বৃহস্পতিবার ● ১০ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » জুডো খেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক অর্জনের পরেও আজাদের ভাগ্যে মেলেনি রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি
জুডো খেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক অর্জনের পরেও আজাদের ভাগ্যে মেলেনি রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: সেপ্টেম্বর -২০১৮ সালে আজারবাইজানে রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ জুডো প্রতিযোগিতা। এই আসরে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ১২৫টি দেশ। ২০১৮ বিশ্বকাপে ৭৫৮ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৪৬০ জন ও নারী ২৯৮ জন অংশ গ্রহন করে।
জুডো খেলার সর্বোচ্চ আসরে বাংলাদেশ দলের হয়ে অংশ গ্রহন করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পানছড়ি ব্যাটালিয়ন, ৩ বিজিবি পরিবারের সদস্য নায়েক আবু কালাম আজাদ।
আবু কালাম আজাদ ২০০৬ সালে তৎকালিন বাংলাদেশ রাইফেলস্ (বিডিআর) বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবিতে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম জুডো টিমে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। সে আন্তঃ ব্যাটালিয়ন জুডো প্রতিযোগিতায় মধ্যে প্রথমস্থান অর্জন করেন। সেই সুবাদে বর্ডার গার্ড ক্রীড়া বোর্ডের মাধ্যমে তিনি ২৯ তম জুডো প্রতিযোগিতায় ২০০৯ সালে তাম্র পদক,তার পর ৩য় ইনডোর বাংলাদেশ বাংলা গেমস কলকাতায় ২০১০ সালে তাম্র পদক,৩০ তম জুডো প্রতিযোগিতায় ২০১০ সালে রৌপ্য পদক,বাংলাদেশ গেমস ২০১৩ সালে এককভাবে স্বর্ণ পদক, পরবর্তীতে ওয়ালটন ফাস্ট কাপ ২০১৫ সালে স্বর্ণপদক,জাতীয় বিজয় দিবস কাপ ২০১৫ সালে রৌপ্য পদক, স্বাধীনতা কাপ-২০১৯ স্বর্ণপদক পদক, ৩৩তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত স্বর্ণপদক পদক,৩৪তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় ২য় বারের মত স্বর্ণপদক, ৩৫তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক, ৩৭তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক, ৩৮তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক, ১ম আন্তঃবাহিনী জুডো প্রতিযোগিতা-২০২২ স্বর্ণপদক, ২য় আন্তঃবাহিনী জুডো প্রতিযোগিতা-২০২৩ এ স্বর্ণপদক, ২০০৭ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বিজিবির আন্তঃ ব্যাটালিয়ন, আন্তঃ সেক্টর, আন্তঃ রিজিয়ন জুডো প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক, এছাড়া ৮ম বাংলাদেশ গেমস-২০১৩ স্বর্ণপদক, ৯ম বাংলাদেশ গেমস-২০২০ স্বর্ণপদক, নেপালের কাঠমুন্ডুর ললিতপুরে ২০১৮ সালে মার্চে ৮ম সাউথ এশিয়ান সিনিয়র জুডো প্রতিযোগিতায় রৌপ্য পদক এছাড়া নেপালের কাঠমুন্ডুর ললিতপুরে ২০১৯ সালে এসএ গেমস এ তাম্র পদক অর্জন করেন।
২০১৮ সালে জুডো বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে দেশে পতাকা উত্তোলন করার গৌরব অর্জন করেন এবং বাংলাদেশ জুডো দলকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেন জুডো খেলোয়াড় মো.আবুল কালাম আজাদ ।
জুডো খেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এত পদক অর্জন করার পরেও বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন,জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন তথা বাংলাদেশ সরকারের-রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি মেলেনি জুডো খেলোয়াড় আবুল কালাম আজাদের ভাগ্যে।
গুণী এ জুডো খেলোয়াড় ১০ ডিসেম্বর-১৯৮৮ সালে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কুমেদপুর ইউপির মিঠারপাড়ার গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা সমাজসেবক মো. কাইয়ুম উদ্দিন মণ্ডল ও মাতা মোছা. সাহেরা বেগমের ৪ সন্তান (২ ছেলে, ২ মেয়ে) এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ সন্তান। আবু কালাম আজাদ ২০০৫ সালে গুর্জ্জি পাড়া কে,পি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরে রংপুর বিএম কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসি ও ২০২০ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ/বিএসসি পাস করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় যাঁরা অধিষ্ঠিত হয়েছে সকলেই বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে খেলাধুলা বিষয়ক পৃষ্ঠপোষকতার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দলীয় খেলা আর ব্যক্তিগত খেলা সমুহ নিয়ে ক্রীড়া উন্নয়নে কাজ করার নজির নেই। যেমন : ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল,হকি, কাবাড়ি, খো-খো ইত্যাদি দলীয় খেলা একটি দলের সবাইকে ভাল খেলতে হয়। ১০০% ভাল খেলার পর একটি স্বর্ণপদক মেলে। আর জুডো, কুস্তি, উশু, তায়কোয়ানডো, টেনিস, দাবা, কারাতে, বক্সিং, কিক বক্সিং, আরচ্যারী ইত্যাদি ব্যক্তিগত খেলায় একজন খেলোয়াড় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভাল খেলতে বা জিতে পারলেই স্বর্ণপদক মেলে যায়।
এবিষয়টি দল-মত নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, সকল বাহিনীর ক্রীড়া বোর্ড, দেশের সকল ক্রীড়া ফেডারেশন, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিদপ্তর, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রিয় নীতি নির্ধারকরা ও ক্রীড়া সংগঠকদের চলমান দলগত খেলার পৃষ্ঠপোষকতার সাথে-সাথে ব্যক্তিগত খেলা গুলির পৃষ্ঠপোষকতার আমলে নেয়া প্রয়োজন।
একজন খেলোয়াড়ই পারেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে।