু’জনকে ঢাকায় রেফার্ড
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে সতন্ত্র মেয়র ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহিদী হিজল ও তার বড় ভাই আবু শাহরিয়ার জাহেদী পিপুল সহ আহত হয়েছেন অন্তত ৭জন। আহতদের মধ্যে সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও তার বড় ভাইসহ চারজনের অবস্থা গুরুতর। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। ভাংচুর করা হয়েছে সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর একটি জীপ। ১লা জুন রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের ধুপাঘাটা নতুন ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর জেলা শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। হামলা সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সুত্র থেকে জানানো হয়েছে। সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিজল অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে জনসংযোগ করে গোবিন্দপুর এলাকায় আসা মাত্র আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের সর্মথকরা হঠাৎ করে হামলা শুরু করে। এ সময় ইাটপাটকেল নিক্ষেপসহ বেদম ভাবে মারপিট করা হয় তাদের। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হন তিনি। একই সময় বড় ভাই পিপুলকে বেদম ভাবে প্রহার করতে থাকে হামলা কারিরা। তিনি আরো অভিযোগ করেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সর্মথকদের হামলায় আরো অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। নির্বাচনে পরাজয় ঠেকাতে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটনানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নিজস্ব লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষনের কথা স্বীকার করেন মেয়র প্রার্থী হিজল। এ ঘটনার বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি বলেন, এক পক্ষে ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সহ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি অভিযোগ করেন সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর লোকজন আওয়ামীলীগের সর্মথকদের ওপর আগে চাড়াও হয়েছে এবং সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর থেকে পিস্তলের গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। গুলি বর্ষন করা নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরো অভিযোগ করেন, পরবর্তী সময়ে জেলা শহরের পায়রা চত্তর এলাকায় পুলিশ আওয়ামীলীগ নেতা কর্মিদের ওপর বেধড়ক লাঠি পেটা করেছে। এ ধরনের ঘটনার নিন্দা জানান তিনি। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোঃ মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতির অভিযোগে বিষয়ে তিনি বলেন, সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলাকারিরা সেখানে অবস্থান করছে এবং রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায় এবং দুইজনকে আটকের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা চালায় তারা। এতে করে উপস্থিত জনতার ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ মৃদু লাঠি চার্জ করেছে বলে জানান তিনি। সেই সাথে জেলা শহরে পুলিশের টহল জোরদার করার কথাও জানান এসপি। এদিকে সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে গোটা পৌর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পাড়া মহল্লায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছে চারজন। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মোঃ আব্দুল খালেক, সতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুৃম শাহারিয়ার জাহিদী হিজল, মিজানুর রহমান মাসুম এবং ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
ধর্ষন মামলায় কারাগারে আ’লীগের সাবেক সভাপতি ফরিদ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বহিস্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খন্দকার ফারুকুুজ্জামান ফরিদকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বুধবার দুপুরে একটি ধর্ষন মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে হাজির হলে বিচারিক আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলায় তার গাড়ি চালক নজরুল ইসলামকেও আসামী করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল চম্পা খাতুন নামে এক নারী ঝিনাইদহ সদর থানায় নিজে বাদি হয়ে চেয়ারম্যান ফরিদ ও তার গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা করেন। ১৫ এপ্রিল ওই নারী একজন বিচারপ্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যানের দারস্থ হলে ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার নরহরিদ্রা গ্রামে ধর্ষন করেন। ধর্ষন মামলা দায়েরের পর উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন চেয়ারম্যান ফরিদ। ওই নারী বুধবার গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিচার চাইতে গিয়ে ফরিদ চেয়ারম্যানের লালসার শিকার হন তিনি। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন কয়েক মাস আগে শহরতলীর কোরাপাড়া বটতলার আমির হোসেনের ছেলে মহসিনের সাথে ওই নারীর বিয়ে হয়। কয়েক মাস স্বামী স্ত্রীর হিসাবে বসবাস করলেও পরে বিয়ে অস্বীকার করে মহসিন। বিষয়টি সমাধানের জন্য এক পর্যায়ে ওই নারী তার পুর্ব পরিচিত চেয়ারম্যান ফরিদের সাথে আলাপ করেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যান গত ১৫ এপ্রিল নরহরিদ্রা গ্রামে তার বাড়িতে ডেকে নেন। ঐ নারীর ভাষ্যমতে ঘটনার দিন বিকালে তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়িতে পৌছালে তাকে দুইতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান এবং নেশা জাতীয় কিছু সেবন করিয়ে ফরিদ ও তার গাড়ীচালক নজরুল মিলে পালাক্রমে ধর্ষন করে। অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন চেয়ারম্যান তাকে ধর্ষণ ছাড়াও শারিরীক ভাবে নির্যাতন করেন। ধর্ষনের পর চেয়ারম্যান ফরিদ এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করেন। ধর্ষন শেষে চেয়ারম্যানের গাড়ীচালককে দিয়ে চম্পাকে বিজয়পুর বাজারে রেখে যান। ১৬ এপ্রিল শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা হওয়ার পর থেকেই বলে আসছেন বিষয়টি তার বিরুদ্ধে সম্পুর্ণ ষড়যন্ত্রের অংশ। ওই নারী তার কাছে বিচারের জন্য যখন আসেন তখন তার কাছে অন্তত ৫০ জন ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার ফেসবুকে স্ট্যটাস লিখে দাবী করেন তার বিরুদ্ধে ওই নারীকে দিয়ে মামলা সাজিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন।
কোটচাঁদপুরে গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামে তাসলিমা খাতুন (৪৫) নামে এক গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতে বাড়ির পাশে একটি নেপিয়ার ঘাসের মাঠে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তাসলিমা খাতুন লক্ষিপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আলমের স্ত্রী বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে রওনা হয়। হত্যার কারণ জানা যায়নি। কোটচাঁদপুরের দোড়া ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বর) সবুজ জোয়ারদার জানান, রাতে কে বা কারা তাকে হত্যা করে একটি ঘাসের ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোটচাঁদপুর থানার এসআই মাসুদ রানা রাত সোয়া ১১টার দিকে জানান, সবেমাত্র আমরা লাশের কাছে পৌঠছালাম। তদন্ত করে হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুল ইসলাম জানান, লক্ষিপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় এক নারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌচেছে। তদন্তের পর হত্যার মোটিভ ও ক্লু জানা যাবে।