রবিবার ● ২৭ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার : আটক-৩
ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার : আটক-৩
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ টাকার জাল টাকা উদ্ধার করে দুই নাতিসহ নানাকে আটক করেছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। শনিবার অভিযান চালিয়ে ওই জাল টাকা উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে পৌর শহরের চাল মহাল মসজিদ মার্কেটের লতিফ মিয়ার মনোহারী দোকান থেকে দুই শিশু গুড় ও সাবান কিনে এক হাজার টাকার নোট দেয়। নোটটি দেখে সন্দেহ হলে পাশের দোকানের সাইফুলকে নোটটি দেখালে তিনি জাল টাকা বলে ধারনা করেন। পরে স্থানীয় জনতা দুই শিশুর দেহ তল্লাশি করে ৯০ হাজার টাকা পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ টাকাগুলো রেখে শিশুদের ছেড়ে দেয়। শিশুদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।
পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের বৃ-দেবস্থান গ্রামের মৃত আক্কাস আলির পুত্র আবুল কাশেম (৭০)এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরো ২৪টি এক হাজার টাকা নোটের বান্ডেল, জাল টাকা তৈরির ২০রিম কাগজ, ২বোতল কেমিক্যাল, ২রোল টাকা তৈরির সুতো উদ্ধার করে।
এসময় বৃদেবস্থান গ্রামের মৃত আক্কাস আলির পুত্র আবুল কাশেম (৭০) ও তার দুই মেয়ের নাতি গৌরীপুর উপজেলার নাউভাঙ্গা গ্রামের বাহাদুরের পুত্র পাপ্পু ওরফে সম্রাট (৯) ও কুমিল্লা জেলার আবু কাউসারের পুত্র হাসান ওরফে জয় (১১)’কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃত দু’শিশু তার নানার বাড়িতেই বসবাস করে বলে জানা যায়।
পুলিশ জানায়, আটককৃত কাশেমের অপর এক মেয়ের জামাই নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের ডুমরি গ্রামের আবদুল আজিজের পুত্র সেলিম জাল টাকা তৈরির মূল হোতা। ইতোপুর্বে সেলিমকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ ঢাকায় র্যাবের হাতে ধরা পড়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, গত দুইদিন পূর্বে সেলিম শ্বশুর বাড়ি থেকে একটি বস্তা নিয়ে গেছেন। শিশুদের দেওয়া তথ্য ও শ্বশুরবাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রামের লোকজন ধারণা করছেন সেলিম তাঁর শ্বশুর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা সরিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, কাশেম মিয়ার তিন ছেলে ও ছয় মেয়ে। বড় ছেলে ডালিম মিয়া (৪০) বেকার জীবন যাপন করেন। সে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। পুলিশ তাঁর খোঁজে ক’দিন পর পর বাড়িতে আসে। এ কারণেই হয়তো সে পলাতক থাকেন।
তবে পুলিশের তল্লাশি চলার সময় কাশেম মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম পালিয়ে যান। অন্যদিকে তল্লাশি চলার সময় বাড়ির একটি কক্ষে আটক ছিলেন কাশেম মিয়া। তাঁর কাছে বাড়িতে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ও নোট তৈরির নানা উপকরণ থাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। এসব উপকরণ কে এনে রেখেছে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, দুটি শিশুকে ধরার পর ওদের সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযান শেষে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এঘটনায় জড়িতদের তিন জনকে আটক করা হয়েছে।