সোমবার ● ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » ঢাকা » আন্দোলনে জিততে না পারলে ভোটের অধিকার - অবাধ নির্বাচন - কিছুই অর্জন করা যাবেনা : সাইফুল হক
আন্দোলনে জিততে না পারলে ভোটের অধিকার - অবাধ নির্বাচন - কিছুই অর্জন করা যাবেনা : সাইফুল হক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, বিরোধীদের জন সম্পৃক্ত শান্তিপূর্ণ বিশাল গণআন্দোলন - গণসংগ্রামকে বিরোধীদের দূর্বলতা হিসাবে বিবেচনা করার অবকাশ নেই। সরকার ও সরকারি দল ধারাবাহিক উসকানি তৈরী করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার পথে ঠেলে দিতে চাইছে। আন্দোলন শান্তি পূর্ণ থাকবে কিনা এটা নির্ভর করছে সরকার ও সরকারি দলের আচরণের উপর।
তিনি বলেন , জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠেছে। আর একটি নীলনকশার নির্বাচনের জন্য এবার তারা দেশ ও জনগণকেই বাজি ধরেছে। দেশের মানুষ ও বিরোধী দলসমূহের ন্যায্য গণতান্ত্রিক দাবিকে অস্বীকার করে জবরদস্তি করে ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে যেয়ে তারা দেশকে ভয়ংকর অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিচ্ছে। একটি ক্ষুদ্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাফিয়া গোষ্ঠীর স্বার্থে পুরো দেশকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার আন্দোলনে দেশের মানুষকে জিততে হবে।তা নাহলে ভোটের অধিকার, অবাধ নির্বাচন - কোন কিছুই অর্জন করা যাবেনা।
তিনি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠকদেরকে চলমান গণআন্দোলনে আরও সক্রিয় ও বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণের আহবান জানান।
আজ সন্ধ্যায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠকদের দুই দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপ্তি অধিবেশনে সভাপতি হিসাবে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালা সঞ্চালনা করেন পার্টি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিভাগের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক ও মাহমুদ হোসেনে।
সরকার ও সরকারি দলের হীনমন্যতার কারণেই দেশের গুণী মানুষেরা অপমান ও হয়রানির শিকার
আজ সকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচিত সংগঠকদের দুই দিনব্যাপী রাজনৈতিক - সাংগঠনিক কর্মশালা উদ্বোধন করতে যেয়ে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, রাজনীতির আসল লড়াই এর আগেই আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে হেরে বসে আছে।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারকদের বেসামাল কথাবার্তাই তার প্রমান ।আওয়ামী লীগ হেরে গেলে রক্তগঙ্গা বয়ে যাওয়ার কথাবার্তা তাদের পরাজয়ের আগাম ইংগিত। তারা তাদের কথিত খেলা শুরুর আগেই আমি আর হেরে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন; যা আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী সংগঠদের অবশিষ্ট মনবলকেও তলানীতে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন , নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী অধ্যাপক ইউনুসকে নিয়ে যা করা হচ্ছে তা সরকার ও সরকারি দলের হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনুস তাঁর আয়কর বা শ্রম আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটালে দেশের প্রচলিত আইনে তার যথাযথ সুরাহা ও বিচার করার স্বাভাবিক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অধ্যাপক ইউনুসের বিরুদ্ধে দেড় শতাধিক মামলা ও গত প্রায় দেড় দশক ধরে তাকে পরিলকল্পিত হয়রানির ঘটনাবলি প্রমান করে যে, তিনি ধারাবাহিক রাষ্ট্রীয় রোষানলের শিকার হয়েছেন; তাকে এক নিরবিচ্ছিন্ন বিচারিক হেনস্তায় অপমানিত হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, হীনমন্যতার কারণে সরকার ও সরকারি দল বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রুপকার জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর পরেও তাদেরকে ন্যুনতম সম্মান জানাতে পারেনি। তিনি বলেন,এই সরকারের আমলে কোন গূণী মানুষই সম্মানিত ও নিরাপদ নন।তারা এমন একটা ভাষ্য তৈরীর চেষ্টা করছেন যে, আওয়ামী লীগকে সমর্থন না করলে সবাই দেশদ্রোহী বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। এটা পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চিন্তা; এর সাথে আধুনিক বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক চিন্তা ও মনোভাবের কোন সম্পর্ক নেই।
তিনি সদ্যবিদায়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর গতকাল বিচারালয়কে রাজনীতিকরন না করা সম্পর্কিত বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসাবে আখ্যায়িত করে এটাকে তাঁর বিলম্বিত বোধহয় হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি থাকাকালে তিনি যদি নীতিনিষ্ঠভাবে এই অবস্থান ধরে রাখতে পারতেন তাহলে দেশ ও জনগণ আরও বেশী উপকৃত হত।
তিনি চলমান গণআন্দোলনকে গণ অভ্যুত্থানের পথে নিয়ে যেতে পার্টি সংগঠকদের উপযুক্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালা শুরু হয়েছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী,আকবর খান, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক,মাহমুদ হোসেন প্রমুখ।
কর্মশালায় বিভিন্ন জেলার নির্বাচিত সংগঠকবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন।
কেবল জামিনযোগ্য ধারা বৃদ্ধি নয় , দরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সকল নিবর্তনমূলক ধারা বাতিল করা
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজ গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, হয়রানি ও নিপীড়নমূলক ধারাসমূহ বহাল রেখে গতকাল মন্ত্রীসভায় অনুমোদন দেয়া ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ও দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবেনা। কেবলমাত্র জামিনযোগ্য ধারা বৃদ্ধি করে এই আইনের দমন ও নিপীড়ন মূলক চরিত্রের বদল ঘটবে না। তিনি বলেন নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারায় অপরাধের সংজ্ঞাও আগের মতই রাখা হয়েছে। সর্বোপরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পোশাক পরিবর্তন করে নতুন নাম দেয়া হলেও এই আইনের নিবর্তনমূলক চরিত্রের কোন হেরফের হয়নি।
তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন আইন মন্ত্রীপরিষদে নেবার আগে অংশীজনদের সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে মন্ত্রীপরিষদে এই আইন চূড়ান্ত করা হয়। এই আইনের সংশোধনী ও পরিবর্তন সম্পর্কে যে পাঁচ শতাধিক মতামত এসেছে তাও যথাযথভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়নি।তিনি অবিলম্বে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রনয়নের উদ্যোগ বন্ধ করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ভিন্নমত দমন, মুক্ত সাংবাদিকতায় বাধা ও নিপীড়নের হাতিয়ার হিসাবে মর্মবস্তুগতভাবে নতুন আইন একইরকম থাকায় দেশের মানুষ কোনভাবেই তা গ্রহণ করবেনা।তিনি বলেন, নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পোশাক বদল নয়, দরকার জনগণের মত প্রকাশের স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিকতা - গবেষণা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পরিপন্থী সকল ধারা উপধারা বাতিল করা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করে সরকার ও সরকারি দল যেভাবে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন ও হয়রানির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে সেই সুযোগ রেখে দিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনকে বৈধতা দেয়া যাবেনা।
তিনি অনতিবিলম্বে খাদিজাতুল কোবরা সহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক সকলকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।