বুধবার ● ৬ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » শারীরিক প্রতিবন্ধী আল মাহমুদের ২ হাজার টাকা দামের ১টি ব্যাটারী প্রয়োজন
শারীরিক প্রতিবন্ধী আল মাহমুদের ২ হাজার টাকা দামের ১টি ব্যাটারী প্রয়োজন
আশরাফুল ইসলাম রনি,তাড়াশ(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (৫ এপ্রিল ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫৫মিঃ) সাংবাদিক ভাই, আপনারা কত বিষয়ে লেখালেখী করেন; আমার জন্য একটা ১৫শ’ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে অটো ভ্যানগাড়ীর পুড়াতন ব্যাটারীর ব্যবস্থা করে দেন ভাই ৷ দিনরাত অসয্য গরম অর সয্য হয়না ৷ তাছাড়া দিনের আলো শেষ হতেই একটু অন্ধকারে আমি যেন দু’চোখের আলো একেবারে হারিয়ে ফেলি ৷ আমার জন্য একটা পুড়াতন ব্যাটারীর ব্যবস্থা করা হলে ছোট পাখা লাগিয়ে আমার দূর্বল-ক্লান্ত শরীরটা একটুখানি জিড়িয়ে নিতাম আর দিনের শেষে একটা বাল্ব জালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করতাম ৷ স্থানীয় বেসরকারী ‘পরিবর্তন’ নামক একটি সংস্থার সহায়তায় খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা করলেও প্রায় দুইহাজার টাকা খরচ করে ব্যাটারী কেনার মত টাকা আমার একেবারেই নেই ৷
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিনসাড়া বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অধিকার সচেতন শারীরিক প্রতিবন্ধী আল মাহমুদ এভাবেই বললেন তার সীমাহীন সমস্যার কথা ৷ তিনি আরও বলেন, দারিদ্রতা আর প্রতিবন্ধিতার নিবীড় সম্পর্ক রয়েছে ৷ দরিদ্র বাবা-মায়ের একই পরিবারে আমরা চার ভাইবোন প্রতিবন্ধী ৷ খেয়ে না খেয়ে দিনাতীপাত হচ্ছে তবুও আমরা কখনও বৃত্তির চিন্তা করি নাই ৷ তিনি এও বলেন, ইতোমধ্যে আমার এক ভাই অবহেলায় দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে মারা গেছে ৷ যতই দিন যাচ্ছে প্রতিবন্ধিতার কারণে আমার শরীরও কর্ম ক্ষমতা হারাচ্ছে ৷ ঢাকাস্থ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন র্যাত সিডিডি কর্তৃক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবার ভ্রাম্যমাণ বাস ক্যাম্পে আমি সেবা নেয়ার জন্য গেলে তারা বলেছে, আমার শরীরের মাংসপেশীও শক্ত হতে শুরু করেছে ৷ বেশি দিনতো বাঁচবোনা ৷ তারপরেও প্রতিবন্ধিতা নিয়েই সারাক্ষণ চেষ্টা করছি নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যসত্ম রাখতে ৷
আল মাহমুদ (২৬) সিরাজগঞ্জ জেলাধীন তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে ৷ নিকটবর্তী কাজিপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করলেও বর্তমানে বিনসাড়া সরকারী রাস্তার পাশে খাসের জায়গায় বসবাস করছেন৷ তিনভাই দুই বোনের মধ্যে আল মাহমুদ, মনিরুল, কাজলী গুরুতর শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার হয় ৷ অপর একজন আবদুল আহাদ আংশিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী৷
সরেজমিনে আরও জানা যায়, আল মাহদের বর্তমান দোকান ঘরটিতে স্থানীয় এক ব্যক্তি কিছুদিনের জন্য ব্যবসা করতে দিয়েছে ৷ বছর যেতে না যেতে সারাক্ষণই বলা হচ্ছে ঘর ছেড়ে দাও ৷ এ নিয়েও আল মাহমুদের চিন্তার শেষ নাই ৷ বাড়িওয়ালা বের করে দিলে কোথায় যাবে সে ? আল মাহমুদ বলেন, আমি ব্যবসা ছাড়বো না ৷ কারণ শরীরে খেটে আমি অন্য দশজন মানুষের মত যে কোন কাজ করতে পারবোনা ৷ প্রয়োজনে রাস্তায় বসে দোকানদারী করবো ৷ প্রতিবন্ধী ক্লান্ত-দূর্বল শরীরে অসয্য গরম আর সয্য হয়না ৷ আমাকে একটু বাতাস আর আলোর ব্যবস্থা করে দেন ৷
প্রয়োজন ১৫শ’ থেকে দুইহাজার টাকার একটি অটোভ্যান গাড়ীর পুরাতন ব্যাটারী ৷
আশরাফুল ইসলাম রনি,তাড়াশ,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি এর যোগাযোগ মোবাইল নাম্বার ০১৭১২৬৪৫৬৩০