রবিবার ● ২৭ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মাটিরাঙ্গায় শিক্ষকের দূর্নীতির সত্য ঘটনা প্রকাশ করায় সাংবাদিক অন্তরকে হয়রানী
মাটিরাঙ্গায় শিক্ষকের দূর্নীতির সত্য ঘটনা প্রকাশ করায় সাংবাদিক অন্তরকে হয়রানী
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২৭ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত ১০.১০মিঃ) খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ছিন্নমুল হত দরিদ্র এক চানাচুর দোকানির কাছে চাঁদাদাবী ও শর্ত জুড়ে দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার জের ধরে স্কুলের এলাকা থেকে বিতাড়িত করার অভিযোগের ভিত্তিতে “মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক” এর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিবেদক সাংবাদিক অন্তর মাহামুদকে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক” এর পক্ষ নিয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক কতিপয় নেতারা মিলে হয়রানীর অভিযোগ পাওযা গেছে ৷ এতে করে প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ ধারনা করছেন ৷ বিভিন্ন হয়রানী ও হুমকির ফলে সাংবাদিক অন্তর মাহমুদ তার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ৷
ভুক্তভোগীর অভিযোগ এবং তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশেন ও প্রকাশ করা হলেও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের প্ররোচনায় শিক্ষক সমিতির পক্ষ হতে প্রকাশিত সংবাদটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সংবাদের প্রতিবেদককে বার বার উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপদস্ত করতেই মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷
প্রকৃত ঘটনা ক্ষতিয়ে না দেখে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার শামীল বলে সচেতন মহল মনে করেন ৷ যা সর্ব মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে ৷
এবিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় ৷ তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আসাদুজ্জামানকে। তার পক্ষ থেকে গত ২২ মার্চ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য ও স্বাক্ষী উপস্থাপনের জন্য বলা হয় ৷ তবে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও অজ্ঞাত কারণে জমা করতে পারেনী তদন্তকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আসাদুজ্জামান ৷
অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ের বক্তব্য উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর প্রতিবেদকের দিকেই অভিযোগের তীর ছুড়েন সংবাদে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক। তিনি সাংবাদিক অন্তর মাহামুদকে নাজেহাল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রযেছে ৷ এদিকে নিজেদের দোষ চাপা দিতে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী করেন আবেদনকারী কৌশলে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি মো: এরশাদ আলীসহ সংশ্লিষ্ট কতিপয় শিক্ষকরা ৷
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে শাস্তির অভিযোগ আনার পূর্বে সংবাদের কোনো প্রতিবাদ দেওয়া হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্টরা কোন সদত্তর দিতে পারেননি ৷ অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন সরকারী স্মারক নং ব্যবহার করে সংবাদের প্রতিবেদককে বিবাদী করাটা কতটা প্রচলিত আইন সম্মত তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে অভিজ্ঞ মহলে ৷
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি মো: এরশাদ আলী বলেন, বিষয়টি অনেকটা ভূল বুঝা বুঝি হয়েছে ৷ দ্রুত বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে এ ঘটনার অবসান করার চেষ্টা চলছে ৷
মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক, শর্ত জুড়ে দেওয়াসহ চাঁদা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে চানাচুর দোকানিকে স্কুল এলাকা ময়লা হওয়ার কারণে উল্লেখিত স্থান থেকে সরে গিয়ে বটগাছের নিচে বসতে বলেছেন তিনি মো: এরশাদ আলী বলেন ৷ তবে তার বক্তেব্য নানা অসঙ্গতি ও অসত্য লক্ষণ রয়েছে ৷
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে , তদন্ত কর্মকর্তা মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা: মো: আসাদুজ্জামানকে বেধে দেওয়া সময় অতিবাহিত হওয়ার পর রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে ৷ তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলতে তিনি বাধ্য নয়, রিপোর্ট এখনোও জমা দেওয়া হয়নি বলে জানান ৷ এদিকে তদন্ত কর্মকর্তা ২২ মার্চ সকলের সম্মুখে অভিযোগ কারীনির বক্তব্য রিপোর্টে লিপিবদ্ধ করলেও- বিশ্বস্থ সুত্রে জানা গেছে, তদন্ত কর্মকর্তা রাতের আধারে অভিযোগ কারিকে তদন্তের নামে রাতে বিরাতে বাসায় গিয়ে হয়রানী করছেন ৷
এ বিষয়ে, মাটিরাঙ্গা ইউএনও এ বিএম মশিউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি মাটিরাঙ্গা প্রেস ক্লাব সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর আলমকে সমাধানের জন্য পরামর্শ দিয়েছি ৷ তবে শিক্ষক সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে এ বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আসাদুজ্জামানকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে ৷ তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার নির্ধারিত তারিখ অতিবাহীত হওয়ার পরও সরকারী অফিস বন্ধ রয়েছে ফলে তদন্ত কর্মকর্তা ৩ কার্য দিবস পর্যন্ত সময় পাবেন বলে মাটিরাঙ্গা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান ৷
এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর পর স্কুলে জরুরী বৈঠকসহ স্কুল পরিচালনা কতৃপক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এবিষয়ে প্রতিবেদক জরুরী রেজুলেশন,গঠনকৃত তদন্ত কমিটি এবং তদন্ত প্রতিবেদন, লিখিত আকারে পাওয়ার আবেদন করলেও স্কুল পরিচালনা কমিটি তা অজ্ঞাত কারণে গোপন রেখেছেন বলে জানান সাংবাদিক অন্তর মাহমুদ ৷
প্রতিবেদক অন্তর মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিজের দায় অস্বীকার করে উল্টো প্রতিবেদকের শাস্তির দাবী করে কৌশলে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি মো: এরশাদ আলীসহ ৭৬ জনরে স্বাক্ষরিত একটি মানহানিকর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে মর্মে অভিযোগপত্র দায়ের করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিএম মশিউর রহমানের কার্যালয়ে ৷ সংবাদটি যথাযথ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই করা হয়েছে ৷ অপরাধ ঢাকতেই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পুরো শিক্ষক সমিতিকে ব্যবহার করে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে দাবি ৷
বিষয়টি মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ লাল দেবনাথকে প্রতিবেদক অন্তর মাহমুদ জানালেও তিনি বিষয়টি না জানার ভান করে মুখে কুলুপ দিয়ে আছেন বলে জানা গেছে ৷ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কোন প্রকার প্রশাসনিক বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার খবর তিনি দিতে পারেননি ৷
প্রসঙ্গত: গত ১১ মার্চ ২০১৬ শুক্রবার স্কুল এলাকা থেকে ছিন্নমুল হত দরিদ্র চানাচুর দোকানিকে শর্ত পুরণে ব্যর্থ হওয়াসহ চাঁদাবাজির অভিযোগে তাড়িয়ে দেওয়ার সংবাদটি সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম অনলাইন মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় ৷ একই বিষয়ে পর পর সংবাদটির একাধিক ফলোআপ সংবাদও প্রকাশিত হয় ৷
উল্লেখ্য, যেকোন সংবাদ প্রকাশের পর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ লিপি দেয়ার বিধান রয়েছে, কিন্তু এসংবাদটি প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ ব্যক্তি কোন ধরনের প্রতিবাদ লিপি না দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি অন্তর মাহমুদকে ক্ষমতাসীনদের মাধ্যমে হুমকি দিয়ে হয়রানী করছেন।