বুধবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » গুনীজন » ৫৪ বছর চারুকলা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতি পেতে চায় রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা
৫৪ বছর চারুকলা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতি পেতে চায় রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: গত ১২ ফেব্রুয়ারি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একুশে পদক ২০২৩ প্রদান তালিকায় নিজের নাম না থাকায় বিষ্ময়কর প্রকশ করেছেন রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী ও পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীদের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি রক্ষায় মিনি যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা।
তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পার্বত্য চট্টগ্রামের চারুকলা শিল্পের একমাত্র রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠানকে এবং শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলা ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে রাষ্ট্রিয় ভাবে মর্যাদা প্রদানের আবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব এর একান্ত সচিব ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এর নিকট।
শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলা ক্ষেত্রে জীবন্ত কিংবদন্তী রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা প্রধানমন্ত্রী বরাবর যে আবেদন তিনি করেছেন তা হুবহু প্রকাশ করা হল।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, শিল্পকলা, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় একুশে পদকসংক্রান্ত নীতিমালা (২০১৯ পর্যন্ত সংশোধিত) গত ২৬ নভেম্বর-২০১৯ তারিখ : স্মারক নং : ৪৩.০০.০০০০.১২৪.২৩.১৪৪.১৯.৬৯৬ মুলে একুশে পদক সংক্রান্ত নীতিমালা, কোন ব্যক্তি (জীবিত/মৃত), গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে নিন্ম বর্ণিত ক্ষেত্র সমুহে গৌববোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার একুশে পদকে ভুষিত করতে পারেন :
ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলাসহ সকল ক্ষেত্র), মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোন ক্ষেত্র বিশেষ অবদানের জন্য এই সম্মাননা দেয়া হয়।
রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, পিতা : চিকন চান মহাজন, মাতা : তন্যা পুরি তঞ্চঙ্গ্যা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী, কাঠালতলী রাঙামাটি পার্বত্য অত্যান্ত ভারক্রান্ত মন নিয়ে বিনয় ও যথাযথ সম্মানের সহিত প্রধানমন্ত্রী লেখেছেন, তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ৫৪ বছর চারুকলায় অবদান রাখার পরও একুশে পদক ২০২৩ এ স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশের কথা এবং সরকারের প্রধানমন্ত্রী এর নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের চারুকলা শিল্পের একমাত্র প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠানকে এবং শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলা ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যাকে একুশে পদক প্রদানের আবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রীপরিষদ সচিব মহোদয়ের একান্ত সচিব এবং রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এর নিকট সদয় জ্ঞাতার্থে জানান, চারুকলা শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার, ১৯৭০ সালে তৎকালিন রাঙামাটির ডেপুটি কমিশনার এইচটি ইমাম, ১৯৭৭ সালে রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক, ১৯৭৯ সালে চাকমা সার্কেল চীফ কর্তৃক, ১৯৮১ সালে বঙ্গ ভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কৃতি যুব সংবর্ধনা, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী পুরস্কার সম্মাননা, এছাড়া রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক সম্মাননা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক আজীবন সম্মাননা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানীত মন্ত্রী কর্তৃক সম্মাননা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মানীত চেয়ারম্যান কর্তৃক সম্মাননা, চারুকলা বিষয়ে পেশাগত ৫০ বছর পূর্তিতে সিএইচটি মিডিয়া কর্তৃক সম্মাননা, রেগা প্রকাশনা পরিষদ কর্তৃক সম্মাননাসহ আমাকে অসংখ্য সম্মাননা এবং পুরস্কার পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ১৯৭৯ সালে নিজ উদ্যোগে রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী ও পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীদের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি রক্ষায় মিনি যাদুঘর প্রতিষ্ঠার কথা জানান। তার আবেদনে তিনি অদ্যবধি সরকারি কোন অনুদান ব্যতিত নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদানের মাধ্যমে রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী সুনামের সহিত পরিচালনা এবং রাঙামাটি চারুকলা একাডেমীর ছাত্র-ছাত্রীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের সুনাম অর্জন করার কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন।
সবার শেষে আবেদনপত্র লেখেছেন প্রবল আগ্রহ তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ জাতীয় পর্যায়ে দীর্ঘ ৫৪ বছর চারুকলায় অবদান রাখায় রাষ্ট্রিয় ভাবে যথাযথ স্বীকৃতি এবং মর্যাদা প্রত্যাশা করেন।