রবিবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২২
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » ঈশ্বরগঞ্জ ইসলামপুর সড়কটির বেহাল দশা জনদুর্ভোগ চরমে
ঈশ্বরগঞ্জ ইসলামপুর সড়কটির বেহাল দশা জনদুর্ভোগ চরমে
উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: ঈশ্বরগঞ্জ ইসলামপুর সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। গত পাঁচ বছর ধরে সড়কটি যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের পেছনে থেকে ইসলামপুর ভায়া চট্টি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কটির পিচ ইট সুরকি উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে কলেজ সংলগ্ন আবুল কাশেম ইঞ্জিনিয়ারের বাসার সামনের গর্ত গুলো মিনি পুকুরে পরিণত হয়েছে। এসব গর্তে অহরহ যাত্রীবাহী যানবাহন উল্টে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। ঈশ্বরগঞ্জ ইসলামপুর সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাসিন্দাসহ সোহাগী সরিষা জাটিয়া এই তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। সড়কের বেহাল দশার কারণে কৃষকরা উৎপাদিত পণ্য পরিবহন নিয়ে পড়েছে মহাবিপাকে। এছাড়াও শতশত ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন স্কুল কলেজে যাতায়াত করে এ সড়ক দিয়ে। বর্ষার মৌসুমে খানাখন্দে পানি জমে কাদায় পরিণত হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারী ডিগ্রী কলেজ শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার জানান, বর্ষা মৌসুমে খানা খন্দ ও কাদা জলের কারণে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কলেজে না গিয়ে প্রায়ই বাড়ি ফিরে যেতে হয়।
অটো রিক্সা চালক মাসুম মিয়া জানান, প্রায়ই কাদা জলের গর্তে যানবাহন উল্টে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার শিকার হয়। বিশেষ করে কলেজের পিছনে ২শ মিটার সড়কের গর্তগুলো মিনি পুকুরের রূপ ধারণ করেছে। শিক্ষার্থীরা এখানে এসে রিক্সা অটোরিক্সা থেকে নেমে জুতা খুলে কাদা মাড়িয়ে তাদের স্কুল কলেজে ঢুকতে হয়।
ইসলামপুর জামিয়া গাফুরিয়া মাদ্রাসার সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বুলবুল জানান, দেশের বৃহত্তম দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ইসলামপুর মাদ্রাসার কারণে এ সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিবছর এ মাদ্রাসায় বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলন হয়ে থাকে। এ সম্মেলনে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এমপিগণ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষ জমায়েত হন এ সম্মেলনে। কিন্তু সড়কটির এ বেহাল দশার কারণে আগত অতিথিগণসহ লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে। সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে জাতীয় সংসদ সদস্য সহ এলজিইডির উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন নিবেদন করেও সড়ক সংস্কারের কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। জন দুর্ভোগ লাঘবে অনতিবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের দাবি করেন তাঁরা।
ঈশ্বরগঞ্জ এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে এলজিইডির তৎকালীন বিভাগীয় প্রকৌশলী এ মাদ্রাসার সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তখন মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তিনি সড়কটি প্রশস্ত ও পাকাকরনের জন্য এক কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি পাকা করে। তারপর আর কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কটি এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের সংস্কার প্রকল্পে এ সড়কটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু চলতি প্রকল্পে সড়কের নাম না আসায় সড়কটি সংস্কার কাজ থেকে বাদ পড়ে যায়। তবে আরটিআইপি প্রকল্পে পুনরায় এই সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করা যায় এ প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি সংস্কার করে যানবাহনসহ পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের উপযোগী করে তোলা সম্ভব হবে।