শনিবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে বিধবার টাকা নিয়ে লাপাত্তা সিটি লাইব্রেরির হান্নান
ঝালকাঠিতে বিধবার টাকা নিয়ে লাপাত্তা সিটি লাইব্রেরির হান্নান
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ঝালকাঠিতে অসহায় এক বিধবার ৬ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে লাইব্রেরী ব্যবসায়ী। পৌর এলাকার কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রুনা বেগমের কাছ তিনবছর পূর্বে শহরের চৌমাথার সিটি লাইব্রেরির সত্বাধিকারী সালাম ও তার দুই ভাই হান্নান ও আলম তাদের প্রয়োজনের কথা বলে কৌশলে বিভিন্ন সময় এ টাকা নিয়ে যায়। অভিযোগে সুত্রে জানাযায়, পারিবারিক পুর্ব সম্পর্কের সুত্র ধরে ব্যবসায়িক প্রয়োজনের কথা বলে পৌর এলাকার কৃষ্ণকাঠি ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রুনা বেগমের কাছ ৩ বছর পূর্বে শহরের চৌমাথার সিটি লাইব্রেরির সত্বাধিকারী সালাম ও তার দুই ভাই হান্নান ও আলম কৌশলে ৪ লাখ টাকা নেন। পরে দিচ্ছে, দিবে বলে আর দেয়নি। সর্বশেষ ২০ জুলাই পুরো টাকা পরিশোধ করবে বলে পুনরায় ব্যুরো বাংলাদেশ সমিতি ও জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে আবারও টাকা উঠিয়ে ২ লাখ টাকা হান্নান ও তার ভাইদের দেন রুনা বেগম। এ সংক্রান্ত পরে আর সে টাকা দিবে বলে আর না দিয়ে তাল বাহানা শুরু করে। পরে টাকা না দিয়েই বই লাইব্রেরী রেখে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় মঙ্গলবার একটি অভিযোগ দিয়েছেন রুনা বেগম। দির্ঘদিন অনেক খুজেও তার কোন হদিস পাওয়াা যায়নি। রুনা বেগম আরও বলেণ, এভাবে অনেকের টাকা সে প্রতারণা করে নিয়েছে। হান্নান ও তার ভাইদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। বর্তমানে তিনি তার ৫ সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে জীবনযাপন করছেন। এ বিষয়ে জানতে সিটি লাইব্রেরীর সত্বাধিকারী হান্নানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়ায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার তার ভাই বরিশাল পোষ্ট অফিসে কর্মরত আ. সালাম জানান, সর্বশেষ ২ লাখ টাকা হান্নান নিয়েছে সেটা আমি জানি। কিন্তু তার পুর্বে যে টাকা নিয়েছে তা আমার জানা নেই। আলম জানান, আমার ভাই টাকা নিয়েছে সেটা সত্যি। আর যিনি আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন, তাকে আমি চিনি না। সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার জানান, এ সংক্রান্ত একটি অবিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঝালকাঠির শেখেরহাটে মাল্টিপারপাস কর্মীকে ধর্ষণ
চেষ্টা এমডি’র : আদালতে অভিযোগ দায়ের
ঝালকাঠি :: ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকায় গ্রামীন শ্রমজীবী সমবায় সমিতির মাঠ কর্মী কলেজ ছাত্রী (১৮)কে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) উজ্জল খান। এঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে আদালতে বৃহস্পতিবার অভিযোগ দায়ের করেছেন। আদালত শুনানী শেষে রোববার আদেশের দিন ধার্য্য করেছে।
