বুধবার ● ২১ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » ঘোড়াঘাটে খানাখন্দে ভরা সড়ক জনদুর্ভোগ চরমে
ঘোড়াঘাটে খানাখন্দে ভরা সড়ক জনদুর্ভোগ চরমে
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :: সড়ক যদি হয় খানাখন্দে ভরা আর সংস্কারহীন তাহলে সেখানকার মানুষের দূর্ভোগ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর হিলি সড়কে উপজেলার ওসমানপুর থেকে ডুগডুগিহাটের শেষ সীমানা পর্যন্ত ঘুরে দেখা মেলে এমনই চিত্র।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ওসমানপুর বাজার থেকে ডুগডুগীহাট বাজার পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে প্রায় সব জায়গায় খানাখন্দে ভরা ও ভেঙ্গে গুঁড়া গুঁড়া অবস্থা। সড়কের পিচ উঠে ইট, সুরকি এবং খোয়াগুলো সরে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দেখলে বুঝার উপায় নেই এটা পাকা নাকি কাঁচা সড়ক।
উপজেলার ওসমানপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে রাস্তার ভাঙ্গন শুরু। এরপর একটু সামনে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বহুদিন হতে অল্প বৃষ্টিতেই জলের নিচে তলিয়ে যায়। সেখানে ইট জোরাতালি দিয়ে উঁচু করে টেমপোরারি হেয়ারিং বন্ড করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আরও দূর্ভোগ বেড়েছে। এরপর বাজারের আর একটু সামনে এগুলেই তেতুলতলা হিলি বাসস্ট্যান্ড। সেখানেও বড় বড় দুটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সব সময় জল জমে থাকে। যেখানে রিকশা বা অটোরিকশা জাতীয় ছোট গাড়িগুলো মোচড় খেয়ে প্রায়ই রিকশার রিং বেঁকে যায়, শিক ছিঁড়ে যায় বা কখনো কখনো অটোরিকশা উল্টে ঘটে চলেছে ছোট খাটো দুর্ঘটনা।
উপজেলার ওসমানপুর বাজার থেকে সূরা মসজিদের দুরত্ব ৩ কিলোমিটার। এটুকু রাস্তা যেতে চোখে পড়বে ৩টি হেয়ারিং বন্ড সহ প্রায় ১০টি বড় গর্ত এবং ছোট ছোট অসংখ্য গর্ত। সুরা মসজিদ থেকে বলাহার বাজারের দুরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। এই রাস্তাটুকু যেতে চোখে পরবে প্রায় ১৫টি বড় গর্ত এবং বেশিরভাগ জায়গায় রাস্তার পিচ থেকে শুরু করে নিচের ইট সুরকি উঠে গিয়ে কাচা সড়কে পরিনত হয়ে গেছে। বলাহার বাজার থেকে ডুগডুগি হাট বাজারের দুরত্ব ৩/৪ কিলোমিটার। এ রাস্তাটুকু যেতে চোখে পরবে ৫ টি হেয়ারিং বন্ড সহ ৮/৯টি বড় বড় গর্ত ও অসংখ্য ছোট ছোট গর্ত। এর ফলে সড়কটি বিশেষ করে রোগী, বৃদ্ধ, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এলাকাবাসী জানান, গত ৪/৫ বছর পূর্বে থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কের মধ্যে ছোট খাটো ডোবার মত মনে হয়। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদেরকে ওই পথ দিয়ে যাতায়াতের সময় মোটরসাইকেল বা যানবাহন থেকে ছিটকে আসা কাদা পানিতে নাজেহাল হতে হয়। উঁচু হেয়ারিং বন্ডগুলোতে গাড়ি উঠানামার সময় মোচড় খায়। সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এসব দৃশ্য নজরে পড়ে।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন সিএনজি ও অটো চালকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এ সড়কে যাতায়াতের সময় শরীরে এত ঝাঁকি লাগে যে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। বুকের হাড় পর্যন্ত নড়ে যায়। কয়দিন পর পর গাড়ি ঠিক করতেই ২/৩ হাজার টাকা করে লাগে। উপজেলার ওসমানপুর, পাটশাও, সুরা মসজিদ, বলাহার বাজার সহ ডুগডুগি বাজারে অসংখ্য মানুষের সাথে কথা হলে তারা একটিই কথা বলেন, আজ ৪/৫ বছর ধরে রাস্তাটা ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেরামতের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
অপরদিকে ঘোড়াঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) পক্ষ থেকে ইতো মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারেনি। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। উপজেলার সিংহভাগ মানুষ জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানান।
ঘোড়াঘাটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত
ঘোড়াঘাট :: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী প্রভু জগন্নাথের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকাল সাড়ে ৩ টায় উপজেলার ওসমানপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে প্রভু জগন্নাথের রথযাত্রার রশি স্পর্শের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঘোড়াঘাট থানার ওসি আবু হাসান কবির, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার ডাঃ পার্থ জ্বীময় সরকার, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন মোহন্ত ভুট্টু, সাধারণ সম্পাদক রিপন চন্দ্র সরকার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডাঃ গোপাল সরকার, উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ নিরঞ্জন সরকার, ওসমানপুর সার্বজনীন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণুপদ সরকার প্রমুখ। পরে মন্দির প্রাঙ্গন রথযাত্রা থেকে বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঘোড়াঘাট সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুধীর মন্ডল এর বাড়ির মন্দিরে রাখা হয়। এ রথযাত্রায় উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হাজার হাজার নারী-পুরুষ পাপ মোচনের জন্য তাদের বিশ্বাস মতে প্রভু জগন্নাথের রশি স্পর্শ করেন। আগামী ২৮ জুন পুনরায় উল্টো রথযাত্রা বের হবে।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন মোহন্ত ভুট্টু বলেন, মানবদেহ জগন্নাথের রথ ২০৬ টি কাঠ দিয়ে তৈরি যা নরদেহের ২০৬ টি হাড়ের অনুরুপ। রথের রশি হলো মন বুদ্ধি রথের স্বয়ং ঈশ্বর। ঈশ্বর নিজের ইচ্ছায় এই শরীর কে চালিত করেন। মানুষের ইচ্ছায় কিছুই হয় না, সব ঈশ্বরের ইচ্ছায় হয়ে থাকে।