রবিবার ● ১৭ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিশ্বনাথে সওজের জায়গা দখল
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিশ্বনাথে সওজের জায়গা দখল
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার লামাকাজী বাজারে আদালতে নির্দেশ ১৪৫ ধারা অমান্য ও সওজের উচ্ছেদকৃত জায়গা পুনঃদখল করে দোকান কোঠা নির্মাণ করার পায়তারা করছে বলে এক প্রভাবশালী বিএনপির নেতার পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আদালতের আদেশের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে থানা পুলিশের নোটিশ পাওয়ার পরও দোকানের কাজ করার মালামাল নিয়ে অবস্থান করলে উভয় পক্ষই রয়েছেন মারমুখি অবস্থানে। যেকোনো সময় দুৎপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ’সহ সেখানে আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
গত শুক্রবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার লামাকাজী বাজার পয়েন্টে সিলেটের কোতয়ালী থানার ঘাসিটুলা মজুমদার পাড়ার মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র বুরহান উদ্দিন (৪২) ও বিশ্বনাথ থানার লামাকাজী ইউনিয়নের জাগিরালা গ্রামের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ফরিদ আহমদের পুত্র তুহিন মিয়া (২৬) এর মধ্যে এই উত্তেজনা বিরাজ করছে। তুহিন গংরা রাতের আধাঁরে দোকান নির্মাণের পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বুরহান উদ্দিন বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তুহিন মিয়া’সহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করেন বুরহান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওসি বিশ্বনাথকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে সরেজমিন গিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। আদালতের এই নির্দেশ মতে শুক্রবার দুপুরে উভয় পক্ষকে নোটিশ দেন বিশ্বনাথ থানার এসআই বিনয় চক্রবর্তী।
কিন্তু এই নোটিশ পাওয়ার পরও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিবাদী তুহিন মিয়া দোকানঘরে কাজ করার জন্য মালামাল নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং তারা কাজ শুরু করলে প্রতিপক্ষের লোকজনও বাধা দিতে প্রস্তুত রয়েছে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তুহিন মিয়া বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা মেনেই আমরা দোকান কোঠা নির্মাণের কাজ করব।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায়ের স্বার্থে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লবের মানবেতর জীবন
বিশ্বনাথ :: একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় দীর্ঘ ৯ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্ব নিয়ে দিন কাটছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রলয় কান্ত দে বিপ্লব (৩৫)’র মানবেতর জীবন। এসময় সরকারি দলের তুকুড় নেতা হিসেবে বিপ্লব রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও অন্ধত্বের নিদারুণ কষ্টের জীবনে কেউ এগিয়ে আসেনি তার সাহার্থে সাবেক ছাত্রনেতা বিপ্লব সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কালীজুরি গ্রামের বারিন্দ্র দেবের জ্যেষ্ট পুত্র।
আওয়ামী লীগ পরিবারের ছেলে হিসেবেই ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন বিপ্লব। লেখাপড়া করাকালীন সময়েই দারিদ্ররতায় বড় হওয়া শান্ত-সৃষ্ট ছেলেটি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি একটি দোকানে চাকরি নিয়েছিল। ইচ্ছে ছিল পরিবারের দারিদ্রতা কাটিয়ে উঠার পাশাপাশি ছোট তিন ভাইয়ের দায়িত্ব নেওয়ার। মনের মধ্যে ছিল কতনা স্বপ্ন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে ছুটে চলেছিল সে।
দরিদ্র কোটায় আটকে পড়া ছাত্রনেতার যৌবনের সব সংগ্রাম ব্যর্থ করে দিল একটি মাত্র অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আর এতেই শেষ হয়ে যায় বিপ্লবের জীবনের সব। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিগত ৯ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্বের নিদারুণ কষ্টে জীবন কাটছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লবের।
ছাত্রনেতা বিপ্লবের জীবনের মতো তার পরিবারটিতেও এখন কষ্ট আর দুঃখ যেন নিত্যসঙ্গী। ৫ বছরের একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখটাও দেখা হয়নি বিপ্লবের। আর নিজের আয় উপার্জন না থাকায় বেকার হয়ে জীবনযুদ্ধে ছোট ভাইয়ের সামান্য উপার্জনের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে অন্ধ বিপ্লবের। এ অবস্থায়ও দলীয় কোন নেতাকর্মীও এতদিন কোন খোঁজ খবর নেননি তার। ফলে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। জীর্ণ-শীর্ণ চালার ঘরে থাকছে অসহায় এ পরিবারটি।
জানা গেছে, বিগত ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বনাথ শহরের পুরান বাজারস্থ সুসমিতা লাইব্রেরীতে চাকরি করতো বিপ্লব। ওইদিন সন্ধ্যায় ওই দোকানে ফ্লেক্সিলোড নিয়ে এক ছাত্রলীগ নেতার সাথে বাক-বিতন্ডা হয় দোকান মালিকের। এরপর কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ নেতারা দলবল নিয়ে দোকানে হামলা চালিয়ে দোকান ভাংচুর করতে থাকে।
এসময় দোকানে থাকা বিপ্লবের মাথার পিছনে রড দিয়ে ও বাম চোখের উপড়ে চাইনিজ কোড়াল দিয়ে আঘাত করে তারা। এতে গুরুতর আহত হয় বিপ্লব। এ ঘটনায় দোকান মালিক বাদি হয়ে মামলা করেছিলেন। আবার কিছুদিন পরে আপোষে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু ঘটনার শিকার বিপ্লব দীর্ঘদিন চিকিৎসা করালেও ধীরে ধীরে তার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে অন্ধ হয়ে যায়।