অভিযোগে জানাগেছে, শেখেরহাট এলাকার গ্রামীন শ্রমজীবী সমবায় সমিতি নামে একটি মাল্টিপারপাস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক উজ্জল খান। ওই সমিতিতে ঋণদান কার্যক্রমের কিস্তির টাকা আদায় করতে মাঠ কর্মী হিসেবে কলেজ ছাত্রী (১৮)কে চাকুরী দেন। ঋণের কিস্তির টাকা উত্তোলন করে ২টার মধ্যে জমা দিয়ে বাসায় ফিরতো। অফিসে অন্য কোন জনবল না থাকায় তাকে একা পেয়ে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। নজরের অঙ্গভঙ্গি বুঝে এড়িয়ে চললে বেতন বাড়িয়ে দেবার কথা বলে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। তাতে অসম্মতি জানালে মালিক উজ্জল খান ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। চাকুরী ছেড়ে দেবার কথা জানালে সমিতির সমুদয় হিসেব না দিয়ে যেতে বাধা দেয়। এসব ঘটনা ভিকটিম তার অভিভাবককে অবহিত করে। গত ২০ আগস্ট রবিবার দুপুর ১টায় সমিতির দরজা বন্ধ করে ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে উজ্জল খান একথা কাউকে না বলতে হুমকি দেয়। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে ২২ আগস্ট সকালে শালিশীর কথা হলে লম্পট উজ্জল খান এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এঘটনায় কোন মামলা- মোকদ্দমা হলে ভিকটিমকে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে ভিকটিমের বাবাকে লোক মারফত হুমকি দেয়। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের হুমকিতে ভিকটিমের শ্রমজীবী পিতা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আল-আমিন পলাশ জানান, মামলাটি আদালতে পেশ করে শুনানী করা হয়েছে। তদন্তের জন্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের জন্য দাবী জানানো হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক রোববার এ বিষয়ে আদেশ দেবেন বলেও জানান তিনি।
নলছিটিতে দোকানে পানি দিয়ে
সেই টাকায় পারুল’র দালান
ঝালকাঠি :: পারুল বেগম (৫০) দীর্ঘদিন ধরে ঝালকাঠির নলছিটিতে বিভিন্ন দোকানে ও বাসা বাড়িতে পানি সরবরাহ করেন। আর এই পানি সরবরাহ করে যে অর্থ উপার্জন করেছেন তা জমিয়ে বসবাসের জন্য তৈরি করেছেন একটি বিল্ডিং। প্রায় ২০ বছর আগে পারুলের স্বামী মোশাররফ হোসেন হাওলাদার মারা যান। এরপর তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নলছিটি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। আর তিনি মানুষের বাসায় ও দোকানে পানি সরবরাহ করে যা আয় করতো তা দিয়ে ছেলে মেয়েকে নিয়ে চলতো সংসার। পারুলের বড় ছেলে রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন আর মেঝো ছেলে নদীতে মাছ ধরেন। তারাও বিবাহ করে আলাদা সংসার করেন আর মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন তিনি। ছোট ছেলে রঙের কাজ করে বর্তমানে তাকে নিয়ে চলে পারুলের সংসার । পারুল বেগম বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে শুরু হয় আমার কষ্টের সংসার। আমি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন দোকান ও বাসায় পানি দিয়েছি। বর্তমানে সাপ্লাই হওয়ায় পানি দেওয়ার কাজ কমে গেছে। এখন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি দেই। কলস প্রতি কেউ ৫ টাকা কেউ ১০ টাকা দেয়। তারপরও প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা উপার্জন হয়। আমি ছেলেদের কাছ থেকে কোন সময় টাকা পয়সা নিই না বরং তাদের আমি দিই। আর আমি পানি দিয়ে নিজ অর্থে বিল্ডিং করেছি। যাতে ২ লাখের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। দোকানদার সুজন বলেন,পারুল চাচী দীর্ঘদিন ধরে আমার দোকানে পানি দেন। আমার কাছে ভালো লাগে যে এই বয়সে মানুষের কাছে হাত না পেতে নিজে উপার্জন করেন। তিনি পানি দিয়ে মোটামুটি ভালোই আয় করেন। নলছিটি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম দুলাল চৌধুরী বলেন, পারুল বেগম আমার ওয়ার্ডে বসবাস করেন। তিনি পৌরসভা থেকেও সাহায্য সহযোগিতা পান। শুনছি তার কষ্ট অর্জিত টাকা দিয়ে বাড়িতে বিল্ডিং করেছেন। তাকে আমি সাধুবাদ জানাই।