বৃহস্পতিবার ● ৭ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » ঈদ উপলক্ষে শিক্ষাপল্লী পার্কে সংযোজন হতে যাচ্ছে দুটি রাইডার
ঈদ উপলক্ষে শিক্ষাপল্লী পার্কে সংযোজন হতে যাচ্ছে দুটি রাইডার
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: পবিত্র ঈদুল আযহার পূর্বেই শুক্রবার কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগরে প্রতিষ্ঠিত আলাউদ্দিন আহমেদ শিক্ষা পল্লী পার্কে প্যারাট্রুপার রাইড ও ফেয়ারি হুইল রাইড নামে আরো দুটি নতুন রাইডার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে চলেছে। পবিত্র ঈদুল আযহার পূর্বেই উক্ত রাইডার দুটির যাত্রা শুরু করবে।
সাংস্কৃতিক রাজধানী কুষ্টিয়ায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুঠিবাড়ি, মরমী সাধক ফকির লালন শাহ মাজার, বাংলার অন্যতম সাহিত্যিক মীর মোশারফ হোসেনের বাস্তভিটা, ব্রিটিশ আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাঘা যতীনের স্মৃতি, কাঙ্গাল হরিনাথ মিউজিয়াম, কাজী মিয়াজান সহ অসংখ্য গুণীজনের বসবাস এই কুষ্টিয়ার মাটিতে। যে কারণে প্রতিবছরই কয়েক লক্ষ পর্যটক আসে দেশ-বিদেশ থেকে।
এরই মাঝে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের নজর কেড়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুরের আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত আলাউদ্দিন আহমেদ শিক্ষা পল্লী পার্কটির উপর। দৃষ্টিনন্দন এই পার্কটি কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগর থেকে শিলাইদাহ কুঠিবাড়ি যেতেই চোখে পড়বে। মূলত: আলাউদ্দিন আহমেদের বাড়ির উত্তর পাশেই অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন এই পার্কটি।
২০১৫ সালে কুমারখালীর কৃতি সন্তান, হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান, আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, শিক্ষানুরাগী, আলাউদ্দিন নগরের রূপকার ও শিক্ষাপল্লীর জনক দানবীর ড. আলাউদ্দিন আহমেদ এই পার্কটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। এখনও পার্কটির নির্মাণ কাজ চলছে। পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য বেশ কয়েক বছর আগেই খুলে দেওয়া হয়েছে। পার্কটি খুলে দেওয়ার সাথে সাথেই প্রতিদিনই পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ ঘুরতে আসছে শত শত দর্শনার্থী এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের জন্য পার্কটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া ও কুষ্টিয়ার বাইরে থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়ি, ফকির লালন শাহের মাজারে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা এখানেও ভিড় জমাচ্ছে। গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা থাকায় দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের বাড়তি বেগ পেতে হচ্ছে না। পার্কটির মধ্যে ঢুকতেই চোখে পড়বে জাতীয় মানের একটি সৌন্দর্যপূর্ণ গেট। তার আগে চোখে পড়বে গেটের বাইরে বাউন্ডারি প্রাচীরের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কিছু স্মৃতি। ভেতরে ঢুকে আরো চোখে পড়বে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মনীষীদের বাণী। বাউন্ডারি ঘেরা বিশাল বড় এরিয়া জুড়ে চোখে পড়বে, বাম্পার ক্যার, টুইস্ট রাইটার, সুইম চেয়ার রাইটার, পাইরেট শিপ, বুলেট ট্রেন, দৃষ্টিনন্দন পুকুরের মাঝে বিভিন্ন প্রজাতির হরেক রঙের মাছ, নৌকা, স্প্রীট বোর্ড, সাবলীল পরিবেশে পিকনিক স্পট সহ বিভিন্ন রকমের ড্রাইভ। টুরিস্টদের থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে কটেজ। অন্যদিকে পার্কটির দক্ষিণ সংলগ্ন মনোমুগ্ধকর চতুর্থ তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ভবনটি পরিপূর্ণতা লাভ করলে পার্টি আরো দর্শনীয় হয়ে উঠবে বলে ধারণা করছে পর্যটকরা।
এছাড়াও পার্কের ভিতরে তৈরি করা হয়েছে বিয়ে, সুন্নতে খাতনা, জন্মদিন সহ নানা অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি সেন্টার। অফিস সেমিনারের জন্য উন্নত মানের রুম তৈরি করা হয়েছে। সরোজমিনে দর্শনার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, দানবির আলহাজ আলাউদ্দিন সাহেব তিনি যেমন শিক্ষানুরাগী তেমনি ভ্রমণপিপাসু ও বটে।
এ বিষয়ে তোর আলাউদ্দিন আহমেদ’র এর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, করোনা কালীন সময়ে কাজের অগ্রগতি কিছুটা থমকে গিয়েছিল যে কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজটির সমাপ্ত করতে পারি নাই। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে নতুন দুটি রাইডারের উদ্বোধন করব বলে আশা করছি। তবে শিক্ষণীয় পার্কটির পরিপূর্ণতা ফিরে আসলে কুষ্টিয়া জেলা নয় বাংলাদেশের মধ্যে একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।