গত ৫ বছর ধরে অন্ধ হয়েই জীবন কাটাতে হচ্ছে তার। অন্ধ হওয়ার আগে সংসারও গড়েছিলো সে। একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানও হয় তার। কিন্তু পুত্রের মুখ দেখার ছয় মাস পূর্বেই পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান বিপ্লব। দেশের সব বড় বড় হাসপাতালে দু’দু বার চোখের অপারেশন করলেও চোখ ভাল হয়নি। এখন চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে অপারেশন করলে চোখ দুটি ঠিক হয়ে যাবে চিকিৎসকের এমন পরামর্শে অপারেশন করতে চাইলেও টাকার অভাবে তা আর করতে পারছেন তার পরিবার।
চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫ লাখ টাকা। এখন তার পরিবার প্রবাসী ও বিত্তবানদেরর কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। মাত্র ৫ লাখ টাকা হলেই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বিপ্লব। অসহায় এ পরিবারটির কষ্ট লাঘবে ও বিপ্লবের চিকিৎসায় মানবিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রাও।
অতিথি সেজে দিনদুপুরে ডাকাতি
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে অভিনব কায়দায় দিনদুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুরে বিশ্বনাথ কলেজ রোডস্থ মফিজ আলীর বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় মফিজ আলী বড় নাতিকে নিয়ে জুমার নামাজে ছিলেন। আর বাড়িতে পুত্রবধূ এবং দুই নাতি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
তখন অতিথি সেজে বাসায় প্রবেশ করে অজ্ঞাত দুই যুবক। তারা গৃহবধূকে মারধর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়।
জানা যায়, জুমার নামাজের সময় মফিজ আলী পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে বাসায় রেখে বড় নাতিকে নিয়ে নামাজ পড়তে যান। ওই সময় সুযোগ বুঝে তার বাসায় অজ্ঞাত পরিচয়ে দুই ব্যক্তি কোমল পানীয় ও বিস্কুট নিয়ে বাসায় প্রবেশ করেন।
পুত্রবধূ তাদের পরিচয় জানতে চাইলে, তারা মফিজ আলীর আত্মীয় বলে জানান। তখন তাদের বসতে দিয়ে ভেতরে রুমে যাওয়ার সময় পেছন থেকে তাকে ধরে বেঁধে জিম্মি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তার দুই শিশু ছেলেকে এক রুমে বন্দী করে রেখে নগদ টাকা ও স্বর্ণ লুটে নেয়।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, বিষয়টি সন্দেহজনক। তাদের মামলা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে রাগীব রাবেয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিংবডির নির্বাচন সম্পন্ন
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী রাগীব রাবেয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিংবডির নির্বাচন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে লামাকাজী এলাকায় এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
বুধবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণ অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটগ্রহণ অনুষ্টিত হয়। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দেব।
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আব্দুল হামিদ, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম সরকার, পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ইঃসঃকঃ মো. শামীম আহমদ, জনস্বাস্হ্য প্রকৌশল অফিসের মেকানিক বিজয় লাল দেব, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ডাটা এন্টি অপারেটর মো. মজিবুর রহমান সরকার, মহিলা বিষয়ক প্রশিক্ষক শিউলী আক্তার।
নির্বাচনে স্কুল শাখায় অভিভাবক প্রতিনিধি পদে ফয়জুল হক ১৫৫ ভোট পেয়ে প্রথম স্থান ও আইনুল হক ১৪৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শামসুল হক মোল্লা ১২২, শরীফ আল হাসান ৭৭ এবং নজরুল ইসলাম ৫১ ভোট পেয়ে যথাক্রমে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম স্হান লাভ করে অকৃতকার্য হয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য পদে মোছা. ছায়ারুন নেছা চৌধুরী ২৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেহেনা বেগম ১৩৯ ভোট পেয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন।
এদিকে কলেজ শাখায় সাধারণ অভিভাবক সদস্য পদে মৃনাল কান্তি আচার্য্য ৪৯ ভোট, আলমাছ আলী ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাজী মো. ছাদ মিয়া ও নুরুল হুদা দুজনেই সমান সংখ্যক ৩২ টি করে ভোট পেয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। এছাড়াও শিক্ষক প্রতিনিধি (স্কুল শাখায়) হিসেবে মোঃ নায়েব আলী, মোছা. রুজিনা বেগম এবং কলেজ শাখায় শাহিন আলম নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে অভিভাবক ও এলাকাবাসী ফলাফলের অপেক্ষায় স্কুল গেইটের সামনে বিশ্বনাথ রোডে অবস্থান নেন। ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দেব। ফলাফল পেয়ে সমর্থকগণ বিজয়ীদের পক্ষে বিজয় মালা ও একে অপরকে মিস্টি খাওয়ান।
এসময় প্রধান শিক্ষক একেএম সিফাত আলী, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, গভর্নিংবডির সভাপতি আলহাজ্ব ড মো. শাহনুর হোসাইন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক একেএম দুলাল আহমদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্হ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক জহুরুল হোসেন জহির, থানার এএস আই বিনয় চক্রবর্তী, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল রব, স্হানীয় ইউপি সদস্য জিসু আচার্য্য, সাবেক সদস্য ছুরুক মেম্বার, কনক মেম্বার, ব্যবসায়ী শাহিন আহমদ শান্তি মিয়া, বাবুল আহমদ, আব্দুর রহমান, সংগঠক রফিক আহমদ, অলিউর রহমান জনি, গোলাম মাওলা, জাকির আহমদ, মিটু দে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।